Advertisement
E-Paper

শুরুতেই হোঁচট! ১২ ঘণ্টার মধ্যে বালিগঞ্জ বিধানসভার কেন্দ্রের প্রার্থী নিশাকে তুলে নিলেন হুমায়ুন, কারণ কী?

নিশা চট্টোপাধ্যায় নামে এক মহিলাকে কলকাতার বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিলেন জনতা উন্নয়ন পার্টির প্রধান হুমায়ুন কবীর। রাতারাতি সেই নিশার নাম প্রত্যাহারও করে নিলেন হুমায়ুন। কারণ?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:৩৭
Humayun Kabir

নিশা চট্টোপাধ্যায়। এঁকে বালিগঞ্জ বিধানসভা থেকে প্রার্থী করেছিলেন হুমায়ুন কবীর। ছবি সৌজন্য: নিশার সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট।

সৌদির ‘ক্কারী’ (ধর্মগুরু) দিয়ে শুরু। হায়দরাবাদি বাউন্সার হয়ে এ বার প্রার্থী নিয়েও হোঁচট খেলেন হুমায়ুন কবীর। নতুন দল তৈরির ১২ ঘণ্টার মধ্যে নয় প্রার্থীর মধ্যে একজনের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন তিনি। কারণ? সমাজমাধ্যমে নাকি ‘বড্ড খোলামেলা’ বালিগঞ্জ কেন্দ্রের ঘোষিত প্রার্থী নিশা চট্টোপাধ্যায়। তাই এক রাত কাটতেই কলকাতাবাসী ওই মহিলা জনতা উন্নয়ন পার্টি (জেইউপি)-র প্রার্থী হচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিলেন প্রতিষ্ঠাতা হুমায়ুন।

গত সোমবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থেকে নতুন দল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দশটি বিধানসভা কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নিশা। তাঁকে বালিগঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থী করবেন বলে জানিয়ে দেন হুমায়ুন। মঞ্চে পাশপাশি দাঁড়িয়ে ছবিও তোলেন। নিশা জানান, রাজনীতির ময়দানে তিনি নতুন। এত দিন জনসেবামূলক কাজকর্মে যুক্ত ছিলেন। ‘পরিবারের বন্ধু’ হুমায়ুন তাঁকে রাজনীতিতে আহ্বান করেছিলেন। তবে তিনি ভাবতেই পারেননি যে তাঁকে বিধানসভা ভোটের প্রার্থী করে দেবেন বিধায়ক।

অন্য দিকে, হুমায়ুন নিশাকে বিধানসভা ভোটের প্রার্থী বলে ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমাজমাধ্যমে ওই মহিলার বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। সে সব দেখেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছেন হুমায়ুন। তাঁর কথায়, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঁর অঙ্গভঙ্গি ভাল নয়। বিধানসভার মতো পবিত্র জায়গায় এঁরা অযোগ্য। সাত দিনের মধ্যে বালিগঞ্জে কোনও মুসলিম প্রার্থীর নাম জানিয়ে দেব।’’

প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা এবং প্রত্যাহার করা এই দুটোই হুমায়ুনের হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন নিশা। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রার্থী হওয়ার জন্য তো আগ বাড়িয়ে ওঁর কাছে আবেদন করিনি। উনি নিজে থেকেই আমাকে প্রার্থী করেছিলেন। ঠিক একই কায়দায় প্রার্থিপদ বাতিল করলেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার মনে হয়, মহিলাদের আচরণ ও স্বাধীনতা নিয়ে সেন্সরশিপ করার অধিকার কারও নেই।’’ নিশা জানান, তিনি দুঃখিত, তবে মর্মাহত হননি।

প্রসঙ্গত, বালিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছেন। ওই বিধানসভার বিধায়ক ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রয়াণে আসনটি খালি হওয়ার পরে উপনির্বাচনে তৃণমূল বাবুল সুপ্রিয়কে সেখানে প্রার্থী করেছিল। তবে সুব্রতের চেয়ে বাবুলের জয়ের ব্যবধান অনেকটাই কমে গিয়েছিল। বাবুলের বিরুদ্ধে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন সায়রা শাহ হালিম। বিজেপির প্রার্থী ছিলেন কেয়া ঘোষ। উপনির্বাচনে সায়রা দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। মনে করা হয়, সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার ফলেই তিনি দ্বিতীয় হয়ে লড়াই শেষ করতে পেরেছিলেন। ফলে সেই কেন্দ্রের জন্য হুমায়ুন যখন চট্টোপাধ্যায় পদবিযুক্ত নিশার নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন, তখনই বিষয়টি নিয়ে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। তৃণমূলের অনেকে ঠারেঠোরে বলতে শুরু করেছিলেন যে, নিশাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, হুমায়ুন ‘ভোটের জমি’ ঠিকঠাক বুঝতে পারেন না। তবে ১২ ঘন্টার মধ্যেই হুমায়ুন সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেছেন। বলেওছেন, বালিগঞ্জে সংখ্যালঘু প্রার্থী দেবেন। এখন দেখার, নিশার জায়গায় কোন সংখ্যালঘু মুখ নিয়ে হুমায়ুন বালিগঞ্জে ভোট লড়তে নামেন।

হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, বাবরি মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই নানা ভাবে ‘অপদস্থ’ করার চেষ্টা করা হচ্ছে হুমায়ুনকে। কিন্তু তিনি ঠেকে শিখছেন। এক হুমায়ুন-ঘনিষ্ঠের কথায়, ‘‘এর আগে সৌদি থেকে অতিথি ইমাম আনা নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। পরে জানা যায়, তাঁরা স্থানীয়। তার পর অন্য কিউআর কোড দিয়ে মসজিদের অনুদান সরানোর চেষ্টা হয়। এমনকি, হায়দরাবাদের বাউন্সার বলে এখানকার নিরাপত্তারক্ষীরা হুমায়ুন ভাইয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে এসেছিলেন। আসলে বড় কাজে নামলে নানা বাধা আসবে। এটাও (নিশাবৃত্তান্ত) তেমনই একটা ঘটনা।’’

Humayun Kabir candidate WB Assembly pole
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy