বিমানে লম্বা সফর অত্যন্ত ক্লান্তিকর। ঠায় এক জায়গায় বসে থেকে ১০-১২ ঘণ্টা কাটানো মুখের কথা নয়। স্ক্রিনে পছন্দের সিনেমা দেখার, গান শোনার সুবিধা থাকে বটে, কিন্তু তা-ও একটা সময়ের পর ক্লান্তিকর হয়ে যায়।
লম্বা ট্রেনযাত্রায় মাঝেমধ্যে হকারদের হাঁকডাক, আর পাঁচজন সহযাত্রীর সঙ্গে খোশগল্প করে দিব্যি কাটানো যায়। তা ছাড়া, যে সব স্টেশনে ট্রেন অন্তত ১৫-৩০ মিনিটের জন্য থামে সেখানে নেমে অন্তত ১০ মিনিট হেঁটে গা-হাত পায়ের জড়তা কাটিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু এ সবের তেমন কোনও সুযোগই থাকে না উড়ানে। তা হলে কী করে সময় কাটবে বিমানযাত্রায়?
আরও পড়ুন:
পডকাস্ট এবং মিউজ়িক
মেঘ, আকাশ দেখতে দেখতে খানিকটা সময় কেটেই যায়। সেই সময় হেডফোনে পছন্দের গান চালিয়ে দিতে পারেন। তবে এক সময় সেটাও একঘেয়ে হয়ে যাবে। সময় কাটাতে কোনও পডকাস্ট, পছন্দের অডিও স্টোরিও আগে থেকে মোবাইলে ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। যাঁরা এই ধরনের গল্প শুনতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য বিনোদনের এটি ভাল উপায়।
আঁকা, হাতের কাজ
অনেকেরই আঁকার শখ থাকে। ইদানীং পকেট ট্রাভেল কিটও পাওয়া যায়। ছোট্ট ক্যানভাসে আঁকার ব্যবস্থা। থাকবে রং-তুলিও। পকেটে ভরে ফেলা যায় পুরো কিটও। এটাও কিন্তু শিশুদের ব্যস্ত রাখার জন্য বা বড়দের সময় কাটানোর জন্য ভাল উপায়। উড়ানে বসে কাগজ দিয়ে টুকটাকি জিনিসও বানাতে পারেন। যেমন অরিগ্যামি, এটি কাগজ ভাঁজ করে বিভিন্ন আকৃতি তৈরির একটি জাপানি শিল্পকলা। এই শিল্পে একটি সমতল কাগজের টুকরাকে ভাঁজ করে একটি ত্রিমাত্রিক ভাস্কর্যে রূপান্তরিত করা হয়। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করলে তাদেরও ভাল সময় কাটবে।
মোবাইল গেম
গেম খেলার শখ থাকে অনেকেরই। পছন্দের কোনও গেম ডাউনলোড করে রাখলে যাত্রাপথে অন্তত ২-৩ ঘণ্টা ভাল ভাবেই কাটিয়ে ফেলতে পারেন। আবার কেউ কেউ সুডোকু, শব্দছকেও মন দিতে পারেন।
বই
বিমানে রাখা ম্যাগাজিনের উপর ভরসা না করে পছন্দের ২-৩টি বইও সঙ্গে রাখতে পারেন। বই পড়তে ভালবাসলে এর চেয়ে ভাল ভাবে সময় কাটানোর আর কোনও উপায় থাকতে পারে না।
সিনেমা-সিরিজ়
মোবাইল বা ল্যাপটপে আগে থেকে সিরিজ়, সিনেমা ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। সেটি দেখেও সময় কাটবে। তা ছাড়া, সঙ্গে ল্যাপটপ, ট্যাব থাকলে ঠান্ডা মাথায় বেড়ানোর পরিকল্পনাও করে ফেলতে পারেন। অনেকটা সময় একেবারে নিজের জন্য ব্যস্ত জীবনে মেলে না। তাই সেই সময় টুকিটাকি প্রয়োজনের কাজ সেরে ফেলাই যায়।
ঘুম
অলস যাপনের ভাল উপায় হল ঘুম। ঘুমোনোর জন্য ট্রাভেল পিলো, আই মাস্ক, শব্দ শোনা যাবে না এমন ইয়ারফোন সঙ্গে রাখুন। তার পর আরাম করে বসে লম্বা একটা ঘুম দিন।
আর কী করা জরুরি?
উড়ানে শরীর ঠিক রাখতে গুরুপাক খাওয়া-দাওয়া এড়িয়ে চলুন। মদ্যপান করলেও তা পরিমিত পরিমাণে হওয়াই কাম্য। আর অবশ্যই দরকার জল খাওয়া। শরীর ঠিক রাখতে এটা অত্যাবশ্যক। মাঝেমধ্যে হাত-পা স্ট্রেচ করে নিন। সুযোগ হলে শৌচালয় পর্যন্ত এক-দু’বার হেঁটে আসুন।