আদালতে শঙ্কর। নিজস্ব চিত্র
স্বরূপগঞ্জের যুবক কৃষ্ণ দেবনাথের খুনের আট দিনের মাথায় ধরা পড়ল তিন অভিযুক্তের অন্যতম শঙ্কর দেবনাথ। বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এ দিনই নবদ্বীপ বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করানো হলে তাকে চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি দুই অভিযুক্ত এখনও অধরা।
কৃষ্ণ ‘জয় শ্রীরাম’ বলায় তৃণমূল সমর্থকেরা তাঁকে খুন করেছে দাবি করে পরপর দু’দিন নবদ্বীপ অশান্ত করে তুলেছিল বিজেপি। মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করা থেকে বন্ধের পরিস্থিতি তৈরি করা, কিছুই বাদ রাখেনি তারা। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছিল, কৃষ্ণের অপমৃত্যুর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। মত্ত অবস্থায় গন্ডগোলের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
পুলিশের দাবি, জেরায় শঙ্কর খুনে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তার কথা অনুযায়ী: রাতে মদ্যপান করে কৃষ্ণ বেসামাল হয়ে পড়েছিলেন। গাদিগাছা লিডার্স ক্লাবের সামনে হই-হুল্লোড় করছিলেন তিনি, গাড়ি চলাচলে বাধা দিচ্ছিলেন। এই নিয়ে শুরু হয় বচসা এবং শেষে মারধর। সেই সময়েই কৃষ্ণ রাস্তায় ধারে জড়ো করা স্টোন চিপসের উপর পড়ে গিয়ে মাথায় মারাত্মক চোট পান এবং সেই আঘাতেই পরের দিন তাঁর মৃত্যু হয়।
গত ৩ জুলাই, প্রায় দেড় বছর পরে চেন্নাইয়ের কর্মস্থল থেকে ফিরেছিলেন হোটেলের শেফ কৃষ্ণ দেবনাথ। ওই রাতেই স্বরূপগঞ্জের গাদিগাছা অঞ্চলে একটি ক্লাবের সামনে থেকে জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন এলাকার মানুষ। কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হলেও পরের দিন তাঁর মৃত্যু হয়। ওই রাতেই তাঁর মা শেফালি দেবনাথ নবদ্বীপ থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
শেফালির অভিযোগ, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ, শঙ্কর দেবনাথ এবং গোবিন্দ দেবনাথ তাঁর ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। সকলে ওই পাড়ারই বাসিন্দা, ইন্দ্রজিৎ আত্মীয়ও। রাজনৈতিক কারণে খুনের অভিযোগ ছিল না। কিন্তু গত শনিবার মৃতদেহ কলকাতা থেকে স্বরূপগঞ্জে আসতেই বিজেপি আন্দোলনে নেমে পড়ে। বিজেপির দাবি সমর্থন করে কৃষ্ণের বাবা পাণ্ডব দেবনাথ বলেছিলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের কথা জানিয়ে তিনি ফের নতুন করে অভিযোগ করবেন। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। শঙ্করের বয়ান বিষয়টি স্পষ্ট করবে বলে পুলিশের অনুমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy