Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ইউরোপীয় দুই শক্তিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দুই কিপার

বয়সকে হার মানানো কাসিয়াস, বুফোঁ এখনও দলের ভরসা

দু’দল ফুটবলারের ঝামেলা হোক কিংবা তাঁর জাতীয় দলে সতীর্থদের মধ্যে স্প্যানিশ-কাতালান বিতর্ক, সামাল দেওয়ার জন্য রয়েছেন তিনি। আবার শুক্রবার রবেন-স্নেইডাররা যখন স্পেনের ডিফেন্সিভ থার্ডে হানা দেবেন, তখন সেই অধিনায়ক ইকের কাসিয়াসই ‘লাস্ট ডিফেন্স’ কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কির। মাঠের মধ্যে ‘লা রোখা’ (জাতীয় দলকে এ নামে ডেকে থাকেন স্প্যানিশ সমর্থকরা) ব্রিগেডকে চনমনে রাখতেও জুড়ি নেই তাঁর। কাসিয়াস নিজে বলছেন, “অধিনায়ক কেউ নয়। দলের আসল অধিনায়ক কোচ দেল বস্কি। ওঁর নির্দেশ মাঠের মধ্যে অক্ষরে অক্ষরে পালন করাটাই আমার কাজ।”

কাসিয়াস

কাসিয়াস

সংবাদ সংস্থা
রিও শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০৩:৩৮
Share: Save:

দু’দল ফুটবলারের ঝামেলা হোক কিংবা তাঁর জাতীয় দলে সতীর্থদের মধ্যে স্প্যানিশ-কাতালান বিতর্ক, সামাল দেওয়ার জন্য রয়েছেন তিনি। আবার শুক্রবার রবেন-স্নেইডাররা যখন স্পেনের ডিফেন্সিভ থার্ডে হানা দেবেন, তখন সেই অধিনায়ক ইকের কাসিয়াসই ‘লাস্ট ডিফেন্স’ কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কির। মাঠের মধ্যে ‘লা রোখা’ (জাতীয় দলকে এ নামে ডেকে থাকেন স্প্যানিশ সমর্থকরা) ব্রিগেডকে চনমনে রাখতেও জুড়ি নেই তাঁর। কাসিয়াস নিজে বলছেন, “অধিনায়ক কেউ নয়। দলের আসল অধিনায়ক কোচ দেল বস্কি। ওঁর নির্দেশ মাঠের মধ্যে অক্ষরে অক্ষরে পালন করাটাই আমার কাজ।”

স্পেনের সংবাদমাধ্যম থেকে জাতীয় দলের সতীর্থ জাভি-ইনিয়েস্তাদের কাছে তিনি আবার ‘সেন্ট কাসিয়াস’। কেন? উত্তরটা লুকিয়ে রয়েছে মাঠের মধ্যে ক্যাসিয়াসের ক্ষিপ্র অথচ বিনম্র আচরণের মধ্যে। চার বছর আগে জোহানেসবার্গে স্পেন বিশ্বসেরা হওয়ার পর পারফরম্যান্সে কিছুটা ভাঁটার টান দেখা গিয়েছিল ৩৩ বছর বয়সী এই গোলকিপারের। প্রশ্ন উঠেছিল বয়স নিয়েও। কিন্তু সমালোচকদের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর আগে সেই ‘সেন্ট’-ই যাবতীয় আশা-ভরসা স্প্যানিশদের।

স্প্যানিশদের মতো ইতালীয়দের ভরসাও তাদের গোলপোস্টের নীচে। কাসিয়াসের মতোই তিনি দলের অধিনায়কও। তিনি জিয়ানলুইগি বুফোঁ। ক্রিকেটের স্টিভ ওয়র মতো বরফ শীতল মস্তিষ্ক নিয়ে আজুরিদের উতরে দিয়েছেন বহু উত্তেজনার ম্যাচ। এখনও বয়স তাঁকে থামাতে পারেনি। ব্রাজিলে পা দেওয়ার পর বিমানবন্দরে স্থানীয় সাংবাদিকরা বুফোঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন এ বারের বিশ্বকাপের পরই কি অবসর নেবেন ইতালির ৩৬ বছর বয়সী অধিনায়ক? জবাবে রবার্তো বাজ্জোর দেশের অধিনায়ক যা বলেছেন, তা শুনলে চোখ কপালে উঠতেই পারে অনেক তাবড় ফুটবল বিশেষজ্ঞের। “বিশ্বকাপ জিততেই তো এসেছি। কাউকে তো হেঁটে হেঁটে গোল করে যেতে দেব না? আর অবসর! আরও কয়েক বছর তো খেলতেই হবে। না হলে ভুলত্রুটি সারিয়ে খেলার উন্নতি করব কী ভাবে?”


বুফোঁ

এখানেই উঠে আসছে সেই প্রশ্নটা। কাসিয়াস, বুফোঁরা কি তা হলে ইতালির দিনো জফ, উত্তর আয়ার্ল্যান্ডের প্যাট জেনিংস, মেক্সিকোর আন্তোনিও কার্বাজাল, ইংল্যান্ডের পিটার শিল্টনদের ‘ক্লাবে’ নাম লেখাতে চলেছেন? যাঁরা পুরনো চাল ভাতে বাড়ার মতোই বয়সকে তোয়াক্কা না করে জাতীয় দলের শেষ প্রহরী হিসেবে রাজত্ব করে গিয়েছেন।

বিরাশিতে ইতালি যে বার স্পেন থেকে বিশ্বকাপ নিয়ে ফিরেছিল সে বার রোসি, তারদেলি, আলতোবেলিরা দলে থাকলেও কোচ এনজো বেয়ারজোতের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন চল্লিশ বছরের দিনো জফ। যার সম্পর্কে বেয়ারজোত বলতেন, “বয়সকে থমকে দিয়েছে দিনো। বিশ্বকাপটা ইতালিতে আনার অন্যতম কারিগর। ব্রাজিল ম্যাচটায় ও দক্ষতার শীর্ষে না থাকলে রোসির হ্যাটট্রিকের পরেও আমরা কিন্তু হেরে যেতাম।” দিনো জফের বিশ্বকাপ জেতার চার বছর পর ছিয় মেক্সিকো বিশ্বকাপে খেলতে দেখা গিয়েছিল প্যাট জেনিংসকে। তখন তাঁর বয়স ৪১। আর দিয়েগো মারাদোনার ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের সঙ্গে যাঁর নাম উঠে আসে ইংল্যান্ডের সেই গোলকিপার পিটার শিল্টন নব্বইয়ে ইতালি বিশ্বকাপে যখন মাঠে নামছেন তখন তিনিও ৪১-এ পা দিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু পারফরম্যান্সে হার মানাতে পারতেন তরুণ যে কোনও গোলকিপারকেই। আন্তোনিও কার্বাজাল সত্তরের বিশ্বকাপে যখন খেলছেন তখন তিনিও ৪১।

কাসিয়াস যদি ক্লাব ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদের স্তম্ভ হয়ে থাকেন, বুঁফো তা হলে জুভেন্তাসের ঘরের ছেলে। বার্সেলোনায় যেমন ‘লা মাসিয়া’ থেকে উঠে এসেছেন মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তারা ঠিক তেমনই রিয়াল মাদ্রিদের ‘লা ফাব্রিকা’ ফুটবল স্কুলের ফসল স্প্যানিশ অধিনায়ক। আর ইতালির অধিনায়ক বুঁফোর উত্থান ইতালির পারমা ক্লাবের জুনিয়র টিম থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE