আরিফুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে জেএমবি জঙ্গি কওসরকে ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল তার সঙ্গীরা। লালবাজার সূত্রের দাবি, বর্তমানে কলকাতার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি কওসরকে ছাড়াতে ফের এমনই হামলার ছক কষেছে জেএমবি। আদালত থেকে জেলে যাতায়তের পথে ওই হামলার পরিকল্পনা ছিল। আরিফ নামে এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করার পর এমনই দাবি করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার ভোরে বাবুঘাটের কাছ থেকে আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ ওরফে আতাউরকে গ্রেফতার করে পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। আরিফের কাছ থেকে মহানগরের বহু ম্যাপও মিলেছে। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, আরিফের সঙ্গে আরও কিছু জঙ্গি কলকাতায় ঢুকেছে। তাদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। জেল ও ব্যাঙ্কশাল আদালতে যাতায়াতের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে ‘রেকি’ করেছে তারা।
গোয়েন্দারা জানান, অসমের বরপেটা জেলার পানাপাড়ায় বাড়ি আরিফের। তার বাবা ও দাদার মোবাইলের দোকান রয়েছে। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার মাদ্রাসায় পড়াশোনা সেরে লরির খালাসির কাজ করত সে। পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে জেএমবি-র সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কওসর এবং আর এক জঙ্গি আব্দুল মজিদের সঙ্গে আলাপ হয় আরিফের। তাদের নির্দেশেই জেএমবিতে যোগ দেয় সে। কওসরের কাছে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নেয় সে।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, জাহানাবাদের একটি হোটেলে কওসর ও আরিফ উঠেছিল। বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে বিস্ফোরক পাচার এবং বোমা রাখার দায়িত্ব ছিল আরিফের। ওই বিস্ফোরণের পরেই দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছিল আরিফ। বেঙ্গালুরুতে থাকার সময় সংগঠনের নির্দেশে তিনটি ডাকাতিও করে আরিফ। কওসর গ্রেফতার হতেই বেঙ্গালুরু ছাড়ে সে। আরিফের খোঁজে একটি গোয়েন্দা দল অসমে গিয়েছিল বলেও সূত্রের দাবি। বুদ্ধগয়ার সিসিটিভি ফুটেজে আরিফের ছবি পান তদন্তকারীরা।
খাগড়াগড় কাণ্ডের পর থেকেই বেপাত্তা ছিল কওসর। গত অগস্টে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) বেঙ্গালুরু থেকে তাকে গ্রেফতার করে। প্রথম দফায় এনআইএ হেফাজতে থাকার পরে ডিসেম্বরে এসটিএফ ওই জঙ্গিকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
এসটিএফ সূত্রের খবর, গত বছরের গোড়ায় ফরাক্কা থেকে পয়গম্বর সহ পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতারের পরে জানা যায়, এ রাজ্যে নব্য জেএমবি নাম দিয়ে নতুন সংগঠন তৈরি করা হয়েছে। ওই তদন্তেই আরিফের নাম জানতে পারেন গোয়েন্দারা। সরকারি কৌঁসুলি অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালত আরিফকে ২ মার্চ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। গোয়েন্দারা বলছেন, খাগড়াগড় কাণ্ডে বা অন্য কোনও ষড়যন্ত্রে আরিফ যুক্ত কি না, তাও দেখা হবে। অসম পুলিশের এক কর্তা জানান, তাঁরা আরিফকে জেরা করতে কলকাতায় আসতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy