যা এতদিন দেখেছেন টিভি চ্যানেলে কিংবা কোনও রিলে, তা-ই এবার চাক্ষুষ করতে পারবেন নিজে। জলের ঢেউয়ের তালে খেলে বেড়াচ্ছে ডলফিন। এই উঠছে, নিমেষে ডুবে যাচ্ছে।এ এক মজার ব্যাপার। এই দেখা যায় এদিকে, পরক্ষণেই রব ওঠে— ওই যে ওইদিকে।
আরও পড়ুন:
সামুদ্রিক ডলফিনও বহু দিন হল পর্যটনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। ভারতের নানা প্রান্তে এমন অনেক স্থান আছে যেখানে ডলফিন দেখানোর বন্দোবস্ত থাকে। ডলফিনকে কেন্দ্র করেই পর্যটনের প্রসার ঘটেছে। এই শীতে যদি ডলফিনের লম্ফঝম্ফ দেখতে হয়, তা হলে এই বেলা বেড়ানোর পরিকল্পনা করে ফেলুন। শীতের মিঠে-কড়া রোদে পিঠ দিয়ে অতল জলে ভাসতে ভাসতে ডলফিনের ‘জিমন্যাস্টিক’ দেখার আনন্দই আলাদা।
চিলিকা
ওড়িশার চিলিকা নামে উপহ্রদটিতে ডলফিনকে কেন্দ্র করে পর্যটনের প্রসার হয়েছে। সাতপাড়া থেকে নৌকা ছাড়ে।ওড়িশার পুরী, গঞ্জাম এবং খুরদা তিন জেলাজুড়ে চিলিকার বিস্তৃতি। এটি ভারতের অন্যতম বৃহৎ উপকূলীয় উপহ্রদ। পুরীর অদূরে সাতপাড়া থেকে ডলফিন দেখার জন্য নৌকো ছাড়ে। সরকারি এবং বেসরকারি দুই ধরনের নৌকায় পাওয়া যায়। শুধু ডলফিন দর্শন নয়, এখান থেকে ঘুরে নেওয়া যায় রাজহংস দ্বীপ। শীতের দিনে এখানে পরিযায়ী পাখি উড়ে আসে।
ডলফিন দেখতে যাওয়ার জন্য সাতপাড়া থেকে টিকিট মেলে। ওড়িশা পর্যটন উন্নয়ন দফতর থেকেও নৌকা মেলে। মাথাপিছু ভাড়া দিয়ে ডলফিন পয়েন্ট ঘোরা যায়। তবে চিলিকার বুকে আরও বেশি সময় ঘুরতে হলে ব্যক্তিগত ভাবে নৌকা ভাড়া করে নেওয়াই ভাল। যতটা সম্ভব সকালের দিকে ডলফিন দেখার পরিকল্পনা করলে, দেখার সুযোগ বেশি মিলবে।
ডলফিন দেখতে যেতে পারেন চিলিকায়। ছবি:সংগৃহীত।
এ ছাড়া চিলিকার কাঁকড়াও বিখ্যাত, স্বাদে অতুলনীয়। চিলিকা ভ্রমণে এলে, কাঁকড়া, টাটকা মাছের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।
কোথায় থাকবেন?
সাতপাড়ায়, চিলিকার কাছে ওড়িশা সরকারের পান্থনিবাস বা যাত্রীনিবাস রয়েছে। এ ছাড়া একাধিক বেসরকারি হোটেল পাবেন। তবে বেশিরভাগ পর্যটক পুরীতে থেকে চিলিকা ঘুরে ফিরে যান। পুরী থেকে চিলিকা যেতে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগে।
গোয়া
গোয়ার বিভিন্ন সৈকত থেকে যন্ত্রচালিত নৌকায় করে ডলফিন দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয়। আধ ঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিটের প্যাকেজ থাকে।
মান্ডভি এবং নেরুল নদীর মোহনার কাছাকাছি কো কো বিচে ডলফিন দেখা যায়। ফোর্ট আগুয়াড়ার কাছাকাছি স্থানটিও ডলফিন দেখানোর জন্য জনপ্রিয়। এছাড়াও ক্যান্ডোলিম বিচ ও বাগা বিচ—এই সমুদ্র সৈকতগুলির কাছাকাছি থেকেও ডলফিন ট্রিপ বুক করা যায়। দক্ষিণ গোয়ার পালোলেম বিচ থেকেও ডলফিন দেখার ব্যবস্থা করা হয়। ডলফিন দেখার জন্য দিনের প্রথম ভাগ (সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা) সবচেয়ে ভালো। এই সময় সমুদ্র শান্ত থাকে এবং ডলফিনরা জলের উপর বেশি সক্রিয় থাকে।
কোথায় থাকবেন?
উত্তর গোয়া, দক্ষিণ গোয়ার বিভিন্ন সৈকতকে কেন্দ্র করে রিসর্ট, হোটেল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে।
আন্দামান
আন্দামানের একাধিক সৈকত সংলগ্ন স্থানে ডলফিনের আনাগোনা চোখে পড়ে। এমনিতে সামুদ্রিক জীবন দেখার জন্য গ্লাসবটম বোট রয়েছে। বোটে থাকা কাচের মধ্যে সমুদ্রের তলদেশের জীবজগত, মাছ, প্রবাল দেখা যায়। কখনও কখনও তার মধ্যেই চোখে পড়ে ডলফিনের আনাগানো। হ্যাভলক, নীল, নর্থ বে-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় সামুদ্রিক ডলফিন দেখার সুযোগ মেলে। নৌকো করে যাওয়ার সময় ডলফিন কখনও সামনে চলতে থাকে, কখনও তারা জলের উপর লাফিয়ে ওঠে।
কোথায় থাকবেন?
নর্থ বে ঘোরা যায় পোর্টব্লেয়ারে থেকে। এখানে একাধিক হোটেল আছে। হ্যাভলক, নীল দ্বীপেও থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল, রিসর্ট মিলবে।