Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাবুলের দেরিতে ক্ষোভ দলেই 

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মেমারির দেবীপুরের মাছবাজার থেকে প্রার্থীদের সমর্থনে বিজেপির মিছিল হওয়ার কথা ছিল। সেই মিছিল চোৎখণ্ড, দুর্গাপুর, সিমলা, উৎকেডাঙা, কেন্না গ্রাম হয়ে মহেশডাঙা ক্যাম্পের মাঠে শেষ হওয়ার কথা।

হাতে-মাইক: মেমারির জনসভায় বাবুল সুপ্রিয়। নিজস্ব চিত্র

হাতে-মাইক: মেমারির জনসভায় বাবুল সুপ্রিয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ০২:৪৭
Share: Save:

কথা ছিল বেলা ১১টার সময় তিনি আসবেন। এলেন বেলা তিনটে নাগাদ। সময়ে না আসায় বাতিল হয়ে গেল মেমারির মহেশডাঙার নির্দিষ্ট কর্মসূচি। তিনি আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।

বাবুলের অবশ্য দাবি, “সকাল থেকে আসানসোলে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। সে জন্য আমি রাস্তায় বের হতে পারিনি। কিন্তু আপনাদের কথা চিন্তা করে আমি এখানে এলাম।” কিন্তু তাতেও ক্ষোভ আটকানো যায়নি। বিজেপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের মুখে দাঁড়িয়ে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। ভোটের মুখে বড় মিছিল ও কর্মসূচিতে মন্ত্রীর আসার কথা ছিল। উনি বৃষ্টির দোহাই দিয়ে পার পেয়ে গেলেও মুখ পুড়ল দলের।’’

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মেমারির দেবীপুরের মাছবাজার থেকে প্রার্থীদের সমর্থনে বিজেপির মিছিল হওয়ার কথা ছিল। সেই মিছিল চোৎখণ্ড, দুর্গাপুর, সিমলা, উৎকেডাঙা, কেন্না গ্রাম হয়ে মহেশডাঙা ক্যাম্পের মাঠে শেষ হওয়ার কথা। পরে একটি জনসভাও হওয়ার কথা। কিন্তু মিছিলটি বাতিল করতে হয়। দলের কর্মীদের একাংশ যদিও মন্ত্রীকে ছাড়াই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির মধ্যে মিছিল করার জন্য উৎসাহী ছিলেন। তাঁদের ‌দাবি ছিল, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতেও বিজেপি যে মাঠে রয়েছে, সেটা শাসক দলকে দেখানো যেত। কিন্তু দলের জেলা নেতৃত্ব রাজনৈতিক অনুকূল পরিস্থিতি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হল। দলের জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান) সন্দীপ নন্দী বলেন, “মন্ত্রী দেরিতে আসছেন শুনে মিছিল বাতিল করা হয়েছে।”

এ দিকে, বেলা দুটো নাগাদ দেবীপুর থেকে ৩টে ম্যাটাডর, একটি হুডখোলা জিপ এবং কয়েকশো মোটরবাইক নিয়ে মহেশডাঙা ক্যাম্পের দিকে যাচ্ছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। মেমারির নুদিপুরের কাছে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বিজেপির নেতাদের বলেন, “আপনাদের র‌্যালির সময় ছিল দুপুর দু’টো পর্যন্ত। আপনারা দলবেধে না গিয়ে ধাপে ধাপে গেলে আমাদের আপত্তি থাকবে না। দলীয় পতাকাও খুলে নিতে হবে।” এরপরেই বিজেপির জেলা পর্যবেক্ষক অনল বিশ্বাস ও অন্য নেতাদের সঙ্গে পুলিশের বাতবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের সিদ্ধান্ত মেনে নেন নেতারা।

মহেশডাঙা ক্যাম্পের জনসভায় হাজির হয়ে বাবুল প্রথমেই বিজেপির ৮ প্রার্থীকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, “ওরা জানে মানুষ ব্যালট বাক্সের কাছে পৌঁছে গেলে তৃণমূল নির্মূল হয়ে যাবে। তাই মনোনয়নের দিন থেকে সন্ত্রাস তৈরি করেছে।” তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যে সব পরিষেবা রয়েছে, তা নিয়ে তৃণমূল রাজনীতি করে।

এ দিন বাবুল সুপ্রিয়কে দেখার জন্য স্থানীয় জাগরণী বিশ্বাস, সুস্মিতা বিশ্বাস, পাশের নিমো এলাকার রাজীব হালদারেরা তিন ঘন্টা ধরে মহেশডাঙা ক্যাম্পে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের ক্ষোভ, “এত দেরি কেউ করে?” সভাস্থলের লোকেরা যে তাঁর উপর ক্ষুব্ধ সেটা বুঝতে পেরে একটি বাংলা গানও ধরেন বাবুল। যা শুনে তৃণমূলের মেমারি বিধানসভার তৃণমূল পর্যবেক্ষক স্বপন বিষয়ীর কটাক্ষ, “যাঁরা মানুষকে দুর্যোগের মধ্যেও রাস্তায় দাঁড় করায়, তাঁরা কত উন্নয়ন করবে তা মানুষ বুঝে গিয়েছে। রাজ্যের উন্নয়ন দেখে তাঁদের কিছু বলার নেই, সে জন্য গান গেয়ে রাজনৈতিক সভা করতে হচ্ছে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE