Advertisement
E-Paper

ধৈর্য দেখাব, গত তেরো মাসে তো রিঅ্যাক্ট করিনি

দিন শুরু হয়ে গিয়েছে সেই সকাল দশটায়। নিজের নির্দিষ্ট এসি ঘরে বসে না থেকে ইডেন গার্ডেন্সের অভ্যন্তরে চক্কর দিচ্ছেন নতুন সিএবি প্রেসিডেন্ট। একটু আগে আর্মির লোকেরা এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক সেরে আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকার দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।দিন শুরু হয়ে গিয়েছে সেই সকাল দশটায়। নিজের নির্দিষ্ট এসি ঘরে বসে না থেকে ইডেন গার্ডেন্সের অভ্যন্তরে চক্কর দিচ্ছেন নতুন সিএবি প্রেসিডেন্ট। একটু আগে আর্মির লোকেরা এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক সেরে আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকার দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

গৌতম ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩৬
ছবি উৎপল সরকার।

ছবি উৎপল সরকার।

প্রশ্ন: হটসিটে চব্বিশ ঘণ্টা কাটানোর পর অনুভূতিটা কী?

সৌরভ: অনুভূতি এখনও টের পাইনি। সেই সকাল থেকে সিএবিতে রয়েছি। তা ছাড়া হটসিটে তো আগেও বসেছি প্লেয়িং লাইফে। তাই হয়তো আলাদা করে কিছু হচ্ছে না।

প্র: কিন্তু ডোনা তো সে দিন বলছিলেন ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন থাকার সময় আপনাকে ইন্দো-পাক ম্যাচের আগেও এত টেনশনে দেখেননি, ইদানীং কর্মকর্তা হিসেবে যা দেখছেন।

সৌরভ: তার কারণ এই পদে থাকার এত রকম আন্ডারকারেন্ট আছে যে টেনশন থাকতে বাধ্য।

প্র: আপনি থাকা মানেই লোকের প্রচুর প্রত্যাশা। সেটাও তো একটা চাপ।

সৌরভ: না, সেটার কোনও চাপ নেই। প্রত্যাশা আমি মিটিয়ে দেব।

প্র: বলছেন কী? এত শিওর?

সৌরভ: টু হান্ড্রেড পার্সেন্ট।

প্র: আপনি কি বলতে চান প্লেয়ার হিসেবে পারফর্ম করাটা কর্মকর্তা হিসেবে পারফরম্যান্সের চেয়ে অনেক অনিশ্চিত?

সৌরভ: প্লেয়ারের আনসার্টেন্টি অনেক বেশি। বিশেষ করে ব্যাটসম্যান হলে এক বলের খেলা। স্পোর্টসে সব কিছু রিয়েল টাইম। তখুনি। এই জীবনে অনেক সময় পাওয়া যায়। গুছিয়ে নেওয়া যায়।

প্র: রি-টেক আছে?

সৌরভ: ইয়েস রি-টেকস হতে পারে। প্লেয়িং লাইফটা অনেক বেশি কঠিন ছিল। তাই আমি এত শিওর, একটা ভাল সিস্টেম আর স্ট্রাকচার তৈরি করে যেতে পারব।

প্র: আপনার বন্ধু কুম্বলেও কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। কিন্তু এক বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকা হয়নি তাঁর। কুম্বলের সঙ্গে কথা বলেছেন নাকি প্লেয়ার-অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের কী ভাবে চলা উচিত?

সৌরভ: বলিনি। আমি যে ভাবে পরিস্থিতি আসবে তার সঙ্গে সে ভাবেই মানাব। সে দিক দিয়ে কোনও চাপ নেই।

প্র: বলা হয়ে থাকে খেলার প্রশাসন বা রাজনীতিতে গণ্ডারের চামড়া দরকার হয় যাতে কোনও সমালোচনাই বিদ্ধ করতে না পারে। অথচ সুপারস্টার ক্রিকেটার বা ফিল্ম তারকাদের সমস্যা হয় তারা এতটুকু সমালোচনায় রক্তাক্ত হয়ে পড়েন। তাই দু’টো পেশাতেই এদের বিশেষ অগ্রগতি হয় না। আপনার এটা বড় সমস্যা মনে হচ্ছে না?

সৌরভ: না, আমি সমালোচনায় অভ্যস্ত। মনে হয় না এটা আদৌ কোনও অসুবিধে হবে। গত তেরো মাস ধরে আমি সিএবিতে রয়েছি। কত কথা শুনেছি। কই একবারও তো রিঅ্যাক্ট করিনি। তা ছাড়া প্লেয়ার হিসেবে সমালোচনা শুনিনি নাকি? প্রচুর শুনেছি। তার চেয়েও বেশি শুনেছি ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন হিসেবে। এর চেয়ে বেশি আর কী হতে পারে!

প্র: জগমোহন ডালমিয়াকে যথেষ্ট কাছ থেকে দেখেছেন আপনি। প্রশাসক হওয়ার জন্য কী কী গুণ আপনি ওঁর থেকে ধার নেওয়ার চেষ্টা করবেন?

সৌরভ: সত্যি বলতে কী অত ক্লোজলি দেখিনি। আর তখন এত কনশাসলি মনযোগও দিইনি। তখন তো আর ভাবতে পারিনি এত তাড়াতাড়ি এর মধ্যে ঢুকে পড়ব। তবু দু’টো জিনিস আমি ওঁর মধ্যে লক্ষ করেছি। একটা হল ধৈর্য। বড় অফিশিয়ালের সহজে ধৈর্যচ্যূতি হলে চলে না। আর একটা, প্রস্তুতি। প্রিপারেশনটা নিখুঁত থাকতে হবে। আমি যখন সেক্রেটারি ছিলাম তখন বিভিন্ন চেঞ্জ আনার জন্য প্রিপেয়ার করেছি। কী করে পুরো ইডেনের পরিকাঠামো বদলে ফেলা যায় তা নিয়ে প্ল্যান করেছি।

প্র: বেশির ভাগ রক্ষণশীল সদস্য নিয়ে তৈরি এ রকম একটা প্রাচীন প্রতিষ্ঠান রাতারাতি বদলাতে গেলে তো অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে। তার জন্য তৈরি?

সৌরভ: হ্যাঁ, বাধার জন্য তৈরি। গত তেরো মাসে যখন পরিবর্তন আনতে গিয়ে নানান কাজ করছিলাম তখনও তো বাধা পাইনি এমন নয়। যে কোনও সংস্থাতেই কিছু লোক থাকে যারা খুব ভাল। আবার অনেকে থাকে যারা সব কিছুতে ব্যাগড়া দেয়। আমি দু’টো টাইপ-ই দেখেছি। বাগড়া সত্ত্বেও নিজের কাজ করে গিয়েছি। এ বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তো ভাবনাগুলো কার্যকর করা আরওই সহজ হবে।

প্র: কার্যকর যে করবেন—কী করবেন?

সৌরভ: ইন্ডোর প্র্যাকটিস হলটা ঠিক করা। মাঠের স্কোরবোর্ড ঠিক করা। স্ট্যান্ডগুলোর ব্যবস্থা বেটার করা। এক কথায় গোটা ব্যাপারটাকে মডার্নাইজ করা।

প্র: কলকাতার দর্শক কিন্তু তার পয়লা নম্বর ক্রিকেট প্রশাসকের কাছে চাইবে পরপর ভাল ম্যাচ দেখতে। ডালমিয়া ডালমিয়া হয়েছিলেন এ জন্যই যে তিনি কলকাতাকে সবসেরা ক্রিকেট ম্যাচগুলো ধারাবাহিক ভাবে দেখাতেন।

সৌরভ: ভাল ক্রিকেট আমরাও দেখাব। উই উইল ডু ইট। দেখবেন কলকাতার লোক খুশিই হবেন।

প্র: আপনি বলছেন আশাবাদী থাকতে অথচ ইডেন উইকেট নিয়ে কোনও দিশাই পাওয়া যাচ্ছে না। এত বড় একটা ম্যাচ হল না। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হল না। এখনও কেউ জানে না প্রবীর মুখোপাধ্যায় আছেন কি গিয়েছেন?

সৌরভ: প্রবীরদাকে আমি সিএবিতে কথা বলার জন্য ডেকেছি। ওঁর বয়স এখন চুরাশি। এই গরম-বর্ষায় মানুষটা সারা বছর মাঠে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবেন কী করে? কিন্তু ওঁর কন্ট্রিবিউশন অনেক। অভিজ্ঞতাও প্রচুর। ওঁকে পিচ সংক্রান্ত পরামর্শদাতার ভূমিকায় কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, দেখব।

প্র: একটা কথা বলুন— আপনার নিযুক্ত হওয়াটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নবান্ন থেকে বলে কি আরওই নিজের জন্য আস্কিং রেটটা এমন বাড়িয়ে নিয়েছেন? নইলে তিন মাসে সব পাল্টে দেব এমন কথা তো আর কারও মুখে আমরা শুনিনি।

সৌরভ: এই যে নবান্ন নিয়ে যারা কথা বলছে, তারাই কিন্তু বিভিন্ন সময়ে নবান্নয় গিয়েছে। এটা প্লিজ লিখবেন যে, এদের নিজেদের যখন দরকার হয়েছে এরা কখনও নবান্ন, কখনও রাইটার্স ছুটেছে। কখনও বিসিসিআইয়ের জন্য। কখনও সিএবির জন্য। নিজের প্রয়োজনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হলে খারাপ নয়, নিজের মনের মতো না হলেই মুশকিল।

প্র: পাকেচক্রে যা দাঁড়াল আপনি এখন ইডেনের বাড়িওয়ালা। শাহরুখ খান আইপিএলের সময় আপনার ভাড়াটে। ইন্টারেস্টিং না?

সৌরভ: এ ভাবে বলছেন কেন? শাহরুখও বা়ড়িওয়ালা। আমি ওকে খুব পছন্দ করি।

প্র: আপনি শাহরুখকে পছন্দ করেন?

সৌরভ: ইয়েস, অ্যায়াম ভেরি ফন্ড অব শাহরুখ।

প্র: আর বিশ্বরূপ দে?

সৌরভ: অ্যায়াম ভেরি ফন্ড অব বিশ্বরূপ দে।

প্র: ইন্টারভিউটা এখানেই শেষ করলাম।

abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy