Advertisement
E-Paper

ত্রিবেণী

একসঙ্গে এই প্রথম রূপা-ইন্দ্রাণী-ঋতুপর্ণা। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্তএকসঙ্গে এই প্রথম রূপা-ইন্দ্রাণী-ঋতুপর্ণা। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০০

চল্লিশ পেরোলেই... না, না, চালসে নয়। চল্লিশ পেরোলেই... জীবন শুরু...

এমনই এক বিষয়কে কেন্দ্র করে শুরু হচ্ছে তিন অভিনেত্রীকে নিয়ে ছবি। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, ইন্দ্রাণী হালদার আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এই প্রথম ছবিতে তাঁরা একসঙ্গে। ছবির নাম ‘আরও একবার’।

এক সময় তো বলা হত তিন নায়িকা এক ছবিতে থাকা মানে অন্ধকার ঘরে তিন বাঘিনি ছেড়ে দেওয়ার মতো। কেউ রক্তাক্ত না হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না! ‘‘আগে হয়তো ওই রকম হত। কিন্তু আমি সেটা দেখিনি,’’ বলছেন ঋতুপর্ণা। ইন্দ্রাণী আর রূপার বিশ্বাস যে কোনও সমস্যা হবে না। ‘‘তিন জনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। আমাদের ধারণা সেটে মজা হবে।’’

নারীকেন্দ্রিক ছবি। একটা বয়সের পর, কেরিয়ার-সংসার সামলেও মেয়েরা অনেকেই একাকীত্বে ভোগেন। তখন প্রয়োজন হয় এমন কিছু বন্ধুর যাদের সঙ্গে নির্দ্বিধায় সখ্য তৈরি করা যায়। প্রায় দু’‌শোটা টেলিফিল্ম পরিচালনা করার পরে এই ছবি দিয়েই প্রথম ফিচার ফিল্ম পরিচালনায় হাতেখড়ি হচ্ছে অরিজিৎ হালদারের। সুরকার স্মৃতি লালা। তাঁরই উদ্যোগে আকাশ চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় তিন বন্ধুকে কেন্দ্র করে গল্পটা লিখেছেন সর্বজিৎ চক্রবর্তী। একই ক্লাসের ছাত্রী না হয়েও এরা বন্ধু। মধ্যবয়সে তাদের জীবনে একটা ‘ক্রাইসিস’ তৈরি হয়।

রাজনীতিতে আসার পরেও এই ছবিকে নিয়ে রূপার হাতে এখন পাঁচখানা ফিল্ম। সময় বার করবেন কী করে এত কাজ করার? ‘‘আগে বছরে তিন-চারটে ছবি করতাম। এখন সংখ্যায় একটা বেড়েছে। এগুলো সই করেছিলাম রাজনীতিতে আসার আগে। তাই সময় বার করতেই হবে,’’ উত্তরে বলছেন রূপা। এর আগেও ‘নয়নচাঁপার দিনরাত্রি’‌তে তিন অভিনেত্রীকেন্দ্রিক ছবি করেছেন। কিন্তু ‘আরও একবার’‌য়ে চ্যালে়ঞ্জটা অন্য রকম। এখানে তাঁর সঙ্গে থাকছেন দুই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী। ‘‘আমরা তিনজন তিন রকম স্টাইলে অভিনয় করি। ছবিতে চরিত্রগুলো সেভাবেই স্বতন্ত্র। অভিনেত্রী হিসেবে ইন্দ্রাণীর সব দিকে নজর থাকে। আর ঋতু হুল্লোড়ে, প্যাঁচঘোঁচ নেই। কমপ্লিকেটেড নয়,’’ বলছেন রূপা। ফিল্মে রূপা এক গৃহবধূর ভূমিকায়। স্বামী, ছেলেকে নিয়ে তাঁর জীবন।

এর আগে রূপার সঙ্গে ‘পিয়ালির পাসওয়ার্ড’ করেছেন ঋতুপর্ণা। এ ছাড়াও ‘মায়ের রাজা’ বলে একটা বাণিজ্যিক ছবি করেছেন একসঙ্গে। বলছেন, ‘‘রূপাদির মধ্যে সফিস্টেকেশন রয়েছে। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। ভাল নেত্রী। জীবন আর কেরিয়ারে কী সব সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে! ইন্দ্রাণীর সঙ্গে শেষ কাজ করেছি ‘দহন’-এ। ও খুব সেন্সিটিভ অভিনেত্রী। কত এক্সপেরিমেন্ট করেছে। বোম্বে-তে নামী প্রোডাকশন হাউজে গিয়ে কী ভাল সিরিয়াল করেছে। দেখিয়ে দিয়েছে ন্যাশনাল টেলিভিশনে বাঙালি অভিনেত্রীরা কী দাপটের সঙ্গে অভিনয় করতে পারে।’’


ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত


রূপা গঙ্গোপাধ্যায়


ইন্দ্রাণী হালদার

ছবিতে ঋতুর চরিত্রের নাম ঝুমুর। ‘‘রূপাদি আর ইন্দ্রাণীর চরিত্রের থেকে ঝুমুর বেশ খানিকটা ছোট। ডিভোর্সের পরেও তাঁর জীবনে প্রেম আসে,’’ বলছেন ঋতুপর্ণা।

ইন্দ্রাণী এক চল্লিশোর্ধ্ব মহিলার ভূমিকায়। ‘‘সবে স্বামীকে হারিয়ে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে মেয়েকে আঁকড়ে ধরেই আমার জীবন। বিধবার চরিত্র, কিন্তু ‘গ্ল্যামারাস’। সেই রকম হলে এই চরিত্র করতে মোটেই রাজি হতাম না,’’ হেসে বলছেন ইন্দ্রাণী।

তিনি রূপা আর ঋতুপর্ণার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ‘‘রূপাদি আমাদের দু’জনের থেকে অনেক বেশি ইনভলভড। আর ঋতু সবার থেকে বেশি হুল্লোড়বাজ। আমি তো অনেক বছর এখানে ছিলাম না। ও এখানে আঁকড়ে পড়ে থেকেছে। জুটি থাকুক না থাকুক নিজস্ব বাজার তৈরি করে কাজ করে চলেছে,’’ বলছেন ইন্দ্রাণী।

ছবিতে নাকি সংলাপও এমন ভাবে লেখা হয়েছে যাতে‌ হুল্লোড়ের কোনও খামতি না থাকে। সেটা বোঝাতে গিয়ে ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘ছবিতে একটা জায়গায় রূপা আর আমি মিলে ঋতুকে জিজ্ঞাসা করি, ‘এই ছেলেটা পটাতে পারবি?’ উত্তরে ঋতু চ্যালেঞ্জ তুলে নিয়ে বলবে, ‘নিশ্চয়ই। মনে নেই কলেজে কী রকম বলে বলে ছেলে তুলতাম?’ পঁয়তাল্লিশটা লোকেশন, কালিম্পংয়ে আউটডোর। আমার ধারণা মজা করে কাজ হবে।’’

বিশ্বাস করতে বলছেন যে সদ্ভাব থাকবেই? কোনও মান-অভিমান হবে না? ‘‘এই তো একটা অনসম্বল কাস্টের ছবি করলাম। কোনও সমস্যা হয়নি। নায়িকারা একসঙ্গে কাজ করলে এক ইঞ্চি জমিও কেউ ছাড়ে না। আর সেটাই পেশাদারিত্ব,’’ বলছেন ঋতু।

তার মানে কেউ আব্দার করবেন না যে পোস্টারে তাঁরই ছবিটা বড় করে ছাপা উচিত? ‘‘আমি আমার চরিত্র ছাড়া কিছু বুঝি না। পোস্টারে নাম নিয়ে ভাবি না। এটা আমার এক্তিয়ারে পড়ে না। গর্বের সঙ্গে বলব, এ ছবিতে ঋতুপর্ণা স্টার। ইন্দ্রাণী আর আমি অ্যাকট্রেস। ওরা দু’জনেই আমার থেকে বয়সে ছোট। আমার চিন্তা কী করে ওদের মতো আমাকেও স্লিম-ট্রিম দেখতে লাগবে,’’ বলছেন রূপা।

আর পরিচালক? শ্যুটিংয়ের আগে তিনি কি জীবনবিমা করেছেন? ‘‘এই প্রজন্মের নায়িকাদের নিয়ে কাজ করতে গেলে হয়তো জীবনবিমা লাগত। কিন্তু এ রকম সিরিয়াস আর অভিজ্ঞ অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করছি বলে জানি ওরাই আমাকে ‘ইনশিওর’ করবে,’’ বলছেন অরিজিৎ।

ফেব্রুয়ারি থেকে শ্যুটিং শুরু হলেই বোঝা যাবে রক্ষাকবচ কতটা কাজ করছে!

priyanka dasgupta indrani halder rituparna sengupta rupa ganguli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy