মেসি নিয়মিত গোল পাচ্ছেন না। জাভি, ইনিয়েস্তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। জেরার পিকে ছন্দে নেই। শেষ দুই ম্যাচে হার। সমস্যার যেন শেষ নেই বার্সেলোনার। তার উপরে আবার বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগে বার্সা শিবিরে চলছে ‘গুপ্তচর’ নিয়ে তীব্র আলোড়ন।
ঘটনাটা কী? এল ক্লাসিকো হারের পর জেরার পিকের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন বার্সা কোচ লুই এনরিকে। এমনকী পিকে একা নন। গত কয়েক দিনে কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সোচ্চার হয়েছেন লিওনেল মেসিও। যাঁদের অভিযোগ, বার্সা যে ঘরানার পাসিং ফুটবল খেলে অভ্যস্ত, এনরিকে তা সম্পূর্ণ পাল্টে দিতে চাইছেন। ডিরেক্ট ফুটবল খেলানোর চেষ্টা করছেন। যাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইনিয়েস্তা, মেসির মতো সিনিয়র ফুটবলাররা। সঙ্গে আবার জেরেমি ম্যাথিউকে রিয়ালের বিরুদ্ধে খেলিয়েছিলেন লেফট ব্যাকে। যার পরেই বার্সা ফুটবলাররা প্রশ্ন তোলেন, কেন এ রকম একটা মেগা ম্যাচে দল নিয়ে পরীক্ষা করতে গেলেন এনরিকে?
কিন্তু অভিনব ব্যাপার হল, বার্সা ড্রেসিংরুমের অন্দরমহলের খবর কী করে জনসমক্ষে যাচ্ছে, সেটা নিয়েই চিন্তিত ক্লাব কর্তারা। ক্লাবের এক সূত্র বলেছেন, “বার্সা ড্রেসিংরুমের সব খবর মোবাইলের টেক্সট মারফত বাইরে পাঠানো হচ্ছে। দলে এমন কেউ এক জন আছে যে এই কাজটা করছে।” এল ক্লাসিকো আর সেল্টা ভিগো ম্যাচের আগে নাকি দলের সমস্ত ছক বিপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। স্পেনের এক সাংবাদিক যে প্রসঙ্গে বলেছেন, “বার্সেলোনার অবস্থা ভাল নয়। আমরা সাংবাদিকরা বাড়িয়ে বলছি না। কিন্তু মেসি খুবই রেগে আছে যে, ক্লাবের ভিতরের খবর বাইরে পৌছে যাচ্ছে। লা লিগার শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে গিয়ে এখন ক্লাবের অনেকেরই বিশ্বাস দলে এমন এক জন কেউ আছে, যে টিমের ভেতরের খবর বাইরে পাঠাচ্ছে।”
স্প্যানিশ ফুটবলের সঙ্গে ‘গুপ্তচর’ শব্দটা পরিচিত। হোসে মোরিনহো রিয়াল মাদ্রিদ কোচ থাকাকালীন ইকের কাসিয়াসের বিরুদ্ধে গুপ্তচর হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। আর সেই বিতর্কই বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স সিগের গ্রুপে গুরুত্বপূর্ণ আয়াখস ম্যাচের আগে ধাওয়া করেছে বার্সাকে। তবে দলের পরিস্থিতি যাই হোক, তারকা মিডফিল্ডার সের্জিও বুস্কেতস বলেছেন, “এনরিকের সঙ্গে আমার অন্তত ভাল সম্পর্ক। ওর ছকে খেলতে আমার অসুবিধা নেই।”
মেসির দুঃসময়েই বার্সা কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ।
এহেন টালমাটালের মধ্যে যদি বার্সার জন্য কোনও স্বস্তির বার্তা থাকে তা হল, কালকের ম্যাচেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনা জার্সিতে অভিষেক হতে চলেছে লুই সুয়ারেজের। এবং সেটা এমন একটা মাঠে যেখানে খেলেই ইউরোপ জুড়ে নাম কুড়িয়েছিলেন সুয়ারেজ। আয়াখসে খেলার সময় ১৫৯ ম্যাচে ১১১ গোল করেছিলেন ‘এল পিস্তলেরো’। ক্লাবকে ডাচ লিগ জিততে সাহায্য করেছিলেন। তরুণ বয়সেই অধিনায়কত্ব করেছিলেন।
পুরনো ক্লাবের মাঠে ফেরার আগে সুয়ারেজ বলেছেন, “গত কয়েক মরসুম খেলতে পারিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। খুবই ভাল লাগছে আবার এ রকম একটা বড় টুর্নামেন্টে খেলতে পারব।” সঙ্গে আরও যোগ করেন, “আমি এমন একটা দলের ফুটবলার যাদের খুব ভাল সুযোগ আছে টুর্নামেন্ট জেতার।” শেষ দু’ম্যাচ হারলেও দলের মধ্যে একাত্মতার অভাব নেই, দাবি করছেন সুয়ারেজ। “মেসির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল। ও আর্জেন্তিনার। তাই শুরু থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব।” নিজের পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলার আগে উত্সুক বিতর্কিত উরুগুয়ান স্ট্রাইকার। “অনেক বছর কাটিয়েছি আয়াখসে। আমার পরিবার খুব ভাল ছিল এই শহরে। আরও এক বার আয়াখসের মাঠে খেলার সুযোগ পেয়ে খুব ভাল লাগছে। মুহূর্তটা উপভোগ করব।”
তবে গুপ্তচর বিতর্ক, সুয়ারেজের রোমান্টিক-রিইউনিয়ন, সব কিছুই পিছনে ফেলে দিচ্ছেন সেই এক জনই লিও মেসি। যাঁর পাখির চোখ রাউলের ৭১ গোলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ রেকর্ড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই মুহূর্তে মেসির গোলসংখ্যা ৬৯। আর তিনটে গোল করতে পারলেই এলএম টেন বসবেন সর্বোচ্চ গোলদাতার সিংহাসনে। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞের বিশ্বাস, মেসির আগে রাউলের রেকর্ড ভাঙবেন তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনাল্ডোই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy