লিওনেল মেসি না ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো? অন্তহীন এই ফুটবল বিতর্কের ফয়সালাটা এ বার ব্রাজিলের মাটিতেই হয়ে যাবে, বলে দিচ্ছেন জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ!
ব্রাজিলের বিশ্বযুদ্ধে ফুটবল পায়ে দেখা যাবে না তাঁকে। কিন্তু মনে মনে এখনই বিশ্বকাপে ঢুকে পড়েছেন কিংবদন্তি সুইডিশ স্ট্রাইকার। এবং জানালেন, মাস দু’য়েকের মাথায় কাপটা লুই ফিলিপ স্কোলারির ছেলেদের হাতেই দেখছেন তিনি।
ব্রাজিলের উপর বাজি ধরার পিছনে ইব্রাহিমোভিচের যুক্তি স্পষ্ট। আজ পর্যন্ত অতলান্তিকের পশ্চিমকূলে কোনও বিশ্বকাপ জিততে পারেনি ইউরোপের কোনও দেশ। এ বারও তার খুব একটা পরিবর্তন দেখছেন না জানিয়ে ইব্রাহিমোভিচ এ দিন বলেন, “ওখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে গিয়ে ইউরোপের বেশিরভাগ টিমই সমস্যায় পড়বে বলে আমার ধারণা। আবহাওয়ার পরিবর্তন ছাড়াও ব্রাজিলে আরও কয়েকটা ছোট ছোট ফ্যাক্টর ইউরোপের টিমগুলোর বিপক্ষে যেতে পারে। তাই নিজেদের দেশে ব্রাজিলই ফেভারিট।”
ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেলে, ঘরের মাঠে প্রথম বার বিশ্বকাপ জিতে ব্রাজিল ছ’টা খেতাবের নজির বিহীন রেকর্ড গড়ে ফেলবে। দর্শকাসনে বসে যে কাণ্ডটা স্বচক্ষে দেখতে পারেন ইব্রাহিমোভিচ।
এমনিতে আসন্ন ফুটবল বিশ্বযুদ্ধ ঘিরে ফুটবলপ্রেমীর সবচেয়ে বড় আফসোস, সুইডেন না থাকায় মাঠে “ইব্রাকাড্যাবরা’র ইন্দ্রজাল থেকে বঞ্চিত তাঁরা। তবে অপার্থিব সব গোলের দৌলতে আদরের ডাকনামের মালিক যাতে বিশ্বকাপে একেবারে গরহাজির না থাকেন সেটা নিশ্চিত করতে আসরে নেমেছেন রোনাল্ডো, বেবেতো, রাই-রা। শুরু করেছেন ‘কাম ইব্রা’ উদ্যোগ। ব্রাজিলীয় মহাতারকাদের এই বিশেষ আমন্ত্রণে একেবারে আপ্লুত সুইডিশ গোল মেশিন। বলছিলেন, “এটা আমার কাছে বিশাল সম্মানের। এর পিছনে যাঁরা যাঁরা আছেন, প্রত্যেককে ধন্যবাদ!” জানাচ্ছেন, বিশ্বকাপে নিজে না থাকলেও বাকিদের খেলা মন দিয়ে দেখবেন।
বিশ্বসেরা বাছতে বললে, ইব্রাহিমোভিচ নিজের তালিকায় একদম উপরে দিকে রাখছেন দু’টো নাম, মেসি আর রোনাল্ডো। আর বলছিলেন, এক নম্বর কে সেটার ফয়সালা ব্রাজিলই করে দেবে। ইব্রাহিমোভিচের কথায়, “সর্বোচ্চ পর্যায়ে অসাধারণ ফুটবল খেলছে বেশ কয়েক জন। তবু মেসি আর রোনাল্ডো নাম দু’টো করতেই হবে। ওদের মধ্যে যে ব্রাজিলের টুর্নামেন্টে সেরা হবে, এক নম্বরের আসনটা দখল করবে সে-ই।”
বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের দৌড়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালের কাছে হেরে ছিটকে যাওয়ার হতাশা এখনও কুরে খাচ্ছে সুইডেন অধিনায়ককে। “সুইডেন বিশ্বকাপে নেই, এটা মেনে নেওয়া প্রচণ্ড কঠিন ছিল। তবে কথা দিচ্ছি, আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে সুইডেন।”
অবশ্য প্রচারমাধ্যম যা-ই বলুক, হারটাকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর কাছে ব্যক্তিগত পরাজয় হিসাবে দেখতে নারাজ স্ট্রাইকার। বলছিলেন, “যখন দু’টো দল খেলে, তখন ফোকাস দলের উপরেই থাকে। রোনাল্ডো আর আমি দু’জনেই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। দিনের শেষে ওর টিম আমার টিমের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল।”
ভারতে অ্যাকাডেমি খুলছে তেত্রিশের স্ট্রাইকারের ক্লাব প্যারিস সাঁ জা। যা নিয়ে ইব্রাহিমোভিচ বলছেন, “এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রকল্প। তবে সবে শুরু হচ্ছে। দেখা যাক কোথায় গিয়ে শেষ হয়। আমি খালি বিশ্বাস করি, প্রত্যেকেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে একদিন না একদিন।”
তাঁর নিজের স্বপ্ন আরও কয়েকটা ট্রফি জেতা। যার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অবশ্যই অন্যতম। ট্রফি ক্যাবিনেটে বাইশটা ট্রফি। তবু বলছেন, “ক্লাবের সঙ্গে আমার চুক্তি আরও দু’বছরের। তার পরে অন্য কোনও দেশেও খেলতে পারি। প্রত্যেক লিগের নিজের চরিত্র থাকে, নিজস্ব দর্শন। আমি প্রতিযোগিতা থেকে আরও শিখতে চাই। আরও ট্রফি জিততে চাই।”
খিদে এতটুকু কমেনি, জানিয়ে দিচ্ছেন তেত্রিশের ‘ইব্রাকাড্যাবরা’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy