Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Jagdeep Dhankhar

টুইট করে রাজ্যপাল অপরাধীদের আড়াল করছেন, আইনের তোপ দাগলেন কল্যাণ

রাষ্ট্রপতির কাছে কল্যাণের আর্জি, ধনখড়কে যেন অবিলম্বে রাজ্যপালের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, তিনি সংবিধানের ধারা লঙ্ঘন করেছেন।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ১৬:০০
Share: Save:

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার দলের সাংসদ তথা পেশায় আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ওই আর্জি জানিয়েছেন। পাশাপাশিই, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ধনখড়কে যেন অবিলম্বে রাজ্যপালের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, তিনি সংবিধানের ধারা লঙ্ঘন করেছেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে পাল্টা আক্রমণ করেন রাজ্যপালও। রাজ্যে পুলিশের রাজনীতিকরণ হচ্ছে, আইনের শাসন নেই বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

কল্যাণের অভিযোগ, রাজ্যপাল পরপর টুইট করে ‘অপরাধীদের’ আড়াল করার চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের ওই সাংসদ রাজ্যপালের ২২ এবং ২৫ নভেম্বরের দুটি টুইটের উল্লেখ করে বলেন, ‘‘রাজ্যপাল যে ভাবে টুইট করেছেন, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে বাধা সৃষ্টি করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ এবং ১৮৯ ধারায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। রাজ্যপাল অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কলকাতা পুলিশ এবং বিধাননগর থানাকে আর্জি জানাচ্ছি, তারা যেন অবিলম্বে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে।’’ কল্যাণ আরও দাবি করেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৭ ধারা অনুযায়ী রাজ্যপাল ধনখড়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কোনও অনুমোদনেরও প্রয়োজন হবে না। কল্যাণের কথায়, ‘‘জগদীপ ধনখড় রাজ্যপালের মতো ব্যবহার করছেন না। তিনি শুধু রাজ্যপালের পদটাকে ব্যবহার করছেন।’’

বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যের শাসক তৃণমূল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে খড়্গখস্ত। তবে তার কারণও রয়েছে। রাজ্যপাল মাঝেমধ্যেই টুইট করে রাজ্য প্রশাসন এবং শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কথা বলছেন। সাম্প্রতিক টুইটদু’টি তার অন্যতম উদাহরণ বলে শাসক শিবিরের দাবি।

আরও পড়ুন: ‘জেলে থাকলেও বাংলায় তৃণমূলকে জেতাব’, বাঁকুড়া থেকে চ্যালেঞ্জ মমতার

বৃহস্পতিবার কল্যাণ বলেন, ‘‘২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট তাদের একটি নির্দেশে বলেছে, রাজ্যপাল কোনও সরকারকে সমর্থন করতে পারেন না। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে দায়বদ্ধ নন। অথচ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ঠিক সেটাই করে চলেছেন। তিনি কলকাতা পুলিশ, বিধাননগর পুলিশ থানা এবং রাজ্যের একাধিক মন্ত্রীকে টার্গেট করে টুইট করছেন!’’ রাজ্যপালের টুইটের উদ্দেশ্য সম্প্রতি ধৃত গোবিন্দ আগরওয়াল এবং সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্তে বাধা দেওয়া বলে কল্যআণের অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘গোবিন্দ আগরওয়াল ও সুদীপ্ত রায়চৌধুরী দুজনেই প্রতারক। নোট বাতিলের সময় তাঁদের নামে ইডি-র কাছে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। ওই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশ এবং বিধাননগর পুলিশ যখন তদন্ত শুরু করেছে, তখন রাজ্যপাল তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তিনি অভিযুক্তদের হয়ে টুইট করছেন।"

আরও পড়ুন: গোটা বাংলায় দলের পর্যবেক্ষক তিনিই, নাম না করে কাকে বার্তা দিলেন মমতা

কল্যাণের আরও অভিযোগ, গোবিন্দের নামে ৩.৮৮ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। অন্যদিকে, সুদীপ্তর বিরুদ্ধে গরুপাচার ও মানুষ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সেই সূত্রেই কল্যাণের দাবি, ‘‘রাজ্যপাল বিজেপির এজেন্ট। ওঁর সঙ্গে সমস্ত অপরাধীর গোপন আঁতাত রয়েছে।’’

তাঁরা কি রাজ্যপালকে সরানোর জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে কোনও লিখিত আবেদন করবেন? কল্যাণের জবাব, ‘‘সেটা পরে ঠিক করা হবে। কিন্তু কিছুদিন পরেই আমরা রাজ্যপাল সম্পর্কে দ্বিতীয় পর্যায়ের পর্দা উন্মোচন করব।’’

কল্যাণের প্রতিক্রিয়া জানার পর রাজ্যপাল বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘পাহাড় প্রমাণ ব্যর্থতা ঢাকতে বিকৃত প্রচার করা হচ্ছে। অবাধ ভোটের সওয়াল করেছিলাম বলেই এত আক্রমণ। জ্বলন্ত ইস্যু থেকে নজর ঘোরানোর এটা একটা রণকৌশল।’’ একইসঙ্গে রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, রাজনৈতিক হিংসায় রাজ্য জ্বললে তিনি চুপ থাকতে পারবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jagdeep Dhankhar Kalyan Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE