কেউ ছিলেন মারাকানায়। কেউ মাঠে না থাকলেও ভুলতে পারেননি সেই ঘটনা। পঁচিশ বছর আগের স্মৃতি এখনও দগদগে ব্রাজিলিয়ানদের মনে। সে রকম তিন ব্রাজিলীয় কোচ এবং ফুটবলার আনন্দবাজারকে জানালেন সে দিনের প্রতিক্রিয়া...
কার্লোস পেরিরা
(ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের প্রাক্তন কোচ)
আমি সে সময় মারাকানায় ছিলাম না। টেলিভিশনে সেই ম্যাচ দেখেছিলাম। বিশ্ব ফুটবলের জন্য সে দিনটা লজ্জার ছিল। শনিবার ব্রাজিল আর চিলি যখন বেলো হরাইজন্তেতে নক আউট পর্বের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে তখন আমি মারাকানাতে থাকব। ২৫ বছর আগের স্মৃতি নিয়েই চিলির বিরুদ্ধে নেইমারদের লড়াই দেখতে বসব। প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না। তবে কেন জানি না, ব্রাজিলে বিশ্বকাপ হচ্ছে বলেই হয়তো মনে প্রাণে চাইছি চিলিকে বড় ব্যবধানে হারাক স্কোলারির দল। ’৮৯-এর ৩ সেপ্টেম্বর চিলির কিপার রবার্তো রোজাস ব্লেড জাতীয় অস্ত্র দিয়ে নিজেকে রক্তাক্ত করেছিল, শুধুমাত্র ব্রাজিল যাতে বিশ্বকাপে না পৌঁছতে পারে তার জন্য। সেই শাস্তি অবশ্য চিলি পেয়েছে। কিন্তু আমরা ওকে ক্ষমা করতে পারিনি। আসলে, ব্রাজিলিয়ানরা খুব সেন্টিমেন্টাল হয়। সে জন্য বোধহয় ২৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও রোজাসকে ক্ষমা করা যায়নি। তাই চিলির কাছে যদি ব্রাজিল কোনও ভাবে হেরে যায়, সাংঘাতিক সমস্যা হবে এ দেশে। এমনিতেই বিশ্বকাপ হওয়া নিয়ে নানা চাপানউতোর চলছে। তে ব আমি বিশ্বাস করি, চিলির থেকে নেইমাররা অনেক এগিয়ে আছে।
ডগলাস দি সিলভা
(ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার)
ওই ম্যাচের সময় আমার বয়স ছিল ১৫। তবে সাত বছর থেকে ফুটবল খেলতে শুরু করেছি, তাই সে সময় ফুটবল বোধ বেশ ভাল ভাবেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ওই দিন মাঠে ছিলাম। একজন মহিলা হঠাৎ করেই মাঠের মধ্যে পটকা ছুঁড়েছিলেন। সেটা চিলির কিপারের কাছাকাছি এসে পড়েছিল। গ্যালারি থেকে দেখতে পেয়েছিলাম, ওই কিপার হঠাৎ মাঠের মধ্যে পড়ে ছটফট করছে। সে এক রক্তাক্ত কাণ্ড। রেফারি ম্যাচ বন্ধ করে দেন। আর্জেন্তিনার রেফারি ছিল বোধহয়। আমরা একেবারেই বুঝতে পারিনি, নাটক করছে রোজাস। কিন্তু পরে তো আসল সত্যিটা প্রকাশিত হয়। চিলির শাস্তির দাবিতে সে সময় ব্রাজিলিয়ানরা রাস্তায় নেমেছিল। সেটা বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্বের ম্যাচ ছিল। আর এ বার তো ব্রাজিলে বিশ্বকাপের ম্যাচে মুখোমুখি ব্রাজিল-চিলি। সব ব্রাজিলিয়ানদের মতো আমিও চাই সে দিনের বদলা যেন প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে চিলিকে হারিয়ে নেয় ব্রাজিল।
মার্কোস ফালোপা
(ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ)
সে ঘটনা ব্রাজিলের কেউ বোধহয় কোনও দিন ভুলতে পারবে না। বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারতাম না আমরা। এর থেকে বড় লজ্জা আর কী হতে পারত ব্রাজিলের কাছে! চিলি যে এ ভাবে প্রতারণা করবে আমরা ভাবতে পারিনি। সেই ম্যাচ আমি দেখিনি। কিন্তু ম্যাচের পর ব্রাজিল জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। পরে তো চিলির কিপারের কারসাজি ধরা পড়ে যায়। কিন্তু এ ভাবে জোচ্চুরি করে কেউ রেহাই পায় না। চিলিও পায়নি। এ বারও চিলিকে হারিয়ে আরও একবার সেই যন্ত্রণা মেটাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy