রাজীব কুমার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেলেন রাজীব কুমার। সারদা মামলার তদন্তে গ্রেফতার না হওয়ার যে রক্ষাকবচ তাঁকে দিয়েছিল, তা শুক্রবার প্রত্যাহার করে নিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে আগামী সাতদিন রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করার মত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না সিবিআই। অর্থাত্ আরও এক সপ্তাহ শীর্ষ আদালতের রক্ষাকবচ বজায় থাকবে।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ জানায়, মামলার প্রয়োজনে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে সিবিআই। তবে তার অর্থ এই নয় যে, রাজীব কুমারকে সরাসরি গ্রেফতারের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর অর্থ, রাজীব কুমারকে গ্রেফতার বা হেফাজতে নিয়ে জেরার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কোনও বাধা রইল না। পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রায়দানের সময় উল্লেখ করেন, রাজীব কুমারও আইনি সুরক্ষা পেতে সাত দিন সময় পাবেন। আইনজ্ঞদের মতে, আইনি সুরক্ষা বলতে এখানে আদালত আগাম জামিনের কথাই বুঝিয়েছে। রাজীব কুমারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন,‘‘ সিবিআই রাজীব কুমারকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আর্জি জানিয়েছিল। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি। রাজীব কুমারকে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে উপযুক্ত আদালতে আইনি সুরক্ষা পাওয়ার জন্য। ওই সাতদিন সিবিআই গ্রেফতার বা হেফাজতে নিতে পারবে না রাজীব কুমারকে।”
আইনজ্ঞদের মতে, সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি রাজীব কুমারকে গ্রেফতারের নির্দেশ না দিলেও, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার দিয়েছে। এর অর্থই রাজীব কুমারকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না সিবিআইয়ের।
আরও পড়ুন: শেষ দফার ভোট ছ’মাস বন্ধ রাখতে চেয়েছিলেন বিশেষ পর্যবেক্ষকরা
সারদা মামলায় রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশ সিবিআইয়ের অসহযোগিতা করছে বলে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিল সিবিআই। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে সিবিআই অভিযোগ করেছিল, সারদা তদন্তে রাজ্য সরকার গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল(সিট)-র অন্যতম প্রধান আধিকারিক রাজীব কুমার এই মামলার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি ও তথ্য লোপাট এবং বিকৃত করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বারবার সমন পাঠালেও তিনি আসেননি।
আরও পড়ুন: মূর্তি-মান টক্করে মোদী-দিদি তরজা, এ বার শুরু মূর্তি গড়ার রাজনীতি
সিবিআইয়ের এই সওয়াল শুনে রাজীব কুমারকে শিলংয়ে তদন্তকারীদের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু সেই সঙ্গে রাজীবকে গ্রেফতারির রক্ষাকবচও দেয় শীর্ষ আদালত। শিলংয়ে যাওয়ার আগেই শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না।
শিলংয়ে টানা পাঁচ দিন জেরা করা হয় রাজীব কুমারকে। তার সম্পূর্ণ রিপোর্ট একটি মুখবন্ধ খামে শীর্ষ আদালতে জমা দিয়েছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, ওই রিপোর্টে রাজীবের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্ট পড়ে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন ‘অত্যন্ত গুরুতর’। রাজ্যের এই শীর্ষ কর্তা যে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও অত্যন্ত অসহযোগিতা করেছেন, সে তথ্যও সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল সিবিআই। এরপরই সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আর্জি জানানো হয়, তদন্তের প্রয়োজনে অবিলম্বে রাজীব কুমারকে হেফাজতে নেওয়া দরকার। সিবিআইয়ের আর্জি শুনে সুপ্রিম কোর্ট রাজীব কুমার এবং রাজ্য সরকারকেও পাল্টা হলফনামা পেশ করার সুযোগ দেয়। ৩ মে এই নিয়ে দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সে দিন রায়দান স্থগিত রেখেছিল। শুক্রবার সেই মামলারই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy