ছবি: সংগৃহীত।
কী চাই, আর কী নেই—তা জানতে ‘তীর্থে’ যাবে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি। ‘তীর্থ’ মানে ‘বুথ’।
আজ, রবিবার পুরুলিয়ার আনাড়া থেকে শুরু হওয়ার কথা এই কর্মসূচির। দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘বুথস্তরের সংগঠনই মূল। বুথ আমাদের কাছে তীর্থের মতো। তাই কর্মসূচির নাম রাখা হয়েছে ‘বুথ-তীর্থ যাত্রা’।’’ দল সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েতের যে সব আসনে দলের প্রার্থী জিতেছেন, সেখানে গিয়ে মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হবে, কোন কোন উন্নয়নমূলক কাজ করা দরকার? যে আসনে বিজেপি হেরেছে, সেখানে গিয়ে এলাকার সমস্যা বুঝে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা হবে। নেতাদের আশা, ‘ফল’ মিলবে তাতেই।
সন্দিহান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। তাঁর মন্তব্য, ‘‘জনবিচ্ছিন্ন হওয়াতেই ওদের এ সব করতে হচ্ছে। মানুষ সবই বোঝেন। এই কর্মসূচিকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও দরকার নেই।’’
আরও পড়ুন: দিলীপের গড় খড়্গপুরে প্রেমচাঁদ, করিমপুরে জয়প্রকাশ, উপনির্বাচনে তিন কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা বিজেপির
বিজেপি সূত্রের দাবি, এই কর্মসূচির ভাবনা পুরোপুরি পুরুলিয়া জেলা নেতৃত্বের। ছটপুজোর পাট মিটলে ধাপ ধাপে জেলার ২,৪৯১টি বুথে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে নিবিড় ভাবে জনসংযোগ করে, দলের ভিত পোক্ত করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘নির্বাচনে জেতার পরে, জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে জনবিচ্ছিন্নতা তৈরি হওয়ার প্রবণতা থাকে। কিন্তু তাঁদের মনে রাখতে হবে তাঁরা সাধারণ মানুষের ভোটেই জিতেছেন। তাই গ্রামে উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য মানুষের মতামত, পরামর্শ নেওয়াটা অন্যতম কর্তব্য।”
দল সূত্রের খবর, প্রতিটি মণ্ডলের সভাপতি, জেলা কমিটির সদস্য-সহ ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যেরা যাবেন তাঁদের এলাকার বুথগুলিতে। অনেক ক্ষেত্রেই শামিল হবেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। বুথ এলাকায় গিয়ে বিশেষ করে মতামত নেওয়া হবে গ্রামের বয়ষ্ক লোকজনের। বিদ্যাসাগরবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘গ্রামের বা এলাকার সমস্যা বয়ষ্ক মানুষজন সব থেকে ভাল বোঝেন। দীর্ঘদিন ধরে নিজের গ্রামকে চেনেন-বোঝেন তাঁরা। তাই তাঁদের মতামত এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবে।” তিনি জানাচ্ছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে জেলার সব বুথ ঘোরার কাজ তাঁরা শেষ করতে চান।
লোকসভা নির্বাচনে জেলার ন’টি বিধানসভার মধ্যে আটটিতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু জেলা রাজনীতির গতিপ্রকৃতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, ‘কাটমানির’ প্রশ্নে দলের ‘দুর্নীতিগ্রস্তদের’ চিহ্নিত করতে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগ এবং তার ঠিক পরেই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল মাঠে নেমে পড়ায় কিছুটা হলেও ‘অস্বস্তি’ বেড়েছে বিজেপির। তাই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির ধাঁচেই দলের নেতা-কর্মীদের বুথে বুথে পাঠানোর কথা ভাবতে হচ্ছে বিজেপির পুরুলিয়া জেলা নেতৃত্বকে। বিদ্যাসাগর অবশ্য বলছেন, ‘‘বুথ-তীর্থ যাত্রায় আমাদের সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের হাতের কাছে পাবেন গ্রামবাসীরা। সহজেই সমস্যার কথা বলতে পারবেন। সেটাই উদ্দেশ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy