Advertisement
E-Paper

মরুশহরে সুন্দরকে নিয়ে উৎসবের মাঝে তিন কাঁটা শ্রীনিবাসনের

মহানাটকীয় টি-টোয়েন্টি যুদ্ধের শেষ ওভারগুলোয় যেমন বোঝা যায় না ম্যাচ কোন দিকে যাবে, সুপ্রিম কোর্টে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ভাগ্য-নির্ধারণও যেন তেমনই সরণি ধরে হাঁটছে। শুনানির পর শুনানি চলছে। কিন্তু অপসারিত বোর্ড প্রেসিডেন্ট হারবেন না জিতবেন, নিশ্চিত করে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৯

মহানাটকীয় টি-টোয়েন্টি যুদ্ধের শেষ ওভারগুলোয় যেমন বোঝা যায় না ম্যাচ কোন দিকে যাবে, সুপ্রিম কোর্টে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ভাগ্য-নির্ধারণও যেন তেমনই সরণি ধরে হাঁটছে। শুনানির পর শুনানি চলছে। কিন্তু অপসারিত বোর্ড প্রেসিডেন্ট হারবেন না জিতবেন, নিশ্চিত করে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না।

বুধবার যেমন ব্যক্তি শ্রীনিবাসনের পরাভূত হওয়ার দিন ছিল। কিন্তু বুধবারের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনামা আবার হয়ে দাঁড়াল শ্রীনি-প্রশাসনের কাছে নতুন অক্সিজেন। কিছুটা স্বস্তির প্ল্যাটফর্ম!

অপসারিত বোর্ড প্রেসিডেন্ট যে এ দিনের পর আরও গভীর সঙ্কটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, কোনও সন্দেহ নেই। দুই বিচারপতি এ কে পট্টনায়েক এবং খলিফুল্লার সুপ্রিম কোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন তিন কাঁটার মুখে ফেলে দিয়েছে শ্রীনিকে।

প্রথমত, বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে তাঁকে পুনর্বহাল করার আবেদনকে সম্পূর্ণ খারিজ করে বলে দেওয়া হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের গত ২৮ মার্চের অন্তর্বর্তিকালীন আদেশই বহাল থাকবে। শ্রীনিকে ফেরানোর কোনও প্রশ্নই নেই। দ্বিতীয়ত, শ্রীনির নাম প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে গেল স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে। সুপ্রিম কোর্ট এ দিন বলে দিল মুদগল কমিশন যে মুখবন্ধ খাম সুপ্রিম কোর্টের কাছে পেশ করেছে, তাতে তেরো নম্বরে শ্রীনির নাম আছে! বাকি বারো সবাই প্রখ্যাত ক্রিকেটার। তৃতীয়ত, প্রশ্ন তোলা হল আইসিসি বৈঠকে শ্রীনির যাওয়া নিয়ে। বলা হল, কী ভাবে শ্রীনি আইসিসি বৈঠকে গেলেন, কারা শ্রীনিকে যাওয়ার অনুমতি দিল আগামী ২২ এপ্রিল শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।

যার মধ্যে দ্বিতীয় কাঁটাকেই সবচেয়ে মারাত্মক বলে মনে করছে বোর্ডের একটা অংশ। শুনানির পরপরই শ্রীনির বিরুদ্ধে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়ে যায় বোর্ডের কোনও কোনও অংশে। কেউ কেউ বলতে থাকেন, ২৮ মার্চ শ্রীনি-অপসারণের পর বোর্ড কোনও রকম বৈঠক ডাকেনি। যদি বৈঠকে সদস্যদের কেউ ঘোরালো প্রশ্ন তোলেন! বুধবার রাতের দিকে অবশ্য বিদ্রোহের একটা মুখ প্রকাশ্য হল। প্রকারান্তরে ললিত মোদী শাসিত রাজস্থান ক্রিকেট সংস্থার পক্ষ থেকে কড়া চিঠি পাঠানো হল বোর্ডের কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট শিবলাল যাদবকে। চিঠিতে আরসিএ-র পক্ষ থেকে সরাসরি বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানির আগে বোর্ডকে জরুরি ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকতে হবে। আগামী ২০ এপ্রিল মুম্বইয়ে বিসিসিআই হেডকোয়ার্টারে সেটা ডাকতে হবে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ আমরা দেখেছি। কিন্তু আমরা বুঝতেই পারছি না বোর্ডের কৌসুঁলিদের কে নির্দেশ পাঠাচ্ছে। বোর্ডের কোনও বৈঠকে ব্যাপারটা আলোচনা করা হয়নি। কোনও ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক ডাকা হয়নি। আমরা চাই না বোর্ড এমন কোনও স্টান্স নিক যা কি না বোর্ড এবং ক্রিকেটারদের সুনামকে নষ্ট করবে।’

কিন্তু সে সব একান্তই ব্যক্তি শ্রীনির বিরুদ্ধে বিষোদগার। শ্রীনি-প্রশাসনের দিনটা মোটেও খারাপ গেল না।

সুপ্রিম কোর্ট স্পট ফিক্সিং মামলা অন্য যে দুই নির্দেশিকা পেশ করেছে বুধবার, তাতে কেউ কেউ মনে করছেন এতে শ্রীনি-প্রশাসনের সুবিধেই হল। কারণ আদালতের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে সিবিআই বা এসআইটি তদন্ত হবে না। বরং বিচারপতি পট্টনায়েক বলে দিয়েছেন, “আমরা সে সব ভাবছি না কারণ আমরা চাই না সিবিআই, পুলিশ বা মিডিয়া ক্রিকেটারদের দিকে কাদা ছুড়ুক।” বলা হয়েছে কেলেঙ্কারির তদন্ত করবে বোর্ড। এবং কী ভাবে করবে সেটাও আগামী মঙ্গলবারের শুনানির সময় জানাতে হবে। পাশাপাশি আইপিএল সিওও সুন্দর রামনকেও আইপিএলের দায়িত্বে বহাল রাখা হল। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সুনীল গাওস্করের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আবু ধাবিতে ফোন করে জানা গেল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কী দাঁড়াবে তা নিয়ে ভাল রকম টেনশনের আবহ সেখানে ছিল দুপুর পর্যন্ত। আদালত সুন্দর রামনকে ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে জানাজানির পরেই আবু ধাবিতে প্রায় উৎসব শুরু হয়ে যায়! আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যরা প্রত্যেকে সুন্দরকে অভিনন্দন জানিয়ে আসেন। এবং এর পর পর আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকেও বসে পড়েন বোর্ড কর্তারা। যেখানে আবার আইপিএলকে কী ভাবে ভবিষ্যতে কলঙ্কমুক্ত রাখা যায়, তা নিয়েও কয়েক দফা প্রস্তাব দেন গাওস্কর। যেমন সচিন তেন্ডুলক, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়দের হাজির করিয়ে তরুণ ক্রিকেটারদের ক্লাসের ব্যবস্থা। যাতে ভারতীয় ক্রিকেটের শ্রদ্ধেয় চরিত্রদের আদর্শ আগামী প্রজন্মের মধ্যেও পৌঁছে দেওয়া যায়। যেমন ভাবা হচ্ছে, আইপিএলের পরবর্তী সংস্করণ থেকে কেউ ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার পেলে তা থেকে অর্জিত অর্থের একটা অংশ দিয়ে দুঃস্থ ক্রিকেটারদের সাহায্য করা যায় কি না।

সব মিলিয়ে তা হলে কী দাঁড়াল?

খুব সহজে, সুন্দরকে নিয়ে উৎসবের দিনে চিন্তা একটাই। শ্রীনির তিন কাঁটা।

bcci shivlal yadav srinivasan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy