ছবি: সংগৃহীত।
গঙ্গাসাগর মেলা এখনও চূড়ান্ত না হলেও তার প্রস্তুতি শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। মেলা-প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক কর্তারা বৈঠক করেন। কোভিড ব্যবস্থাপনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের তৎপরতা রেখে প্রস্তুতি শুরু করতে বলা হয়েছে বিভিন্ন দফতর এবং জেলা প্রশাসনকে।
প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, উত্তর এবং মধ্য ভারত থেকে চলতি পরিস্থিতিতে কত মানুষ আসতে পারবেন, মেলার সময় দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা কেমন থাকবে, এত বড় জনসমাগম নিয়ে কেন্দ্রের নতুন কোনও নির্দেশিকা, অথবা এ ব্যাপারে আদালতের কোনও রায় থাকবে কি না, তা চূড়ান্ত নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আগামী জানুয়ারি মাসের মকর সংক্রান্তিতে মেলা হলে তার আয়োজনে যাতে কোনও খামতি না থাকে তা-ই নিশ্চিত করতে চাইছে প্রশাসন।
প্রাথমিক প্রস্তুতিতে বলা হয়েছে, হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশন-সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। কোভিড পরীক্ষার বন্দোবস্তের পাশাপাশি সেফ হাউজ়, নিভৃতবাস, আইসোলেশন ওয়ার্ড, কোভিড হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে হবে। পৃথক কোভিড-কন্ট্রোলরুম, টোল-ফ্রি নম্বর চালু, মাস্ক পড়া, জীবানুনাশের ব্যবস্থা, শারীরিক দূরত্ববিধি মানা এবং কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মতো বিধিগুলির কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত রাখতে হবে ওয়াটার এবং এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স-সহ সাধারণ অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাও। পাশাপাশি, মেলা-ব্যবস্থাপনায় যাঁরা নিযুক্ত থাকবেন, তাঁদের কোভিড-বিমা করানোর পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের। এই সবকিছু মাথায় রেখে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করবে স্বাস্থ্য দফতর।
চলতি বছরের পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন। কোভিড সংক্রমণের মধ্যে এই মেলা হলে সুরক্ষা-বিধি মেনে পূণ্যার্থীদের নিরাপদে গঙ্গাসাগর পৌঁছে দেওয়া বেশ কঠিন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, অন্যান্য বছর ১৫-২০ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয় ওই মেলায়। মেলার মূল সময়ের আগে থেকেই পূণ্যার্থীদের আসা শুরু হওয়ায় উট্রাম ঘাটে তাঁদের জন্য বন্দোবস্ত করে রাজ্য। সেখান থেকে হয় কাকদ্বীপ-৮ নম্বর লট-কচুবেড়িয়া অথবা নামখানা-চেমাগুড়ি হয়ে গঙ্গাসাগরে যান তাঁরা। ফলে প্রচুর বাস এবং লঞ্চের ব্যবস্থা রাখতে হয় প্রশাসনকে। কোভিড-পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বাস-লঞ্চের সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে। গোটা ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশকর্মী মোতায়েন ছাড়াও সি সি ক্যামেরা, ড্রোন, ক্যুইক রেসপন্স টিমের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
নাব্যতা বাড়াতে ড্রেজিং, দুর্বল জেটিগুলি মেরামত করা, রাস্তা সংস্কারের নির্দেশ জেলাপ্রশাসনকে দিয়েছে রাজ্য। আমপানের সময় সাগর সৈকতে হওয়া ক্ষত মেরামতের কাজও দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ, বিপর্যয় মোকাবিলা, পরিবেশ রক্ষা, অগ্নিনির্বাপণের মতো বিষয়গুলিতেও নিখুঁত রূপরেখা তৈরি করে জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে নবান্ন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সচিবপর্যায়ের একটি দল সরেজমিনে খতিয়ে দেখে প্রস্তুতির পর্যালোচনা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy