Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
পেনাল্টি বিতর্কে উত্তপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: অ্যাওয়ে ম্যাচে দু’গোল করে শেষ আটের পথে বার্সেলোনা

লাল কার্ডেই এলোমেলো ম্যান সিটি

এক দলে মেসি, ইনিয়েস্তা, অ্যালেক্সিস স্যাঞ্চেজ। আর ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে ইয়াইয়া তোরে, ফার্নান্দিনহো, নেগ্রেদো, দাভিদ সিলভা! এত্তিহাদ স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর লড়াইটা যে ধুন্ধুমার হবে, সেটাই স্বাভাবিক।

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য
বার্সেলোনা-২ (মেসি, দানি আলভেজ) ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-০ শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০২:৪০
Share: Save:

এক দলে মেসি, ইনিয়েস্তা, অ্যালেক্সিস স্যাঞ্চেজ। আর ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে ইয়াইয়া তোরে, ফার্নান্দিনহো, নেগ্রেদো, দাভিদ সিলভা! এত্তিহাদ স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর লড়াইটা যে ধুন্ধুমার হবে, সেটাই স্বাভাবিক।

তবে দ্বিতীয়ার্ধে একটা পেনাল্টির সিদ্ধান্ত এবং মার্চিং অর্ডার পেয়ে দেমিচেলিসের বেরিয়ে যাওয়াটাই পেলেগ্রিনির দলকে এলোমেলো করে দিল। আর সেই পেনাল্টি থেকে মেসির গোলও শেষ আটের টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে বার্সাকে তখনই এগিয়ে দিয়েছিল মানসিক ভাবে। এই পেনাল্টি নিয়ে কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন রয়েছে। টিভি রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে মেসিকে ট্যাকলটা বক্সের বাইরেই করেছিল দেমিচেলিস। তাই রেফারি জোনাস এরিকসনের সিদ্ধান্তটা একটু বিতর্কিতই লেগেছে।

• বার্সেলোনা মোট পাস ৯৫৯।

• সিটি মোট পাস ৪৯১।

• বার্সেলোনা ৮৭% সফল পাস।

• সিটি ৭৬%। বার্সেলোনা ১৩০ একক দৌড়, যার মধ্যে ৯০টা অ্যাটাকিং থার্ডে।
• সিটি ৫৩ একক দৌড়, ৩৮টা অ্যাটাকিং থার্ডে।
• বার্সেলোনা গোলমুখী শট ১০, তেকাঠিতে শট ৭।

• সিটি গোলমুখী শট ৯, তেকাঠিতে শট ৪।

যাই হোক, শেষ বেলায় দানি আলভেজের গোলটা বার্সাকে হোম ম্যাচের আগে অনেকটাই এগিয়ে রাখল। কারণ, ঘরের মাঠে বার্সার তিকিতাকা থামানোর প্রতিষেধক পেলেগ্রিনি খুঁজে পাননি। নিজের কোচিং কেরিয়ারে বার্সার কাছে এই নিয়ে চোদ্দো বার হারলেন তিনি। মেসিদের ঘরের মাঠে কবজা করতে পারবেন কি? সন্দেহ আছে।

মঙ্গলবার প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও বার্সার মাঝমাঠে বুস্কেতস, জাভি এবং ফাব্রেগাসের ত্রিভুজ নজর কাড়ছিল বারবার। পাসের ফুলঝুরির সঙ্গে বলের দখলটাও নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছিল জেরার্ডো মার্টিনোর দল। মাঝমাঠে যেন স্তম্ভ হয়ে গিয়েছিল বুস্কেতস। তবে নাভাসকে বক্সে যে ভাবে বুস্কেতস ট্যাকল করল, সেটা কী করে রেফারির চোখ এড়িয়ে গেল সেটা গবেষণার বিষয়! যদিও বুস্কেতস ছিল বলেই ম্যান সিটির ইয়াইয়া তোরে ফাঁকা জায়গা পায়নি এক বারও। ফলে মাঝমাঠের দখল হারানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা আক্রমণের ছন্দটাও হারিয়ে ফেলেছিল নাভাস-নেগ্রেদোরা।

টিভি-তে খেলা দেখে মনে হল, মেসিকে পর পর দু’বার ফাউল করেছে মার্টিন দেমিচেলিস।
প্রথম বার স্লাইড করার সময় বলে পা না লাগিয়ে মেসির পায়ে মারে ম্যান সিটির ডিফেন্ডার (ছবি ১)।
এই ঘটনাটি পেনাল্টি বক্সের সামান্য বাইরে ঘটলেও, দ্বিতীয়বার কিন্তু পেনাল্টি বক্সের ভেতরই মেসিকে ছুঁয়ে যায়
দেমিচেলিসের পা (ছবি ২)।যার ফলে মেসি পড়ে যায়। ব্যাপারটা সেকেন্ডের ভগ্নাংশে
ঘটায় পেনাল্টি নিয়ে বিতর্কতৈরি হয়েছে। প্রথমবারই যদি রেফারিবাঁশি বাজিয়ে দিত তবে হয়তো পেনাল্টি হত না।
কিন্তু লাল কার্ড দেখতেই হতদেমিচেলিসকে। তবে ঘটনাটা কী ঘটেতা দেখার জন্য শেষ পর্যন্ত রেফারি
অপেক্ষা করেছে। আমার মনে হয়পেনাল্টির সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। প্রদীপ নাগ, প্রাক্তন ফিফা রেফারি

আর দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার তিকিতাকা যেন আরও নিখুঁত, আরও ভয়ঙ্কর। দানি আলভেজের গোলের মুহূর্তটাই ধরুন। বার্সা লেফট ব্যাক ইয়র্দি আলবার থ্রো-ইন থেকে রাইট ব্যাক আলভেজের গোল। বারো পাসে এল অসাধারণ গোল। এর পরে আর কী বলার আছে! আর ম্যান সিটি তার পাল্টা হিসেবে নেগ্রেদোকে লক্ষ্য করে সেই লং বল বাড়িয়ে গেল। তিকিতাকাকে এ ভাবে রোখা সত্যিই কষ্টকর!

দেখার ছিল, বিশ্বকাপের আগে চোট সারিয়ে মাঠে নামা মেসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নতুন কী উপহার দেয়। কিন্তু বার্সার ২-০ জয় দেখার পরেও বলছি, মেসি কিন্তু এখনও পুরোপুরি ছন্দে নেই। তবে যত সময় যাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ততই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে ও। আমার বরং চোখ টানল দাভিদ সিলভা। বার্সা রক্ষণে কিছুটা হলেও দাঁত ফোটাতে একমাত্র সফল ওই সিলভাই। তবে ফুটবলে যেটা শেষ কথা, সেই গোলটাই করতে ব্যর্থ ম্যান সিটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

champions league mesi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE