রাসেল এবং নারিন। সিএসকে-র বিরুদ্ধে প্র্যাকটিস ম্যাচে। সোমবার। ছবি: টুইটার
আবু ধাবিতে এখন দুপুর বারোটা। আর এই বারবেলায় এ বারের আইপিএলে আমার প্রথম কলামটা লিখতে ল্যাপটপের সামনে বসেছি। দিনটা এখন পর্যন্ত রীতিমতো কষ্টের গিয়েছে। ফলে এসি ঘরে বসে কলাম লেখাটা আমার কাছে এক বিরাট স্বস্তি! সোমবারের হাড়ভাঙা খাটুনিটা সম্ভবত ঈশ্বর আমার জন্য রবিবার সারাটা দিন আনন্দ করে কাটানোর পাল্টা হিসেবে রেখেছিলেন। কারণ গত কালটা গোটা কেকেআর দল ফেরারি ওয়ার্ল্ডে কাটিয়েছিল!
ফেরারি ওয়ার্ল্ডের কথায় পরে আসছি। আপাতত আমাকে একটু গুজগুজ-ফুসফুস করতে দিন, প্লিজ! শুরুতেই বলে রাখি, আজ আমার দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার কারণ, আমার ফোনের অ্যালার্মটাই বাজেনি, ব্যাটারিটা বিশ্বাসঘাতকতা করায়। তার পর ব্রেকফাস্টে তরমুজটা সে রকম মিষ্টি ছিল না! টোস্ট ছিল পোড়া। মশালা অমলেটটা ভীষণ ঝাল! ওটস্ যেটা খেলাম, সেটার গন্ধটাও কেমন যেন অন্য রকম। ভাবছিলাম, এ সব কী ব্যাপার! শেষ পর্যন্ত কর্ন-ফ্লেকস্ আর গরম দুধটাই এ দিনের মতো পেটটাকে রক্ষা করল!
এর পর জিমে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে হতে আবিষ্কার করলাম, আমার মোজা জোড়া তখনও লন্ড্রিতে! শেষ পর্যন্ত রায়ান টেন দুশখাতের উপর দাদাগিরি করে নতুন মোজা জোগাড় করলাম। তার পর দেখুন, ট্রেডমিলে ওই পনেরো মিনিট কাটানোটা আমার কাছে সাধারণত নির্বাণ প্রাপ্তির মতো। কিন্তু আজই সেটা দাঁড়াল যেন কেউ আমাকে রোড রোলারের উপর চাপিয়ে পাহাড়ে ঠেলে তুলছে! তবে আমি শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছি এবং চমৎকার গরম জলে স্নান-পর্বের পর, হে আমার আনন্দবাজার পত্রিকার পাঠক-পাঠিকাবর্গ, আপনাদের সঙ্গে এই আমার সাক্ষাৎ ঘটল।
যখন কোথাও কোনও আশার ইঙ্গিত থাকে, সেই অনুভূতিটা আমি খুব পছন্দ করি। সেটা আমাদের দেশের রাজনৈতিক চিত্রই হোক বা আইপিএল আশাবাদী হওয়ার অনেক কারণ আছে। দেশের নির্বাচনে আমার ভূমিকা খুব সোজা কেবল নিজের ভোটটা দেওয়া। এ বছরের অভিজ্ঞতা অবশ্য সামান্য অন্য রকম। চণ্ডীগড়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি খেলতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে সপরিবার অমৃতসরে গোল্ডেন টেম্পল দেখতে গেলাম। অমৃতসরে থাকার সময় আমরা অরুণ জেটলির সঙ্গে দেখা করতে যাই। যিনি আইনজীবী এবং রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও আমাদের পারিবারিক বন্ধু। অমৃতসর থেকে এ বারের ভোটে লড়ছেন। এবং আমি যখন তাঁর এবং তার পরিবারের সঙ্গে মিলিত হলাম, ভোট-প্রচারের একেবারে হাতেগরম অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম। ব্যাপারটাকে দারুণ ইন্টারেস্টিং বললেও খুবই কম বলা হবে। বরং এ ভাবেই চুম্বকে বলব, যে দেশে তরুণদের সংখ্যা এত বেশি, সে দেশে ভাল ভাবে সরকার চালানোটা ভীষণ দরকার। আশা করি লোকসভায় সেরা প্রার্থীই যাবেন।
রাজনীতির গরম আবহাওয়া ছেড়ে আমরা আবু ধাবিতে একটা শান্ত, প্রায় ঘুমপাড়ানি আবহাওয়ায় রয়েছি। প্রস্তুতি দুর্দান্ত হয়েছে। আজই সিএসকে-র সঙ্গে একটা প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেললাম। আমি বিশেষ ভাবে উত্তেজিত আমাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি কয়েকটা সেশনের জন্য জগদ্বিখ্যাত পর্যটক ও অ্যাডভেঞ্চারার মাইক হর্ন-কে ডেকে আনায়। মানুষটা যেন সব কিছু নাড়িয়ে দিতে পারেন। সবার জন্য এক জলজ্যান্ত অনুপ্রেরণা। ২০১১ বিশ্বকাপের সময় ওঁর ক্লাস করেছিলাম। একই রকম আকর্ষণীয় এ বারও লাগল।
রবিবার আমরা সবাই ফেরারি-ওয়ার্ল্ডে গিয়েছিলাম। দারুণ জায়গা। আবু ধাবিতে এলে প্রত্যেক পর্যটকের এখানে ঘুরে আসা উচিত। আমি এখানে আমার প্রিয় কিছু জিনিস কেনাকাটা করেছি। কিন্তু সে সব পরে বলব। সম্ভবত আমার চতুর্থ কী পঞ্চম কলামে।
তবে যদি আন্দ্রে রাসেলকে ভিডিওয় তুলে রাখতে পারতাম! ছেলেটা খাঁটি মজাদার পিস। একটা টিপিক্যাল ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান শর্টস্ পরে সারাক্ষণ হেসে চলেছে। লাফাচ্ছে, ঝাঁপাচ্ছে! মনে হয় ও আর সুনীল নারিন একটা অসাধারণ জুটি হবে। এক জন সারাক্ষণ বকবক করছেআর এক জনের মুখে কুলুপ!
তা সত্ত্বেও আমি এতটুকু কিছু মনে করব না যদি ওদের জুটি ক্রিকেট মাঠে আমাদের আনন্দ ডেকে আনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy