Advertisement
০২ মে ২০২৪

বেতন বৃদ্ধি, তবু খুশি নন কলেজ শিক্ষকরা

এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অধ্যক্ষ, উপাচার্য, সহ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার, অতিথি শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ইউজিসি নির্ধারিত পে স্কেল চালু হল। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এই নতুন পে স্কেল দেওয়া হবে। বেতন ও অবসরের সময়ে প্রাপ্য এককালীন টাকা বাড়ছে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি শিক্ষকদেরও।

এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অধ্যক্ষ, উপাচার্য, সহ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার, অতিথি শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। ইউজিসি নির্ধারিত পে স্কেল চালুর নির্দেশ দু’বছর আগে বেরোলেও এ রাজ্যে তা এত দিন চালু হয়নি। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সেই পে স্কেল চালু করার কথা ঘোষণা করেন কি না, যাবতীয় কৌতূহল ছিল তা ঘিরেই।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘২০২০ সাল থেকে আমরা সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশে ইউজিসি নির্ধারিত পে স্কেল চালু করছি, আর ২০১৬ থেকে চার বছর অর্থাৎ ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমরা তিন শতাংশ করে ইনক্রিমেন্ট দেব। অতিথি শিক্ষকরা ৬০ বছর বয়সে অবসরের পরে ৩ লাখের বদলে ৫ লাখ পাবেন। আর তাঁদের মাসিক বেতন ৫ হাজার টাকা করে বাড়ানো হল।’’

আরও পড়ুন: কত ব্যবধানে জয়, হিসেবে ব্যস্ত মুকুলেরা

সরকারের অর্থাভাবের কারণে এর বেশি টাকা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আবেদন, ‘‘অনেক কষ্ট করে যেটুকু জোগাড় করতে পেরেছি, দিলাম। আশা করি আমাদের এই ছোট্ট দান আপনারা গ্রহণ করবেন।’’ উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে থেকে যথেষ্ট উচ্ছ্বাস না দেখে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কী, খুশি হলেন না আপনারা?... আগামী দিনে সরকারের আয় বাড়লে আবার দেব।’’

প্রাপ্তি
• নতুন বছরে ইউজিসি নির্ধারিত পে স্কেল চালু
• অতিথি শিক্ষকদের মাসিক বেতন বাড়বে ৫ হাজার টাকা। অবসরের পরে ৩ লাখের বদলে ৫ লাখ
ক্ষোভ
• ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বর্ধিত বেতন
না পাওয়া

তাঁর সরকার যে শিক্ষকদের পাশে পেতে চাইছে, তার ইঙ্গিত দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই সরকার কোনও ভাবে আপনাদের বিরক্ত করবে না। আপনাদের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না।’’ ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে ফের কলেজ শিক্ষকদের নিয়ে তিনি বৈঠক করবেন বলে এ দিনই জানিয়ে দেন মমতা। শিক্ষকদের কাছে শিক্ষামন্ত্রীরও আবেদন, ‘‘ছোটখাটো অসন্তোষ থাকলে তা আলোচনা করা হবে। কিন্তু শিক্ষাকে আমরা স্তব্ধ করে দিই না।’’

তবে অসন্তোষ কমেনি শিক্ষক মহলে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুটার সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই প্রথম বার চার বছর পর থেকে পে স্কেল চালু হচ্ছে।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘২০১৬-র বদলে চালু হল ২০২০ সাল থেকে। চার বছরের পে স্কেল পেলাম না। নতুন পে স্কেলের দাবিতে ১৯ ও ২০ নভেম্বর যে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে এখনই সরে যাচ্ছি না।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থিব বসুও বলেন, ‘‘আমরা সন্তুষ্ট নই। প্রতিবাদে রাস্তায় নামছি। আমাদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত ছিল ১৯ নভেম্বর। বুধবার ঠিক করব তা হবে কি না।’’ শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘উপস্থিত শিক্ষকরা যে ভাবে নীরব থেকে প্রতিবাদ করেছেন, সেটাই শিক্ষক সমাজের প্রতিক্রিয়া।’’ অল বেঙ্গল কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি ডেমোক্র্যাটিক টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিমলশঙ্কর নন্দ বলেন, ‘‘বেতনক্রম ২০১৬ সালে চালু না হওয়ার ফলে অধ্যাপকরা লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হলেন।’’ তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE