ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ইতি পড়লেও তীব্র হচ্ছে ‘সাইবার যুদ্ধ’! এ দেশের নাগরিক ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করতে বিশেষ একটি কম্পিউটার-ভাইরাস ব্যবহার করছে ইসলামাবাদের হ্যাকারেরা। তাঁদের মূল লক্ষ্য হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ভাইরাসটিকে সকলের মোবাইল ফোনে ঢুকিয়ে দেওয়া। তার পর ফোনের সফ্টঅয়্যার হ্যাক করে সেখান থেকে যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে চাইছে পাক হ্যাকারেরা।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ‘সাইবার যুদ্ধ’-এ ব্যবহার হওয়া ওই অস্ত্রটির নাম ‘দ্য ডান্স অফ দ্য হিলারি ভাইরাস’। এর সম্পর্কে আমজনতাকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে সরকার। হোয়াট্সঅ্যাপে ভিডিয়ো শেয়ার করার সময় মোবাইল ফোনের সফট্অয়্যারে হানা দিতে পারে ওই ভাইরাস। এ ছাড়া ট্যাবলেট, ল্যাপটপ এবং কম্পিউটার হ্যাক করতেও পাকিস্তানের সাইবার অপরাধীদের অস্ত্র ‘হিলারি নৃত্য’ বলে জানা গিয়েছে।
কী ভাবে এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে হবে, ইতিমধ্যেই তার গাইডলাইন সরকারি তরফে দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাক হ্যাকারেরা সাধারণত একটি সহজ পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। সেটা হল, চাকরির টোপ দিয়ে ইমেল পাঠানো। ওই বার্তার মধ্যে থাকে একটি লিঙ্ক। তাতে ক্লিক করলেই ম্যালঅয়্যারটিকে গ্রাহকের মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের সফ্টঅয়্যারে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছেন তাঁরা।
সেই কারণে এই ধরনের ভুয়ো ইমেল থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং গোয়েন্দারা। শুধু তা-ই নয়, গুরুত্বপূর্ণ নথির ‘ব্যাক-আপ’, অর্থাৎ অন্যত্র সরিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি, হোয়াট্সঅ্যাপ এবং টেলিগ্রামের মতো সমাজমাধ্যম অ্যাপগুলিতে অটোমেটিক ডাউনলোড অপশনটিকে বন্ধ রাখার পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।
এ ছাড়া +৯২ নম্বর থেকে আসা কোনও ফোন কল বা হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। অপরিচিতদের মোবাইল নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। উল্লেখ্য, গত ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত সংঘাত চলাকালীন ভারতীয় সেনার পরিচয় দিয়ে এ দেশের সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষকে ফোন করার অভিযোগ ওঠে পাক গুপ্তচরদের বিরুদ্ধে। এর জন্য ৭৩৪০৯২১৭০২ নম্বরটি তাঁরা ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। মোবাইলের ফোন নম্বর শনাক্তকরণকারী অ্যাপে নম্বরটিকে ‘ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট’ বলে দেখা গিয়েছে। আর তাই এই নম্বরটি নিয়েও সতর্ক করেছে কেন্দ্র।