Advertisement
E-Paper

দোলে চলুন ‘দাদার কীর্তি’ ছবির সেই জনপদে, নামে শিমুল হলেও পলাশ ফোটে সেখানে

বসন্তে শিমুল-পলাশের ছোঁয়ায় রঙিন হয়ে ওঠে শিমুলতলা। শহুরে জীবন থেকে দূরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে দোল উদ্‌যাপনের সেরা ঠিকানা হতে পারে এই জনপদ।

দোলে চলুন শিমুলতলা। কোথায়, কী ভাবে ঘোরা যায় জেনে নিন।

দোলে চলুন শিমুলতলা। কোথায়, কী ভাবে ঘোরা যায় জেনে নিন। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১১:০৩
Share
Save

রং মেখে, বাদ্যযন্ত্র নিয়ে রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে গাইছেন সকলে ‘হোলি আয়ি’। ছড়িয়ে দিচ্ছেন ফাগ। মনে পড়ে সেই দৃশ্য? কিংবা ‘চরণ ধরিতে দিয়েগো আমারে’। এই দুই গান মনে করিয়ে দেয় তরুণ মজুমদারের ‘দাদার কীর্তি’-র কথা। মনে করিয়ে দেয়, শিমুলতলার নাম। এক সময় ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’-সহ একাধিক বাংলা ছবির শুটিং হয়েছিল সেখানে।

বাংলা সাহিত্যের বহু গা ছমছমে রোমহর্ষক বা রোম্যান্টিক আখ্যানের পটভূমি বিহারের এই জনপদ। এক সময় স্বাস্থ্য ফেরাতে গিরিডি, মধুপুর, শিমুলতলার কদর ছিল বাঙালি মহলে। অনেক ধনী সেখানে প্রাসাদোপম অট্টালিকাও বানিয়েছিলেন। তবে এখন পছন্দ বদলেছে। গিরিডি, মধুপুর, দেওঘরের বদলে রাজস্থান, কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরলের মতো জায়গাই বেশি স্থান পাচ্ছে বাঙালির ভ্রমণ-তালিকায়।

তবে চাইলে চলচ্চিত্রের পর্দায়, সাহিত্যের পাতায় ঠাঁই পাওয়া সেই শিমুলতলায় ঘুরে আসতেই পারেন এই বসন্তে। সপরিবার গিয়ে দোল উদ্‌যাপন করতে পারেন। ঘুরে নিতে পারেন লাট্টু পাহাড়, নলডাঙার রাজবাড়ি, হলদি ঝোরা-সহ অনেক জায়গাই।

এখন আর সারি সারি শিমুল গাছ নেই বটে, তবে শিমুলতলা সুন্দর। আগুনরঙা পলাশের পসরা সাজিয়ে সেখানে অপেক্ষমাণ প্রকৃতি। অনুচ্চ ঢেউ খেলানো পাহাড়, সবুজের ছোঁয়া শহুরে কোলাহল থেকে নিয়ে যেতে পারে সাহিত্যের পাতায়।

দোলে চলুন শিমুলতলা।

দোলে চলুন শিমুলতলা। ছবি: সংগৃহীত।

শিমুলতলা ঘিরে যে সব, গল্প কাহিনি— সেই ছবি এখন আর ধরা না দিলেও, এখনও যা আছে, তা নিয়ে দিন দুই-তিন দিন দিব্যি সেখানে কাটিয়ে দেওয়া যায়। লাল মোরামের পথ, শিমুল, মহুয়া, পলাশের আহ্বান এড়ানো কঠিন। আর আছে পুরনো প্রাসাদোপম বাড়িগুলির ধ্বংসাবশেষ।

শিমুলতলা স্টেশনে নেমেই চেখে নিতে পারেন এখানকার শিঙাড়া, কচুরি, জিলিপি। খানিক এগোলেই চোখে পড়বে এক সময় স্বাস্থ্যোদ্ধারে আসার জন্য তৈরি করা বঙ্গজনের একের পর এক অট্টালিকা, ভিলা।

এখনও অনেক পুরনো বাড়িতে সস্তায় থাকা যায়। বিছানাপত্র ভাড়া নিয়ে রাত কাটানো যায়। বাজার থেকে মাছ, টাটকা সব্জি এনে রান্না করে খাওয়া যায় বা রাঁধুনির বন্দোবস্ত করে নেওয়া যায়।

শিমুলতলায় রয়েছে অসংখ্য পুরনো বাড়ি। রয়েছে ভেঙে পড়া রাজবাড়িও।

শিমুলতলায় রয়েছে অসংখ্য পুরনো বাড়ি। রয়েছে ভেঙে পড়া রাজবাড়িও। ছবি: সংগৃহীত।

গাড়ি থাকলে ভাল, না হলে অটোতেও দিব্যি দর্শনীয় স্থানগুলি দেখে নিতে পারেন। স্টেশন সংলগ্ন মাঠ পার করলেই লাট্টু পাহাড়। পাশেই বহু পুরনো নলডাঙা রাজবা়ড়ি। বেশ কয়েকটি বাংলা চলচ্চিত্রেও এই জায়গার ছবিও দেখে থাকবেন। রাজবাড়ি এখন জরাজীর্ণ। বট, অশ্বত্থ বেড়ে উঠেছে ইটের ফোকরে। ভেঙে পড়েছে ছাদ, সিঁড়ি। তবু আজও তা দর্শনীয়।

রাজবাড়ি থেকে এগিয়ে যেতে পারেন লাট্টু পাহাড়ের দিকে। একে অনুচ্চ টিলা বলাই ভাল। তার মাথায় ওঠার জন্য বাঁধানো সিঁড়ি। এই পথে আসতে গেলে বসন্তে পাবেন পলাশের সৌন্দর্য। রাস্তার দুই পাশের গাছে যেন ‘আগুন’-পরশ। লাট্টু পাহাড়ের মাথায় স্থানীয়দের দেবতার স্থান। এখান থেকে দেখা যায় দূর-দূরান্ত। সূর্যাস্তের সময় এলে খানিক জিরিয়ে নিতে পারেন লাট্টু পাহাড়ের মাথায়।

ঘুরে নিতে ধারারা ঝোরা। তবে এটিকে নদীর মতো। পাথরের ফাঁকফোকর দিয়ে বয়ে চলেছে জলধারা। পাশে শিব, কালী, হনুমানের মন্দির। চাইলে দেখে নিতে পারেন ধীরহারা ঝোরা, হলদিঝোরাও।

আর এ সব যদি না-ও ঘুরতে চান পায়ে হেঁটে মোরাম পথ ধরে ঘুরে নিতে পারেন শিমুলতলার আনাচকানাচ। হাতে লম্বা ছুটি থাকলে তালিকায় রাখতে পারেন গিরিডি এবং মধুপুরও।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে সড়কপথে শিমুলতলার দূরত্ব ৩৬২ কিলোমিটার। দুর্গাপুর, ধানবাদ, মধুপুর হয়ে শিমুলতলা। টানা গাড়িতে গেলে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগে।

হাওড়া থেকে শিমুলতলা যাওয়ার একাধিক ট্রেন আছে। আবার ঝাঁঝাঁ স্টেশনে নেমে গাড়িতেও শিমুলতলা যেতে পারেন। দূরত্ব মোটামুটি ২০ কিলোমিটার। হাওড়া-মোকামা প্যাসেঞ্জার রাতে ১১টা ১০-এ হাওড়া থেকে ছাড়ে। শিমুলতলা পৌঁছয় সকাল ৬টা ২৩ মিনিটে।

কোথায় থাকবেন?

শিমুলতলা স্টেশন সংলগ্ন এবং বাজার এলাকায় অনেক পুরনো দিনের বাড়ি আছে। অনেকে হোটেলও তৈরি হয়েছে এখন। যে কোনও জায়গায় থাকা যায়।

Travel

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}