মঞ্চসাজ: বারাসতের কাছারি ময়দানে ৬ এপ্রিল সভা অভিষেকের। চলছে তারই তোড়জোড়। ছবি: সুদীপ ঘোষ
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রকাশ্যে মাইক বাজানোর অনুমতি মিলতেই পাঁচ দিনে পাঁচশো প্রস্তুতি সভা হয়েছে জেলায়! মঙ্গলবারও জেলার গাঁ-শহরে ঘুরে বেরিয়েছে একশোটিরও বেশি ট্যাবলো! পরশু, বৃহস্পতিবার তামাম উত্তর চব্বিশ পরগনার আনাচ-কানাচ থেকে বারাসতে ঢুকবে তিন হাজার বাস, ম্যাটাডোর।
অদূরে ছোটখাটো উপ-নির্বাচন পর্যন্ত নেই। পঞ্চায়েত ভোট হতেও প্রায় দশ মাস বাকি। তাতে কী! জেলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুনরাবির্ভাবকে’ ঘিরে এখন এমনই সাজো সাজো অবস্থা বারাসতে।
দুর্ঘটনার পর সুস্থ হয়ে উঠে তাঁর নিজের নির্বাচন কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারে গত রবিবার প্রথম সভা করেছেন অভিষেক। পরশু বারাসতের কাছারি ময়দানে পরের সভা করবেন যুব তৃণমূল সভাপতি। কিন্তু সেই সভাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে এমন তৎপরতা শুরু হয়েছে, যে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে তা হলে কি সংগঠনে এ বার আরও গুরুত্ব বাড়বে অভিষেকের?
শনিবার তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকের পর থেকেই এই জল্পনা বাড়তে শুরু করেছে। অভিষেক যুব সভাপতি হলেও বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু ইদানীং মুর্শিদাবাদ, দুই মেদিনীপুরেও সংগঠনেরও দেখভাল করছিলেন তিনি। শনিবার কোর গ্রুপের বৈঠকেই তৃণমূল নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, হুগলি ও হাওড়াতেও তাঁকে এ বার কিছুটা সময় দিতে হবে। দলের একাংশের মতে, এপ্রিল মাসে তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনের পর আনুষ্ঠানিক ভাবে সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হতে পারে তাঁকে। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, কংগ্রেসি ঘরানায় এমনই হয়। অতীতে রাজীব গাঁধীও শুরুতে যুব কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে মমতাও রাজ্যের যুব সভানেত্রী ছিলেন। আর এখন যুব নেতা থাকলেও অভিষেক কার্যত মূল সংগঠনের জন্যই কাজ করছেন। হতে পারে এ বার পাকাপাকি তাঁর মর্যাদা বাড়ানো হবে।
তবে অভিষেকের সভা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সীমাহীন দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, মোদী বিরোধিতার কারণে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে বিলীন হয়ে যাওয়ার ভয়েই একটা সভা ঘিরে ওরা এ সব করছে।’’ সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এক নেতা-নির্ভর তৃণমূলে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই এই সভা ঘিরে এত কিছু। পঞ্চায়েত ভোটের আগে লুম্পেন বাহিনীকে একত্র করতেই এত লাফঝাঁপ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy