ছবি পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড় এবং বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আনাজ চাষ। এই পরিস্থিতিতে বাজারে আনাজের দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও ইতিমধ্যেই বেড়েছে আলু, পটল, ঢেঁড়সের মতো আনাজের দাম।
গত বৃহস্পতিবারই রাজ্য মাঠে থাকা আনাজের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব কষতে কৃষি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিল। টেলি-যোগাযোগ এখনও স্বাভাবিক হয়নি। অনেক জায়গায় পৌঁছনোও সম্ভব হচ্ছে না বলে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেতে সময় লাগবে বলে মনে করছেন কৃষি-কর্তারা। দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমানে আমপানের প্রভাবে বিপুল চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছে কৃষি দফতর।
রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘রাজ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ আনাজ নষ্ট হয়েছে। দ্রুত জল না নামলে ফসলের আরও ক্ষতি হবে।’’ কমলবাবু জানান, কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারে তিন গুণ দাম বেড়ে গিয়েছে। আমপানের পর থেকে কোলে মার্কেটে ৬০ শতাংশ আনাজ আসছে না। ঝড়ের আগে লকডাউনের মধ্যেও রোজ ২৫০টি গাড়ি আসত। আমপানের পরে শনিবার কোলে মার্কেটে গাড়ি এসেছে ১৩০টি। টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, দুই চব্বিশ পরগনা ও নদিয়াতে আনাজ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত য়েছে বলে কলকাতার বাজারে আনাজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: চাষে ধাক্কা বহু কোটির, দাবি উঠছে ক্ষতিপূরণের
রাজ্যের বাজারে আনাজের অন্যতম উৎস ভাঙড়। সেখান থেকে প্রতি দিন প্রায় কয়েক কোটি টাকার আনাজ কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে যায়। রবিবার ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারের পাইকারি হাটে গিয়ে দেখা গেল বেগুন কেজি প্রতি ৩০ টাকা, পটল কেজি প্রতি ৩০ টাকা, ঢেঁড়স কেজি প্রতি ১৫ টাকা, লঙ্কা কেজি প্রতি ৪০ টাকা, শসা কেজি প্রতি ৪০ টাকা, ঝিঙে কেজি প্রতি ২০ টাকা, উচ্ছে কেজি প্রতি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপির দর প্রতিটি ১৫ টাকা করে। আমপানের প্রভাব পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা, আমডাঙা, বাগদার কৃষি এলাকাতেও। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মোট ১ লক্ষ ৯ হাজার ৬৩৯ হেক্টর কৃষি ও আনাজের জমি সম্পূর্ণ জলের তলায়। উদ্যানপালনের ৫৩ হাজার ৬৬৯ হেক্টর পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফুল চাষ ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মৃত্যু ঠেকিয়েও ধাক্কা কেন পরিকাঠামোয়
মেদিনীপুরের বাজারে এখন আলু, ঢ্যাঁড়শ, কুঁদরি এবং উচ্ছের দাম চড়ার দিকেই। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, আমদানি কমতে শুরু করায় সব আনাজের দামই কিলোপ্রতি ৫-৬ টাকা বাড়তে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৩,২৫৪ হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ ছিল। ঝড়বৃষ্টিতে প্রায় ৯০ শতাংশ জমির চাষই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁকুড়ার বাজারে পটল, ঢেঁড়স, বেগুনের দাম কিলোপ্রতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে । পূর্ব বর্ধমান জেলার সবচেয়ে বেশি আনাজ হয় পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে। আমপানে সেখানকার বেশির ভাগ গাছ নুইয়ে পড়েছে। চাষিরা জানাচ্ছেন, নতুন করে বীজ বসিয়ে আনাজ ফলাতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে। ফলে জোগানের ঘাটতিতে বাড়তে পারে দাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy