বুলেট ট্রেনের পর এ বার ইন্টারনেট। ফের গতির ঝড়ে সবাইকে পিছনে ফেলল জাপান! নেটস্পিডে বিশ্বরেকর্ড করেছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দ্বীপরাষ্ট্র। টোকিয়োর ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি’ বা এনআইসিটি জানিয়েছে, ইন্টারনেটের গতিকে সেকেন্ডে ১.০২ পেটাবিটসে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন সেখানকার প্রযুক্তিবিদেরা।
জাপানের নেটস্পিড কতটা বেড়েছে, তা একটা উদাহরণের সাহায্যে বুঝে নেওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ইন্টারনেটের এই গতি থাকলে জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘নেটফ্লিক্স’-এর সংগ্রহশালায় থাকা সমস্ত সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ়কে মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যে ডাউনলোড করতে পারবেন গ্রাহক। আবার ইংরেজি ভাষায় থাকা ‘উইকিপিডিয়া’ তথ্যভান্ডারটিকে সেকেন্ডে অন্তত হাজার বার ডাউনলোড করা যাবে।
বর্তমানে ভারতে ইন্টারনেটের গড় গতিবেগ ৬৩.৫৫ এমবিপিএস। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, নেটস্পিডকে এর ১ কোটি ৬০ লক্ষ গুণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে জাপান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে গতিবেগ ৩৫ লক্ষ গুণ বেশি বলে জানা গিয়েছে। ইন্টারনেটে গতির ঝড় তোলার পর এই ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছে এনআইসিটি। সেখানে জাপানি সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ছিল বর্তমান পরিকাঠামো ব্যবহার করে লম্বা দূরত্বে বুলেট গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া। সেখানে ১০০ শতাংশ সাফল্য পাওয়া গিয়েছে।’’
ইন্টারনেটকে উচ্চ গতির করে তোলার ষোলো আনা কৃতিত্ব এনআইসিটির ‘ফোটোনিক নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরি’র। এই কাজে সুমিতোমো ইলেকট্রিক এবং ইউরোপীয় গবেষকদের সাহায্য পেয়েছিল তারা। সূত্রের খবর, ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে ১৯ কোর বিশিষ্ট বিশেষ অপটিক্যাল ফাইবারের তৈরি তার ব্যবহার করেন জাপানি প্রযুক্তিবিদেরা। এর সাহায্যে ১,৮০৮ কিলোমিটার জুড়ে তথ্য পাঠাতে সক্ষম হন তাঁরা।
বর্তমানে ইন্টারনেট পরিষেবা সচল রাখতে ০.১২৫ মিলিমিটার পুরু তার ব্যবহার করা হয়। হাইস্পিড ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও এই দিক থেকে কোনও বদল করেনি প্রশান্ত মহাসাগরীয় ওই দ্বীপরাষ্ট্র। এনআইসিটি জানিয়েছে, গতি পরীক্ষার সময়ে ১৯টি লুপের মধ্যে দিয়ে সঙ্কেত পাঠানো হয়েছিল। প্রতিটির দৈর্ঘ্য ছিল ৮৬.১ কিলোমিটার। মোট ২১ বার এ ভাবে সঙ্কেত প্রেরণ করেন গবেষকেরা। ফলে ১৮০টি আলাদা আলাদা ডেটা স্ট্রিমকে ১,৮০৮ কিমি দূরত্বে সফল ভাবে পাঠানো গিয়েছিল।