Advertisement
E-Paper

বাগানের ১২৫ বছরের অনুষ্ঠানই ভেস্তে যাওয়ার মুখে

অরুময় নৈগম মোহনবাগান রত্ন পাবেন কবে? আদৌ পাবেন কি? বাগানের একশো পঁচিশ বছর পূর্তি উত্‌সব হবে কবে? বিদেশি টিম নিয়ে এসে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচের যে পরিকল্পনা ছিল, তা-ও কি ভেস্তে গেছে? ডামাডোলের বাগানে এখন এ সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কেউ নেই। উত্‌সব কমিটির প্রেসিডেন্ট রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলে দিচ্ছেন, “কে করবে অনুষ্ঠান? টাকা কোথায়?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১১

অরুময় নৈগম মোহনবাগান রত্ন পাবেন কবে? আদৌ পাবেন কি?

বাগানের একশো পঁচিশ বছর পূর্তি উত্‌সব হবে কবে?

বিদেশি টিম নিয়ে এসে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচের যে পরিকল্পনা ছিল, তা-ও কি ভেস্তে গেছে?

ডামাডোলের বাগানে এখন এ সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কেউ নেই।

উত্‌সব কমিটির প্রেসিডেন্ট রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলে দিচ্ছেন, “কে করবে অনুষ্ঠান? টাকা কোথায়? টিম চালাতে যে দশ কোটি টাকা দরকার সেটাই তো দিতে চাইছে না স্পনসররা। চুক্তি ভেঙে দিতে চাইছে। সহ-সচিব নেই, সচিবও তো নিয়মিত ক্লাবে আসেন না। আগে টিম বাঁচুক, তার পর তো উত্‌সব। হওয়ার তো কোনও সম্ভাবনা দেখছি না।”

আর সচিব অঞ্জন মিত্র দায়সারা ভাবে বলে দিচ্ছেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করব। তবে কবে করতে পারব জানি না।”

বাগানের পঁচাত্তর বছরে পঁচাত্তর দিন ধরে উত্‌সব হয়েছিল। ডেনিস কম্পটনের নেতৃত্বে ক্রিকেট টিম এসেছিল খেলতে। খেলে গিয়েছিল হাঙ্গেরির তাতাবেনিয়া ক্লাব।

শতবর্ষে রজার মিল্লাকে সঙ্গে করে এসেছিল ডায়মন্ট এফসি ক্লাব। হয়েছিল অন্য নানা অনুষ্ঠানও।

কিন্তু একশো পঁচিশ বছরে? না কোনও কিছুই হয়নি। শতবর্ষ পেরোনো গঙ্গাপাড়ের ক্লাবের যা পরিস্থিতি তাতে কিছু হবেও না।

ঊনত্রিশে জুলাই বাগান দিবসে এ বার কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। ‘রত্ন’ হিসাবে ঘোষণা হয়েছিল প্রাক্তন ফুটবলার অরুময় নৈগমের নাম। বর্ষসেরা ফুটবলার, ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া ক্লাবের ক্রিকেটারদেরও পুরস্কারের কথা ঘোষিত হয়েছিল। ঠিক ছিল ডিসেম্বরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চোখ ধাঁধানো অনুষ্ঠান করে ট্রফি ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। ঠিক ছিল, সে দিনই বর্ষব্যাপী উত্‌সবের সূচনা হবে। কিন্তু সারদাকাণ্ডে সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু জেলে যাওয়ার পর সবই ওলট-পালট।

ক্লাবে উত্‌সব করার এখন কোনও লোকই নেই। পুত্র সমস্যায় পড়ে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট টুটু বসু মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। টুটুর সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত-ও। তাঁরা ক্লাবেও আসছেন না। আর সচিব অঞ্জন মিত্র পদত্যাগপত্র তুলে নিলেও ক্লাবের আর্থিক সমস্যা নিয়ে এতটাই ঝামেলায় যে, উত্‌সব নিয়ে ভাবছেনই না। বলা যায়, ভাবতে চাইছেনও না।

কিন্তু অন্যরা কী করছেন? ক্লাবে সভা হলেই ভিড় জমাচ্ছেন, রাজ্যের মন্ত্রী থেকে মেয়র, মেয়র পরিষদরা। তাঁদের প্রায় সবাই কর্মসমিতির সদস্য। নানা কমিটি হচ্ছে। ক্লাবে নিয়মিত আসছেন প্রাক্তন ফুটবলাররাও। কিন্তু সবারই লক্ষ্য ক্লাবের আসন্ন নির্বাচনের পদ। শাসকগোষ্ঠীর কর্তাদের মতোই। ঐতিহ্যের ক্লাবের স্মরণীয় অনুষ্ঠান নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথাই নেই। প্রশ্ন করলে, একে অন্যের দিকে আঙুল তুলছেন। কারণ উত্‌সব করতে বলে গেলে যে অর্থের দরকার তা এখনও আনতে পারেননি কেউ-ই।

বহু দিন পর বাগান তাঁবু সংস্কার হচ্ছে। গ্যালারিতে চেয়ার পাতার কাজ অনেকটাই শেষ। ভেঙে পড়া ফেন্সিং নতুন হচ্ছে। টাকার জোগান দিচ্ছে স্পনসর ও রাজ্য সরকার। ক্লাব কর্তারা চাইছেন, পরের মরসুমে কলকাতা লিগ এবং আই লিগের কিছু ম্যাচ নিজেদের মাঠে করার। যা অনেক আগেই করা যেত। যা করেছে পড়শি ক্লাব ইস্টবেঙ্গল।

কিন্তু তাতেও ঢাকা যাচ্ছে না ক্লাবের ডামাডোল। আর্থিক দৈন্যদশাও। সুদূর বেঙ্গালুরুর বাড়িতে বসে অরুময় নৈগমকে তাই অপেক্ষায় থাকতেই হচ্ছে। পরের বারের ২৯ জুলাইয়ের জন্য। যদি ‘রত্ন’ মেলে।

mohanbagan 125 years celebration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy