নির্বাচন প্রক্রিয়া পাকিয়ে ওঠার মুখে মোহনবাগানের হিসাব-নিকাশ নিয়ে হঠাত্ই আলোড়ন! ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভা নিয়ে এত দিন সরগরম ছিল বাগান তাঁবু। বুধবার কর্মসমিতির বৈঠকে তার দিনক্ষণ ঠিক হলেও বিতর্ক থেকেই গেল!
এ দিন কর্মসমিতির বৈঠকে ঠিক হয়, ২৭ ফেব্রুয়ারি ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভা। কিন্তু সভায় প্রশ্ন উঠল, সভাপতি ও অর্থসচিব যখন পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেননি, তখন এই বার্ষিক সাধারণ সভার বৈধতা কী! প্রশ্ন উঠেছে অডিট হওয়া হিসেবপত্র নিয়েও। সচিব অঞ্জন মিত্র যদিও আশাবাদী, “সবাই থাকবে এজিএমে।” তবে এ দিন কর্মসমিতির বৈঠকের পর ক্লাব সচিব স্বীকার করে নেন, “ক্লাবের আর্থিক সমস্যা চলছেই। কর্মসমিতির পরামর্শ নিয়ে সবাই মিলে সমাধানের চেষ্টা করছি।” কিন্তু সূত্রের খবর, বাগানের স্পনসর ম্যাকডাওয়েলের শেয়ার কিনে নেওয়া সংস্থার কর্তারা বেশ কিছু শর্ত দিয়েছেন বকেয়া মেটানোর আগে। যার মধ্যে ক্লাবের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের শীর্ষ পদে রদবদলের মতো গুরুতর বিষয়ও রয়েছে।
ক্লাবের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট-সহ কার্যকরী সমিতির এক সদস্য প্রশ্ন তোলেন, সভাপতি স্বপনসাধন (টুটু) বসু এবং অর্থ-সচিব দেবাশিস দত্ত এখনও তাঁদের পদত্যাগপত্র সরকারি ভাবে প্রত্যাহার করে নেননি, তা হলে বার্ষিক সাধারণ সভা ক্লাব প্রেসিডেন্ট ছাড়া কী ভাবে হবে। তিনি উপস্থিত থাকলেও সরকারি ভাবে এখনও তা প্রত্যাহার করেননি কেন? আর অর্থ-সচিবও যদি না থাকেন তা হলে অডিট হওয়া হিসেবপত্র নিয়ে সদস্যরা কার কাছে প্রশ্ন করবেন? সচিব বলছেন, “এজিএমের আগে ২১ দিন ক্লাবে ২০১২-১৩ এবং ২০১৩-১৪ সালের অডিট হওয়া হিসেব থাকবে। সদস্যরা ক্লাবে নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে তা দেখে যেতে পারবেন।”
ক্লাবে যখন বৈঠক চলছে, তখন ক্লাব তাঁবুতে হাজির ছিলেন বাগানের বিক্ষুব্ধ দুই ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্য এবং প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেই সচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করলেও কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। প্রসূন বলেন, “ধীরেন দে-র জমানায় তো সদস্যদের বাড়ি বাড়ি এই অডিট হওয়া হিসাব পাঠানো হত। এখন কেন হচ্ছে না? ভিন জেলা বা রাজ্যের সদস্যরা কী ভাবে আসবেন? ওয়েবসাইটে দিয়ে দিক!” আর সুব্রত বলে যান, “এটা সদস্যদের অন্ধকারে রেখে নির্বাচন তরী পার করার খেলা।” কর্মসমিতির অতীন ঘোষ বলেন, “ম্যাকডাওয়েল মোহনবাগানের ২০১৪-১৫ (জানুয়ারি পর্যন্ত) আয়-ব্যয়ের হিসেব জানতে চেয়ে এ’বছর ক্লাবকে দু’টো চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনও উচ্চবাচ্য নেই।”
আগামী শনিবার আই লিগে বাগানের প্রতিপক্ষ পুণে এফসি। তার জন্য এ দিন যুবভারতীতে অনুশীলন হয়েছে কাতসুমিদের। অনুশীলনের পর ফেডারেশন নিযুক্ত দুর্নীতিদমন শাখার প্রধান জাভেদ সিরাজ একপ্রস্ত ক্লাস নেন শিল্টন পালদের। আই লিগে ম্যাচ গড়াপেটা রুখতে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন-সহ আট দফা নির্দেশিকায় পরে ফুটবলারদের সইও করিয়ে নেন তিনি।