ছবি: পিটিআই
প্রায় সাড়ে সাত মাস পরে আজ, বুধবার দিনের আলো ফোটার অনেক আগেই লোকাল ট্রেনের চাকা গড়াতে শুরু করবে। নিখুঁত ভাবে সেই কর্মকাণ্ড উতরে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার রেল, পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে তুঙ্গ তৎপরতা দেখা গেল। সকালে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্টেশনে ‘ট্রায়াল রান’ বা দৌড়ের মহড়া দেয় কিছু লোকাল ট্রেন। অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দুই মূল কৌশল হল ভিড় নিয়ন্ত্রণ আর সুরক্ষা বিধি মেনে চলা। আরপিএফ, জিআরপি এবং রাজ্য পুলিশ সমন্বয় রেখে এই দু’টি কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার গুরুত্বপূর্ণ সব স্টেশনের সঙ্গে বাস যোগাযোগ মসৃণ করতে তৎপর হয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
এ দিন চূড়ান্ত পর্বে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনের প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন দুই রেল ডিভিশনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। হাওড়ায় ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার ইশাক খান জানান, যাত্রীদের মাস্ক বা মুখাবরণ পরা এবং স্যানিটাইজ়ার বা হাতশুদ্ধি ব্যবহার বাধ্যতামূলক। যাত্রীদের জন্য স্টেশনের স্টলে মুখাবরণ ও হাতশুদ্ধি বিক্রি করছে রেল। ট্রেনে ওঠার আগে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং বা শারীরিক তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। এক থেকে সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহৃত হবে লোকাল ট্রেনের জন্য। নিউ কমপ্লেক্সের ১৫-১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকেও চলবে লোকাল ট্রেন।
করোনা-সতর্কতায় একই ধরনের ব্যবস্থা থাকছে শিয়ালদহ স্টেশনে। হকারদের আপাতত স্টেশনে ঢোকা বারণ। যাত্রীদের সচেতন করতে অডিয়ো এবং ভিডিয়ো বার্তার সাহায্য নিচ্ছে রেল। নদিয়ায় স্টেশনের বাইরে সিভিক ভলান্টিয়ারেরাও ভিড় নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবেন। মুর্শিদাবাদের বহরমপুর স্টেশনে যাত্রীদের জন্য রাখা হচ্ছে তরল সাবান। স্টেশন-চত্বরে দূরত্ব-বিধি মেনে চলার জন্য গোল দাগ দেওয়ার এ দিন নানা ভাবে এলাকা চিহ্নিত করার কাজও হয়েছে পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া গ্রামীণ এবং হুগলির বিভিন্ন স্টেশনে। স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসন ও রেলের কর্তারা বিভিন্ন স্টেশন ঘুরে দেখেন। টিকিট কাউন্টারগুলিতে মাসিক টিকিট পুনর্নবীকরণের জন্য ভিড় হয় প্রচুর।
আরও পড়ুন: এফআইআরে স্থগিতাদেশ কোর্টের
কিন্তু এ দিন বিকেল পর্যন্ত খড়্গপুর স্টেশনের সাবওয়েতে ঢোকার মুখে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা ও জীবাণুমুক্ত করার প্রস্তুতি দেখা যায়নি। রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার (খড়্গপুর) আদিত্য চৌধুরী অবশ্য বলেন, “প্রস্তুতি শেষ।” খড়্গপুর স্টেশনের ডিরেক্টর সোনালি পাড়ুয়া বলেন, “ট্রেনে বেশি লোক উঠতে চাইলে পুলিশ এবং আরপিএফ নিয়ন্ত্রণ করবে।” কিন্তু তাতে অশান্তির আশঙ্কা করছে নিত্যযাত্রীদের বিভিন্ন সংগঠন।
আরও পড়ুন: আগুন ঘিরে উত্তাপ তৃণমূলে
পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো জেলায় আপাতত লোকাল ট্রেন চালানো হচ্ছে না। এই নিয়ে আদ্রা ডিভিশনের কয়েকটি স্টেশনে এ দিন বিক্ষোভ দেখায় বামফ্রন্ট। আদ্রায় ডিআরএমের কাছে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু করার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে সিপিএম। একই দাবিতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার ও রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। ট্রেন বাড়ানো এবং হকারদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতায় পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি দিয়েছেন এসইউসি-র রাজ্য কমিটির সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর স্মারকলিপি দিয়েছে শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy