Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পরিবেশের ক্ষতি করা মানুষের বহু প্রাচীন ‘অভ্যাস’

সংবাদের পরিভাষায় যাকে ‘হার্ড নিউজ’ বলে তার বাইরেও বিস্তৃত খবর-রাশি প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর সেই পাহাড়-প্রমাণ খবরের খনি থেকে কিছু বিষয় ভিত্তিক সংবাদকে বেছে নিয়ে আমরা সাজিয়েছি ‘সংবাদের হাওয়াবদল’। সরাসরি বেড়ানোর কথা না-বললেও এইসমস্ত খবর আসলে হাওয়াবদলকে কেন্দ্র করেই। সংবাদের মোড়কে পর্যটন, চমকে দেওয়া না-জানা তথ্য, জীবজগতের পাশাপাশি পার্বণ, প্রত্নতত্ত্ব— সব মিলিয়ে এক অন্য খবরের জগৎ।আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা দূষণ। জল থেকে বায়ু— দূষণের হাত থেকে রেহাই মিলছে না কিছুরই। কিন্তু এই দুষণ কি শুধু মাত্র এ যুগের সমস্যা? না কী এর মূল আরও গভীরে? উত্তর খুঁজতে গিয়ে অবাক হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দেখেছেন, দূষিত করবার ‘অভ্যাস’ মানুষের অতি প্রাচীন। প্রায় ৮ হাজার বছর আগেও যে মানুষ পরিবেশ দূষণ করত, তার প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। সেই খবরের পাশাপাশি নানা চমকপ্রদ তথ্য নিয়ে সংবাদের হাওয়াবদল।

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০০:১৭
Share: Save:

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার

প্রাচীনতম চুল্লির খোঁজ মিলল ইরানে

আদিম মানুষ আগুন আবিষ্কার করেছিল প্রায় ১০ লক্ষ বছর আগে। কিন্তু আগুনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে শিখেছিল কবে? প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে এ নিয়ে আছে বিস্তর মতভেদ। বিতর্কিত এই প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর পাওয়া গেল সাম্প্রতিক এক আবিষ্কারে। ইজরায়েলের রোজ হাইয়ান শহরের প্রাগৈতিহাসিক একটি গুহায় খননকাজ চালিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা খোঁজ পেয়েছেন প্রায় ৩ লক্ষ বছরের পুরনো এক চুল্লির। আগুনের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের এটাই প্রাচীনতম দলিল।

রোজ হাইয়ানের কাশেম কেভে ২০০০ সাল থেকে গবেষণা করছেন তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আভি গোফার এবং রান বারকাইয়ের নেতৃত্বে এক দল বিজ্ঞানী। দলের অন্যতম সদস্য রুথ শাহক-গ্রস গুহার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে উড অ্যাশের অস্তিত্ব দেখেন। ইনফ্রা-রেড পদ্ধতির সাহায্যে রুথ ও তাঁর সহযোগীরা এই উড অ্যাশের মধ্যে মাটি ও হাড়ের খোঁজ পান। উচ্চ তাপমাত্রায় এই মাটি ও হাড় পোড়ানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ওই বিজ্ঞানীরা। এর থেকেই তাঁরা ওই গুহার মধ্যে একটি বিশাল হাঁপর বা চুল্লি থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হন। গুহার মধ্যে বেশ কিছু ভোঁতা অস্ত্রের সন্ধান পান তাঁরা। এগুলি দিয়ে মাংস কাটা হত বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। সন্ধান পাওয়া ছাই নিয়ে আরও বিশদে গবেষণা করে চুল্লিটি যে বার বার ব্যবহৃত হয়েছে তারও প্রমাণ পান রুথ। বার বার ব্যবহার করা চুল্লি, মাংস কাটার ভোঁতা অস্ত্র, হাড়ের খোঁজ— এক জায়গায় এত জিনিসের অস্তিত্ব থেকে বিজ্ঞানীদের ধারণা আদিম মানুষ গুহাটিকে বেস ক্যাম্প হিসাবে ব্যবহার করত। প্রতি বার ফিরে এসে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে চলে যেত তারা। ক্যাম্প ফায়ার করে সামাজিক বিনোদনের আয়োজন করা হত এখানে। রুথের মতে, প্রগৈতিহাসিক মানুষও যে সামাজিক ভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিল এর থেকে তারও প্রমাণ মেলে।

• পরিবেশ দূষণ করা মানুষের বহু প্রাচীন ‘অভ্যাস’

আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা দূষণ। জল থেকে বায়ু— দূষণের হাত থেকে রেহাই মিলছে না কিছুরই। কিন্তু এই দুষণ কি শুধু মাত্র এ যুগের সমস্যা? না কী এর মূল আরও গভীরে? উত্তর খুঁজতে গিয়ে অবাক হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দেখেছেন, দূষিত করবার ‘অভ্যাস’ মানুষের অতি প্রাচীন। প্রায় ৮ হাজার বছর আগেও যে মানুষ পরিবেশ দূষিত করত, তার প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক মিচিগানে ধাতব দূষণের সন্ধান পেয়েছেন, যা কিনা প্রায় ৮ হাজার বছরের প্রাচীন। তাঁদের আরও দাবি ইউরোপ, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার আগে দূষণের কবলে পড়ে উত্তর আমেরিকা। মিচিগানের হ্রদ থেকে পাওয়া অবশেষ বিশ্লেষন করে বিজ্ঞানীরা এই দূষণের দায় চাপিয়েছেন উত্তর আমেরিকার তদানীন্তন বাসিন্দাদের ঘাড়ে। মূলত খোলা মুখ খনি থেকে ধাতব দূষণের সূত্রপাত। আঠেরোশো শতকেও এই অঞ্চলে গবেষণা চালিয়ে প্রাগৈতিহাসিক দূষণের সন্ধান পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দেখেছেন খনি থেকে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তামা উত্তোলনের সময় দূষণের শুরু। যদিও সেই আমলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খনি থেকে তামা উত্তোলন ছিল নেহাতই কল্পনার বিষয়। ফলে দূষণ যে শুধুমাত্র আধুনিক জীবনের ‘দান’ নয়, তা আধুনিক মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দেবে।

৬০ হাজার বছর আগে ভারতে এসেছিল আধুনিক মানুষ

প্রাচীন ভারতে আধুনিক মানুষের আবির্ভাব ঘটেছিল কত বছর আগে? কোনও বিজ্ঞানীর মতে তা ছিল ৬০ হাজার বছর আগে, কারও মতে ৭২ হাজার বছর আগে, কারও বা মত ১ লক্ষ ২০ হাজার বছর আগে। দাবির সমর্থনে সব পক্ষই পেশ করতেন সাক্ষ্যপ্রমাণ ও অকাট্য যুক্তি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রস্তর যুগের অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের যুক্তি দেখিয়ে তাদের দাবি প্রস্তর যুগের সূচনা যে হেতু ২-৩ লক্ষ বছর আগে, অতএব ভারতে মানব সভ্যতার ইতিহাসও কম করে লক্ষ বছরের পুরনো। সম্প্রতি হাডার্সফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্টিন রিচার্ডস দাবি করেছেন, ভারতে আধুনিক মানুষের আগমণ কোনও অবস্থাতেই ৬০ হাজার বছরের আগে ঘটেনি। তাঁর আরও দাবি, এর আগেও হয়তো ভারতে মানুষ ছিল, কিন্তু তারা আধুনিক মানবের পূর্বজ নিয়ান্ডারথাল। তাদের ব্যবহৃত পাথরের অস্ত্রই উদ্ধার হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। একটি প্রবন্ধে তিনি দাবি করেছেন, মাইটোকনড্রিয়াল ডিএনএ-র গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন অনুযায়ী আফ্রিকা থেকে অস্ট্রিয়া ও আরব হয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় আগমণ ঘটেছিল আধুনিক মানুষের। জিনের ক্রমবিন্যাসের ভিত্তিতে তিনি প্রমাণ করেছেন যে এই আগমণ ৬০ হাজার বছর আগে ঘটেনি। মানুষের বিবর্তনের পথে একটি অন্যতম অধ্যায় সুমাত্রার টোবা আগ্নেয়গিরির অগ্নুত্পাত। সেই অগ্নুত্পাতের ছাই থেকে পাওয়া প্রস্তর যুগের অস্ত্রের নমুনা পরীক্ষা করেও একই সিদ্ধান্তে এসেছেন তিনি। তাঁর দাবি, টোবার অগ্নুত্পাতের আগে নিয়ান্ডারথাল থাকলেও এর পরেই এশিয়ায় এসেছে আধুনিক মানুষ।

ঐতিহ্য

• নিলামে টাইটানিকের এক যাত্রীর চিঠি

একশো দু’বছর আগে ঘটে যাওয়া এক প্রমোদ যাত্রার ভয়ানক পরিণতির ঘটনা আবার মানুষের মনে আলোড়ন তুলল। প্রায় দেড় হাজার মানুষের করুণ মৃত্যুকে এক পলকে চোখের সামনে নিয়ে এল একটি ছোট্ট চিঠি!

চিঠিটা নিউইয়র্কে তাঁর মাকে লিখেছিলেন টাইটানিকের এক যাত্রী মিসেস এস্থার হার্ট। গত ৩১শে মার্চ ডেইলি মেল পত্রিকায় তাঁর চিঠিটি প্রকাশিত হয়। তাঁর এই চিঠি পড়ে জানা গিয়েছে সেদিন আবহাওয়া ছিল মনোরম, ঝড়ের কোনও বার্তাই ছিল না। টাইটানিকও খুব স্বচ্ছন্দে চলছিল। চিঠিতে এস্থার মাকে লেখেন, স্বামী বেঞ্জামিন ও মেয়ে এভাকে নিয়ে রাত্রেই নিউইয়র্কে পৌঁছে যাবেন তিনি। তাঁরা দারুণ ভাবে উপভোগ করছেন এই মনোরম সমুদ্রযাত্রা। চিঠিটা লেখার ঘণ্টাখানেক পরেই ঘটে গত শতাব্দীর সবচেয়ে অভিশপ্ত দুর্ঘটনাটি। তিনি চিঠিটি লিখে বেঞ্জামিনকে দিয়েছিলেন পোস্ট করবেন বলে। কিন্তু বেঞ্জামিন চিঠিটা তাঁর কোর্টের পকেটে রেখে দেন। টাইটানিক যখন অতলান্তিকের গভীরে তলিয়ে যাচ্ছে নিজের স্ত্রীকে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচাতে কোর্টটি পরিয়ে দেন বেঞ্জামিন। সৌভাগ্যবশত সে দিন বেঁচে যান এস্থার হার্ট। সেই সঙ্গে প্রমোদতরীতে তাঁর লেখা চিঠিটিও। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে আবার সেই চিঠির হাত ধরেই উঠে এল টাইটানিকের স্মৃতি। সেই চিঠিই আগামী ২৬ এপ্রিল নিলাম হতে চলেছে ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারে। নিলামের মূল দায়িত্বে রয়েছে ‘হেনরি অলরিজ অ্যান্ড সন’। এক লক্ষ পাউন্ডে চিঠিটি বিক্রি হতে পারে বলে তাদের ধারণা।

• মন্দিরময় বোলপুরের সুরুল-সুপুর

সুরুল বোলপুরের এক ঐতিহ্যময় জায়গা। এই গ্রামে পোড়ামাটির কারুকাজ করা কয়েকটি মন্দির আছে। এর মধ্যে দুর্গা দালানের পাশে আনুমানিক অষ্টাদশ শতাব্দীতে তৈরি পঞ্চরত্ন লক্ষ্মী-জনার্দনের মন্দির এবং শিখররীতিতে তৈরি শিব মন্দির দু’টি বিশেষ ভাবে দর্শনীয়। এখানকার পশ্চিমপাড়ায় ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত শিখররীতিতে তৈরি একটি শিবমন্দিরও বেশ উল্লেখযোগ্য। এই মন্দিরের গায়ে নানা দেব-দেবী, ভগীরথের গঙ্গা আনয়ন দৃশ্য তথা সমসাময়িক সমাজ জীবনের নানা ঘটনাবলী চিত্রিত রয়েছে।

অন্য দিকে, বোলপুরের চার কিলোমিটার পশ্চিমে সুপুর একটি অতি সমৃদ্ধ পুরনো গ্রাম। অতীতে এর নাম ছিল ‘স্বপুর’। কিংবদন্তি অনুসারে পৌরাণিক রাজা সুরথ রাজ্যহারা হয়ে এখানেই তপস্যা করেন। সেই জায়গা এখনও ‘সুরেশ্বরতলা’ বলে পরিচিত। সুপুরের রথতলা থেকে সামান্য দূরে রাস্তার পাশেই পাশাপাশি দু’টি শিবমন্দির আছে,যা অঞ্চলে ‘জোড়া মন্দির’ নামে খ্যাত। এর মধ্যে একটি মন্দির স্থাপত্যশৈলীর অন্তর্গত আটকোণা শিখর মন্দির।আটকোণা মন্দিরটির সবদিকেই টেরাকোটার অলংকরণ রয়েছে। পৌরাণিক দেবদেবী-সহ ব্রিটিশ আমলের নানা ঘটনার দৃশ্যাবলীও এখানে দেখা যায়।

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ

গলা শুনে মানুষ চিনতে পারে হাতি

প্রাণিজগতে বুদ্ধিমান প্রাণীদের যদি একটি তালিকা তৈরি করা যায়, তা হলে অবশ্যই প্রথম সারিতে থাকবে হাতির নাম। শুধু বুদ্ধিমান নয় হাতিদের স্মৃতিশক্তিও খুব প্রখর। লক্সোডান্টা আফ্রিকানা— আফ্রিকার এই প্রজাতির হাতিরা শুধু বুদ্ধিমানই নয় মানুষের গলার স্বর শুনে তার জাতিগোষ্ঠী, ভাষার তারতম্য, এমনকী মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ করার ক্ষমতাও রাখে। সম্প্রতি এমনই বিস্ময়কর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস (পিএনএএস)’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায়। এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত ব্রিটেনের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যারেন ম্যাকম্ব ও গ্রেস শ্যানোন জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই আফ্রিকার এই বিশেষ প্রজাতির হাতিদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, এরা আফ্রিকার মাসাই ও কাম্বা জনগোষ্ঠীর মানুষদের পৃথক ভাবে চিনতে পারে। শুধু তাই নয় ক্যারেন জানিয়েছেন, সিংহের গর্জন শুনেও হাতিরা বুঝতে পারে সেটা পূর্ণবয়স্ক পুরুষ সিংহ না সিংহী। অধ্যাপক রিচার্ড বার্ন সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘‘মানুষের কণ্ঠস্বর শুনে তার জাতি ও লিঙ্গ ভেদ করার ক্ষমতা সত্যিই বিস্ময়কর।’’

গবেষকেরা কেনিয়ার অ্যাম্বোসেলি ন্যাশনাল পার্কে হাতিদের উপর গবেষণা চালান। হাতির দলের সামনে মাসাই ও কাম্বা জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর পৃথক পৃথক ভাবে শুনিয়ে হাতিদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা হয়। মাসাইরা মূলত পশুপালন ও শিকার করে থাকে। তাই খাদ্য ও বাসস্থান নিয়ে প্রায়ই হাতিদের সঙ্গে তাদের বচসা বাধে। অন্য দিকে, কাম্বা জনগোষ্ঠীর মূল জীবিকা হল কৃষিকাজ। হাতিদের সঙ্গে এদের বিরোধের কোনও সম্ভাবনাই নেই। তাই দেখা যায়, মাসাই বয়স্ক পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে হাতির পাল সতর্ক হয়ে যায় ও ধীরে ধীরে স্থানত্যাগ করে। তবে মাসাই গোষ্ঠীর নারী, শিশু ও কাম্বা পুরুষদের কণ্ঠস্বর কোনও প্রতিক্রিয়াই তৈরি করে না হাতিদের মধ্যে।

ইয়ার্কস ন্যাশনাল প্রাইমেট রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ফ্রান্স ভ্যানডার ওয়াল পিএনএএস বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, হাতিরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও রাখে। মানুষের কথা বলার ধরন শুনেই এরা বিপদের আঁচ করতে পারে। যেমন বয়স্ক মাসাই পুরুষের গলা শুনে হাতিরা বুঝতে পারে সেই গোষ্ঠী শিকারের জন্য বের হয়েছে কি না। সেই বুঝে হাতির দল সতর্ক হয়, ধীরে ধীরে স্থানত্যাগ করে অথবা দলবদ্ধ ভাবে বিপদের মোকাবিলা করে।

পথ চিনে বাড়ি ফেরে বারমিস পাইথন

পথ চিনে বাড়ি ফিরে আসতে পারে সাপেরা। তবে যে সে সাপ নয়। রীতিমতো নাগরাজ বা বলা চলে বিশ্বের পাঁচটি বিশালাকায় সাপের মধ্যে একটি। প্রায় ১৮.৮ ফুট লম্বা পাইথন বিভিট্টাটাস বা বারমিস পাইথন অন্তত ২০ মাইল দূরত্ব থেকেও সঠিক পথ চিনে নিজেদের বাসস্থানে ফিরে আসতে পারে। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন কলম্বিয়ার মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শ্যানোন পিটম্যান। শ্যানোন জানিয়েছেন, এই প্রজাতির পাইথনেরা নিজেদের পরিচিত গণ্ডির মধ্যে থাকতেই বেশি ভালবাসে। যখনই এরা তাদের পরিচিত এলাকার বাইরে বেরোয় প্রথমেই সেই জায়গায় খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করে নেয় এবং তাদের সঠিক অবস্থান নিয়ে একটি ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করে। এই গবেষণাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘বায়োলজি লেটারস’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায়। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী আমেরিকার এভারগ্লেডস জাতীয় উদ্যান ও বিগ সাইপ্রেস অভয়ারণ্যে সমীক্ষা চালিয়ে ‘রয়্যাল সোসাইটিস বায়োলজি লেটারস’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায় একই তথ্য প্রকাশ করেন। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ২০০৬-০৭ থেকে এই গবেষণাটি শুরু হয়। ১২টি বারমিস পাইথনের দেহে অস্ত্রোপচার করে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে দেন বিজ্ঞানীরা। তার পর তাদের পরিচিত এলাকা থেকে বহু দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়। দেখা যায় ১২টির মধ্যে ৬টি পাইথনই অন্তত ১৩ থেকে ২২ মাইল পথ অতিক্রম করে তাদের পরিচিত এলাকায় ফিরে এসেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, ৯৪ থেকে ২৯৬ দিনের মধ্যে পাঁচটি পাইথনই পরিচিত গণ্ডির অন্তত তিন মাইলের মধ্যে চলে এসেছিল। বিজ্ঞানীদের ধারণা পথ চিনতে পাইথনেরা বিশেষ কোনও সঙ্কেতের আশ্রয় নেয়। তাঁদের দাবি, হতে পারে বিশেষ কোনও গন্ধ, আলোর গতি, নক্ষত্রের অবস্থান বা চুম্বকীয় শক্তি। যেমন গুবরে পোকারা ছায়াপথের অবস্থান দেখে চলার পথ নির্ধারণ করে।

বারমিস পাইথনেরা সাধারণত ক্রান্তীয় উষ্ণ অঞ্চলে বসবাস করে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে এদের উপস্থিতি বিশেষ ভাবে দেখা যায়। ১৯৭৯-এ আমেরিকার এভারগ্লেডস জাতীয় উদ্যানে প্রথম এই প্রজাতিকে শনাক্ত করা হয়। ২০০১ থেকে ২০০৫-র মধ্যে এই উদ্যানে পাইথনের সংখ্যা অবিশ্বাস্য রকম ভাবে বৃদ্ধি পায়। সমীক্ষায় দেখা যায়, গোটা জাতীয় উদ্যানে পাঁচ হাজার থেকে দেড় লক্ষ পাইথন রয়েছে, যাদের মধ্যে বারমিস পাইথনের সংখ্যা অন্তত ২০০। পাইথনের বংশবৃদ্ধির কারণে ২০১১-র মাঝামাঝি দেখা যায় দক্ষিণ ফ্লোরিডার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রেকুন, খরগোশ, ববক্যাট-সহ বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর অস্তিত্ব লুপ্তপ্রায়। এর পরই এই পাইথনের সংখ্যা বৃদ্ধির উপর রাশ টানা হয়। আক্রমণাত্মক প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করে বারমিস পাইথন আমদানীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন সরকার।

থুতু ছিটিয়ে শিকার ধরে তিরন্দাজ মাছ

তিরন্দাজ মাছ বা আর্চারফিস শিকারের জন্য অভিনব এক কৌশল প্রয়োগ করে। থুতু ছিটিয়ে জলের উপরিভাগে ঝুলে থাকা গাছের ডাল বা লতাপাতায় বসা কীটপতঙ্গকে ঘায়েল করে ভোজন সারে। টক্সোটস্ গোত্রের এই মাছেদের মোট সাতটি প্রজাতি আছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় নোনা জল এদের বিশেষ পছন্দের জায়গা। তা ছাড়া সমুদ্র ও মিঠে জলেও এদের দেখা পাওয়া যায়। একটি পূর্ণবয়স্ক তিরন্দাজ মাছ জলের উপরিভাগে তিন মিটার দূরত্ব পর্যন্ত থুতু বা জল ছিটিয়ে শিকারকে ঘায়েল করতে পারে। মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদেরা জানিয়েছেন, শিকার ধরার জন্য এই বিশেষ প্রজাতির মাছেরা নিজেদের অজান্তেই পদার্থবিদ্যার সূত্রকে কাজে লাগায়। সাধারণত তিরন্দাজ মাছেরা ৫ মিটার দূরত্ব অবধি প্রচণ্ড বেগে থুতু নিষ্ক্রমণ করতে পারে এবং ১-২ মিটার দূরে থাকা শিকারকে সহজেই ঘায়েল করে। তবে শিকারের আকৃতি ও অবস্থানের উপর নির্ভর করে এই বেগের পরিবর্তন হয়। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, জলের উপরিভাগে শিকার যদি ১০ সেন্টিমিটার দূরত্বে থাকে তা হলে থুতুর বেগ ০ থেকে ২ সেন্টিমিটারের মধ্যে থাকে, আবার শিকার যদি জলের উপরিভাগে ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্বে থাকে তখন বেগ পরিবর্তিত হয়ে ২ থেকে ১৫ সেন্টিমিটারের আশেপাশে থাকে। এই গবেষণাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘পাবলিক লাইব্রেরি অফ সাইন্স’ বা ‘প্লস ওয়ান’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায়।

তিরন্দাজ মাছেদের প্রধান বৈশিষ্ট্য এদের মুখের গঠন। শিকারকে লক্ষ্য করার সঙ্গে সঙ্গেই এরা চোখ দু’টি ঘোরাতে থাকে যাতে শিকারের একটি পূর্ণ অবয়ব চোখে ধরা পড়ে। এদের মুখের উপরিভাগ লম্বা খাঁজকাটা। শিকার ধরার আগে এরা জিভ দিয়ে খাঁজকাটা অংশের সঙ্গে একটা সরু চ্যানেল তৈরি করে। এই চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে প্রচণ্ড বেগে জলের ফোয়ারা বের করে। গবেষকদের মতে ভূমির সমান্তরালে ৭৪ ডিগ্রি কোণ করে এই ফোয়ারা শিকারের দিকে ছুটে যায়, আবার শিকারের অবস্থানের উপর নির্ভর করে কখনও ৪৫ থেকে ১১০ ডিগ্রিও হয়ে থাকে। লক্ষ্যভেদ না হওয়া পর্যন্ত বারংবার এই ভাবে চেষ্টা করতে থাকে। শিকার ঘায়েল হয়ে জলে পড়লেই কেল্লাফতে, তত্ক্ষণাত্ গপ করে গিলে ফেলে তাদের ভোজ সারে।

পর্যটন কেন্দ্র

• ‘রিটায়ারমেন্ট ট্যুরিজম’

ঘুরে বেড়ানোর নেশাকে সঙ্গী করে আজকাল শুধু কমবয়সিরাই নয়, বয়স্করাও বাইরে পা বাড়াচ্ছেন নিয়মিত। আর চাকরি থেকে অবসরের পর নিশ্চিন্তে ছুটি কাটাতে কে না চায়? দীর্ঘ কর্ম জীবন শেষে, অবসরের পর তল্পিতল্পা গুটিয়ে কিছু দিনের জন্য বাড়ির আরাম ছেড়ে বাইরে পা ফেলতে চায় সবাই। এঁদের কথা মাথায় রেখেই ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এ বার তোড়জোড় শুরু হয়েছে নতুন এক ধরনের পর্যটন ব্যবস্থার। তার একটা গালভরা নামও দেওয়া হয়েছে— রিটায়ারমেন্ট ট্যুরিজম। ‘বালি রিটায়ারমেন্ট ট্যুরিজম অথরিটি’ (বিআরটিএ)-কে সাহায্য করতে এ বার এগিয়ে এসেছে বালির প্রাদেশিক সরকার। বয়স্ক পর্যটকদের আবাসন তৈরির জন্য বিআরটিএ-কে তারা জমি দেবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে। বালির গভর্নর মাদে মাঙ্কু পাসটিকা সম্প্রতি বলেন, এখনও পর্যন্ত বালিতে বিভিন্ন রকমের অপ্রচলিত পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে উঠলেও অবসরপ্রাপ্তদের জন্য কোনও আবাসন প্রকল্প নেই। এমন প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপের মতো বহু উন্নত দেশে এই ‘কনসেপ্ট’ কিন্তু নতুন নয়। এমনকী, প্রতিবেশী দেশ ফিলিপিন্স বা মালয়েশিয়াতে এই ধরনের প্রকল্প গড়ে উঠেছে বহু কাল আগেই। এ বার বালিতেও এই ধরনের প্রকল্প তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অভিনব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রকল্পে মুনাফাও আছে যথেষ্ট। বিআরটিএ-র চেয়ারম্যান অধ্যাপক কেতুত সুকার্দিকা জানান, সুন্দর পরিবেশে তৈরি এই ধরনের বাসস্থানে স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রাখা হবে। বয়স্কদের জন্য এখানে চিকিত্সা পরিষেবা-সহ অন্যান্য সুযোগসুবিধাও থাকবে। বাগান থেকে শুরু করে মায় শিল্পকলার ছোঁয়া— অবসরপ্রাপ্তদের জন্য থাকবে সবকিছুই।

চেন্নাইয়ের সমুদ্রে ইয়ট-বিহার

‘সমুদ্রে ভেসে বেড়ানোর আনন্দ পেতে চলুন চেন্নাই’, শহরের পর্যটন-মানচিত্রে এমন বিজ্ঞাপন হলে অবাক হবেন না। কারণ গত মার্চে একটি বেসরকারি সংস্থার হাত ধরে চেন্নাইয়ে শুরু হয়েছে বিলাসবহুল ইয়ট পরিষেবা। সংস্থাটির লক্ষ, চেন্নাইয়ের সমুদ্র উপকূল জুড়ে পর্যটনের প্রসার ঘটানো। তবে এই ইয়ট-বিহার মোটেই সস্তার নয়। কয়েক ঘণ্টার ইয়ট-যাত্রার জন্য গুনতে হবে বেশ মোটা রকমের ভাড়া। সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার ইন্দ্রজিত্ কালিদাসন জানিয়েছেন, ঘণ্টার হিসেবে ১৫ জন মিলে এই ইয়ট ভাড়া করা যেতে পারে। আর ঘণ্টা পিছু জন প্রতি ইয়ট-বিহারের দর ১৭৫০ টাকা। তবে বিলাসবহুল এই ইয়টে বিলাসিতার কোনও অভাব নেই। বিশেষ প্রযুক্তিতে দুবাইয়ে এই ইয়ট তৈরি করেছেন এক ইতালীয় ডিজাইনার। বাতানুকুল বসার ঘর থেকে শুরু করে এখানে রয়েছে একটি বেডরুম, শৌচাগার এবং রান্নাঘর। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই ইয়টে চড়ে আন্তর্জাতিক জলসীমান্তে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত ঘোরা যাবে বলে জানিয়েছেন কালিদাসন। তিনি আরও বলেন, সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী বানানো বলে এই ইয়ট তৈরিতে খরচ পড়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। বঙ্গোপসাগরে এটি চলাচলে ইতিমধ্যেই চেন্নাই পোর্ট ট্রাস্ট, উপকূল-পুলিশ ও ভারতীয় নৌবাহিনীর অনুমতি মিলেছে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, পর্যটকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন রিসর্টের সঙ্গেও গাঁটছড়া বেঁধেছে এই সংস্থাটি। কালিদাসন জানিয়েছেন, বিশ্ব জুড়েই ইয়ট-বিহার জনপ্রিয়। দেশে মুম্বই ও কোচিতেও এর জনপ্রিয়তা অভাবনীয়। এ বার চেন্নাইতেও এই পরিষেবা জনপ্রিয় হবে বলে আশা তাঁর।

সাজছে কোটা লামা

সেজে উঠছে কোটা লামা। মধ্য জাভার সেমারাং-এর পুরনো শহর কোটা লামার সৌন্দর্য্যায়নের লক্ষে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার শহরের মেয়র। ২০১৮ সালের মধ্যে এই শহরকে বিশ্বমানের পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে চান তিনি। সে জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে। শহরের সংস্কার করে আরও সুষ্ঠু ভাবে তা পরিচালনার লক্ষে কাজ করবেন এই বিশেষজ্ঞরা। এ কাজে তিনটি দল গঠন করেছেন তিনি। এগুলি হল— কোটা লামা এরিয়া ম্যানেজমেন্ট বোর্ড, স্ট্রাকচারাল এক্সপার্ট টিম ও কালচারাল হেরিটেজ এক্সপার্ট টিম। এই দলগুলিতে পুরনো বাড়ি সম্বন্ধে বিশেষজ্ঞরা যেমন রয়েছেন, তেমন আছেন বাস্তুকার, শহর পরিকল্পক ও সংরক্ষকরাও।

ডাচ উপনিবেশের অধীনে থাকার সময় মূলত বাণিজ্যনগরী হিসেবে পরিচিত ছিল কোটা লামা। ফলে শহরের বাড়িগুলি ১৭ শতকের ইউরোপীয় স্থাপত্যের স্থাপত্যের আদলে গড়ে উঠেছে। শহরের বসতিহী‌ন একাংশ এলাকা পরিচিত ‘লিট‌ল নেদারল্যান্ডস’ নামে। এখানকার ৩১ হেক্টর এলাকা জুড়ে ১০৫টি বাড়ি রয়েছে। অঞ্চলে সুপরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট। বড় বড় রাস্তার দু’ধারে সাজানো ব্লকের মাঝে বাড়িগুলিকে যেন কোনও ইউরোপীয় শহরের মতো সুন্দর ভাবে সাজিয়ে বসানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে খাকলেও বেশির ভাগেরই ভগ্নপ্রায় দশা।

এর রক্ষণাবেক্ষনের জন্য শহরের মেয়র পুরনো বাড়ির মালিকদের কাছে অনুরোধ করেছেন। এমনকী, এ কাজে ডাচ সরকারের কাছেও আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কালচারাল হেরিটেজ এক্সপার্ট টিম-এর বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, প্রথমে সমস্ত বাড়িগুলির অবস্থা যাচাই করে তার পর এগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণের কাজে হাত দিতে হবে।

পরিষেবা

কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছে যেতে বিশেষ কপ্টার পরিষেবা

দিনের বিভিন্ন সময়ে তার এক এক রকম রং। কাঞ্চনজঙ্ঘার সুন্দর সেই বর্ণচ্ছটা এ বার পর্যটকদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ করে দিল সিকিম সরকার। ২৮,১৬০ ফুট উঁচু বিশ্বের তৃতীয় এই সর্বোচ্চ শৃঙ্গ দেখতে সম্প্রতি রাজধানী গ্যাংটক থেকে ১৫ মিনিটের কপ্টার সফর চালু করা হয়েছে। আকর্ষণীয় বরফ ঢাকা এই চূড়া এত দিন দূর থেকে বিভিন্ন ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখতে হত পর্যটকদের। সরকারি তরফে জানা গিয়েছে, সারা বছর ধরেই এই কপ্টার পরিষেবা পাওয়া যাবে। প্রতি বছর ৮ লক্ষেরও বেশি পর্যটক কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে আসেন। নতুন এই হেলিকপ্টার পরিষেবা সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ লক্ষের মাত্রা ছোঁবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হেলি পরিষেবায় পশ্চিমবঙ্গ

পবন হংসরাজের সঙ্গে তিনটি পরিষেবা— হেলিকপ্টার, ‘সি-প্লেন’ ও ইন্টারসিটি উড়ান এর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চুক্তি হয়েছিল আগেই। এ বার শুধু কলকাতা ভ্রমণের জন্য হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু করল প্রয়াগ গ্রুপ। সম্প্রতি ‘কলকাতা দর্শন’ নামে একটি প্যাকেজট্যুর শুরু করছে তারা। ১০ মিনিটের এই উড়ানে কলকাতা শহর দেখার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। হুগলি নদী, হাওড়া ব্রিজ, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-সহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় জায়গা এ বার উপর থেকে দেখা যাবে জনপ্রতি ২০০০ টাকার বিনিময়ে। শুধু তাই নয়, ঘণ্টা প্রতি ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে কপ্টার নিয়ে উড়ানপথে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাবে দিঘা, মন্দারমণি, চন্দ্রকোনা, সুন্দরবন ছারাও তারাপীঠ, মায়াপুর, জয়রামবাটি, কামারপুকুরের মতো জায়গায়।

মুম্বই থেকে ‘সি প্লেন’ পরিষেবা

মহারাষ্ট্র পর্যটন উন্নয়ন নিগম (এমটিডিসি) ও মেরিটাইম এনার্জি হেলি এয়ার সার্ভিস-এর যৌথ উদ্যোগে মুম্বইয়ে চালু হল ‘সি প্লেন’ বা সামুদ্রিক বিমান পরিষেবা। সমুদ্র উপকূলবর্তী যে সমস্ত পর্যটনকেন্দ্রে বিমানবন্দর নেই, সেখানে জায়গায় অনায়াসে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা। মহারাষ্ট্র সরকারের পর্যটনমন্ত্রী ছগন চন্দ্রকান্ত ভুজবাল সম্প্রতি এই পরিষেবার উদ্বোধন করেন। এই কাজে সেসনা ২০৬ অ্যাম্ফিবিয়ান ও সেসনা ২০৮ অ্যাম্ফিবিয়ান উড়ান ব্যবহার করা হবে। চার থেকে নয় জন যাত্রী এই বিমানে উড়তে পারবেন। এই মাস থেকেই চালু হওয়া প্রথম উড়ানটি অ্যাম্বে ভ্যালি পর্যন্ত যাবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে অ্যাম্বে ভ্যালি লেক, গঙ্গাপুর বাঁধ, মুলা বাঁধ, পাওনা বাঁধ, ধুম বাঁধ এবং বরষগাঁও বাঁধ এই উড়ান মানচিত্রে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে কঙ্কন উপকূলের গণপতিফুলে, হরিহরেশ্বর, টার্কার্লি, মুরুদ জানজিরার নাম।

সংবাদ সংস্থা, ইন্টারনেট থেকে নেওয়া ও নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE