অমিত সিংহ। নিজস্ব চিত্র
ফি রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়াই ছিল নেশা। পাঁচ বন্ধুর দল পাড়ি দিত কাছে কিংবা দূরে। বছর খানেক আগে বেশ দামি ৩৯০ সিসি-র একটি বাইকও কিনেছিলেন উলুবেড়িয়ার যদুবেড়িয়া গ্রামের যুবক অমিত সিংহ (২৯)। সেই বাইকই দাঁড়ি টেনে দিল তাঁর জীবন সফরে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার ৭টা নাগাদ খুড়তুতো ভাই সুমিত সিংহকে নিয়ে বাইকে বেরিয়ে পড়েছিলেন অমিত। গন্তব্য পশ্চিম মেদিনীপুরের গনগনি। বাগনানে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন রঞ্জন দে, সৈকত দে ও মীর নাজিবুল। কোলাঘাটে জলখাবার সেরে ফের ঝড়ের গতিতে বাইক চালিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরেন অমিতরা। সকাল ১০টা নাগাদ পাঁশকুড়ার মঙ্গলদাড়িতে ভেড়িবাঁধ এলাকায় বাইক নিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় বাস কন্ডাক্টর উত্তম সামন্ত। প্রচণ্ড জোরে আসা অমিতের বাইকের সামনে পড়ে যান তিনি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অমিতের বাইক সজোরে ধাক্কা মারে উত্তমের বাইকে। দু’জনেই ছিটকে পড়েন ডিভাইডারের ওপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অমিতের। আহত উত্তমকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বাড়ি অমিতের। বাড়ি লাগোয়া গাড়ির টায়ারের শোরুম। অমিত নিজেও ব্যবসা করতেন। মাস তিনেক হল বিয়ে করেছিলেন তিনি। এ দিন অমিতের সঙ্গী, খুড়তুতো ভাই সুমিত বলেন, ‘‘প্রতি রবিবার আমরা বাইক নিয়ে দূরে দূরে যাই। সব বাইকই জোরে ছুটছিল। কী করে এমনটা ঘটে গেল বুঝতে পারছি না।’’
প্রত্যক্ষদর্শী সুজিত সামন্তের কথায়, ‘‘পাঁচটি বাইক পাঁশকুড়ার দিক থেকে প্রচণ্ড জোরে ছুটে আসছিল। ওই কন্ডাক্টর রাস্তা পেরোনোর সময় পাঁচটা বাইকের একটা ওঁকে জোরে ধাক্কা মারে।’’ খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে যায় পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। উদ্ধার করা হয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত দু’টি বাইকই। পৌঁছে যান পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ডিএসপি ট্রাফিক আমিনুল ইসলাম।
কিছু দিন আগে মুম্বই রোডেই প্রচণ্ড জোরে বিদেশি গাড়ি নিয়ে ‘রেস’ করতে গিয়ে মৃত্যু হয় কলকাতার এক ব্যবসায়ীর। সেটাও ছিল এক রবিবার। অভিযোগ, রবিবার কিংবা ছুটির দিনে মুম্বই রোডে বাইক, গাড়ি নিয়ে অনেকে ‘রেস’ করতে নামেন। এতে দুর্ঘটনা আশঙ্কা বাড়ে।
পাঁশকুড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, অমিতের মাথায় হেলমেট থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে মৃত্যু হয়েছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে বাইকগুলি কতটা জোরে চলছিল। আগামী দিনে এ ক্ষেত্রে আরও কড়া নজরদারি চালানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy