Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শরিকদের ভূমিকা নিয়ে পাল্টা তোপ জেলা সিপিএমের

ভোটে ভরাডুবির জন্য বামফ্রন্টের শরিকেরা দোষ দিয়েছিল কংগ্রেসের সঙ্গে জোটকে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এ বার পাল্টা প্রশ্ন উঠে গেল শরিকদের ভূমিকা নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৬ ০৮:৩৩
Share: Save:

ভোটে ভরাডুবির জন্য বামফ্রন্টের শরিকেরা দোষ দিয়েছিল কংগ্রেসের সঙ্গে জোটকে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এ বার পাল্টা প্রশ্ন উঠে গেল শরিকদের ভূমিকা নিয়ে।

কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া করে লড়তে গিয়ে তিন বাম শরিক আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআই এ বার যথাক্রমে তিন, দুই ও একটি আসন পেয়েছে। জোট করে কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি করে শরিক নেতৃত্ব আলিমুদ্দিনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গ না ছাড়লে তাঁরা বামফ্রন্টে থাকবেন কি

না ভাববেন। এই উত্তপ্ত আবহে শনিবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে একাধিক জেলার নেতারা শরিকদের পাল্টা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন। জোটের পক্ষেই রাজ্য কমিটির বৈঠকের প্রথম দিনে সওয়াল করেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা। আর তা করতে গিয়েই কংগ্রেসের সঙ্গে শরিকদের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আলিপুরদুয়ারের কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বৈঠকে বলেছেন, তাঁদের জেলায় খারাপ ফলের জন্য জোট নয়, বরং বামফ্রন্টই দায়ী! কেন কংগ্রেসের সঙ্গে নিষ্পত্তি না করে আরএসপি-র মতো শরিকদের চাপে সেখানে প্রার্থী দিয়ে দেওয়া হল, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এতে তৃণমূলের সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে বলেই তাঁর অভিযোগ। একই ভাবে বীরভূমের মনসা হাঁসদা বলেছেন, রামপুরহাটে ফ ব জোর করে প্রার্থী দেওয়ায় কংগ্রেস বিরূপ হয়েছে। তার জেরে দুবরাজপুর ও নলহাটির মতো আসন হাতছাড়া হয়েছে। বাঁকুড়ার অজিত পতি বলেছেন, জোটের পরিবেশ এবং সিপিএমের সহযোগিতা ছাড়া ওই জেলা থেকে একটি আসন আরএসপি জিততে পারতো না। পুরুলিয়ার প্রদীপ রায়ও যুক্তি দিয়েছেন, তাঁদের জেলায় কিছু এলাকায় কংগ্রেসের অবশ্যই প্রাসঙ্গিকতা ছিল। তাদের অস্বীকার করতে চাইলে ফল আরও খারাপ হতো। কলকাতার মানব মুখোপাধ্যায় এ দিনের বৈঠকে আরও সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, বামফ্রন্টের বৈঠকে শরিক নেতারা যে ভাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে আক্রমণ করেছেন, দল কেন তা চুপচাপ হজম করবে?

জোটের কার্যকারিতা নিয়ে সিপিএমের অন্দরেও অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে। মুখ খুলেছেন বর্ধমানের অচিন্ত্য মল্লিক, গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, আভাস রায়চৌধুরী, জলপাইগুড়ির সলিল আচার্য, জিয়াউল আলম, হুগলির মিতালি কুমার বা দলীয় মুখপত্রের দেবাশিস চক্রবর্তী। পরাজিত প্রার্থী গৌরাঙ্গবাবু মন্তব্য করেছেন, রাহুল গাঁধীর সঙ্গে মালা পরে জাত গেল, পেটও ভরল না! দুর্গাপুরে রাহুলের সভায় অবশ্য গৌরাঙ্গবাবু নিজেও হাজির ছিলেন। অন্য দিকে, নিজে পরাজিত হয়েও শমীক লাহিড়ী সাফ বলেছেন, মৌলবাদীদের মতো পুঁথি পড়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে চললে বাংলায় শহিদ বেদিতে মালা দেওয়ার লোকও থাকবে না সিপিএমে!

নদিয়ার সুমিত দে-ও বলেছেন, জোট নিয়ে নিচু তলা পর্যন্ত আশাবাদ ছড়িয়েছিল। আর জোট না থাকলে নদিয়ায় বাম বা কংগ্রেস কোনও আসনই পেত না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cpm Left alliance Conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE