Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ম্যাচ ফিক্সিং-এর প্রাচীনত্ব

সংবাদের পরিভাষায় যাকে ‘হার্ড নিউজ’ বলে তার বাইরেও বিস্তৃত খবর-রাশি প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর সেই পাহাড়-প্রমাণ খবরের খনি থেকে কিছু বিষয় ভিত্তিক সংবাদকে বেছে নিয়ে আমরা সাজিয়েছি ‘সংবাদের হাওয়াবদল’। সরাসরি বেড়ানোর কথা না-বললেও এইসমস্ত খবর আসলে হাওয়াবদলকে কেন্দ্র করেই। সংবাদের মোড়কে পর্যটন, চমকে দেওয়া না-জানা তথ্য, জীবজগতের পাশাপাশি পার্বণ, প্রত্নতত্ত্ব— সব মিলিয়ে এক অন্য খবরের জগৎ।ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে মুদগল কমিটি, মিডিয়া এবং সুপ্রিম কোর্টের সাঁড়াশি আক্রমণে শ্রীনির গদি টলমল। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে বারবার নাম জড়িয়েছে হ্যান্সি ক্রোনিয়ে থেকে আজহারউদ্দিন— নামজাদা বহু ক্রিকেটার থেকে প্রশাসকের। ফিক্সিং নিয়ে সরগরম হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগও। কুস্তিতে তো বিশালদেহী পালোয়ানদের নিয়ে হওয়া বেশির ভাগ ম্যাচই নিন্দুকদের মতে পূর্ব নির্ধারিত বা ফিক্সড। কিন্তু এই ধরনের ম্যাচ ফিক্সিং কি সাম্প্রতিক ঘটনা? চমকপ্রদ তথ্য নিয়ে সংবাদের হাওয়াবদল।

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার

তুরস্কে উদ্ধার অ্যাফ্রোদিতের মূর্তি

আধুনিক যুগে ভালবাসার বড় অভাব। একটু ভালবাসার খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছে আজকের আট থেকে আশি। এমনই এক সময়ে প্রাচীন এক ভালবাসার দেবী ‘মুখ’ তুলে চাইলেন সুদূর তুরস্কে। ভূমধ্যসাগরের পার ঘেঁষা দক্ষিণ তুরস্কে খননকার্য চালানোর সময়ে মূর্তিটির খোঁজ পান এক দল গবেষক। হাজার হাজার বছর ধরে মাটির নীচে মুখ লুকিয়ে ছিলেন ভালবাসার এই দেবী অ্যাফ্রোদিত— প্রাচিন গ্রিসের ভালবাসার দেবী। প্রাচীন লোকগাথা অনুযায়ী তাঁর রূপের সামনে অসহায় ছিল দেবতা থেকে মানুষ সবাই।

প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তার ও আধুনিক ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন নিয়ে গবেষণা করছিলেন এক দল বিজ্ঞানী। সেই সূত্রেই দক্ষিণ তুরস্কের অ্যান্টিওসিয়া অঞ্চলে খননকার্য চালাচ্ছিলেন তাঁরা। সেখানেই অ্যাফ্রোদিতের একটি মূর্তির মাথার অংশটির খোঁজ পান তাঁরা। বহু বছর মাটিতে গাঁথা থাকায় মূর্তিটির কিছু অংশ ভেঙে গেলেও ভালবাসার দেবীকে চিনে নিতে ভুল হয়নি গবেষকদের। এলাকাটি এক সময়ে সিসিলিয়ান জলদস্যুদের কবলে ছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই দস্যুরাই এক সময়ে জুলিয়াস সিজারকে অপহরণ করেছিল। তবে সে সব খ্রিস্টজন্মেরও ৭৫ বছর আগের কথা। এর পর ধীরে ধীরে এই সমস্ত এলাকা সুবিশাল রোমান সাম্রাজ্যের আওতায় চলে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে বহু আগেই মূল মূর্তি থেকে অ্যাফ্রোদিতের মাথাটি আলাদা করা হয়েছিল। পাথরের চাঁই ও সুবিশাল চুল্লিরও খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সেখানে। এর আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল তুরস্কের এই সব অঞ্চলে রোমান ও গ্রিক সংস্কৃতির প্রভাব তেমন ছিল না। অ্যাফ্রোদিতের মূর্তির খোঁজ পাওয়ায় সেই ধারণা ভেঙে গেল বলেই মনে করছেন তাঁরা। ওই এলাকা থেকে একটি সুবিশাল পাথরের কাঠামোও আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি একটি প্রাচীন মন্দিরের বলেই মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এই বিষয়ে আরও তথ্য পেতে পরীক্ষা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

১৭০০ বছর আগের একটি ম্যাচ ফিক্সিং

ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে মুদগল কমিটি, মিডিয়া এবং সুপ্রিম কোর্টের সাঁড়াশি আক্রমণে শ্রীনির গদি টলমল। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে বারবার নাম জড়িয়েছে হ্যান্সি ক্রোনিয়ে থেকে আজহারউদ্দিন— নামজাদা বহু ক্রিকেটার থেকে প্রশাসকের। ফিক্সিং নিয়ে সরগরম হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগও। কুস্তিতে তো বিশালদেহী পালোয়ানদের নিয়ে হওয়া বেশির ভাগ ম্যাচই নিন্দুকদের মতে পূর্ব নির্ধারিত বা ফিক্সড। কিন্তু এই ধরনের ম্যাচ ফিক্সিং কি সাম্প্রতিক ঘটনা? সম্প্রতি একটি প্যাপিরাস থেকে পাওয়া তথ্যে ১৭০০ বছর আগের একটি ম্যাচ ফিক্সিংয়ের খবর মিলেছে। খ্রিস্ট জন্মের ২৬৭ বছর পরে দুই বালক কুস্তিগিরের মধ্যে একটি ম্যাচ শুধু যে ফিক্সড ছিল তা-ই নয়, রীতিমত চুক্তিপত্রে সই সাবুদ করেই তা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, চুক্তিটি করেছিলেন এক কুস্তিগির নিকানটানিয়াসের বাবা অপর কুস্তিগির দেমেট্রেউসের প্রশিক্ষকের সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী খেলার মধ্যে তিন বার দেমেট্রেউসকে পড়ে যেতে হত। নিয়ম অনুযায়ী কোনও কুস্তিগির তিন বার পড়ে গেলে তাকে পরাজিত ঘোষণা করা হত। এর জন্য দেমেট্রেউসকে ৩ হাজার আটশো দ্রাখমা দিতে রাজি হয় নিকানটানিয়াসের বাবা। প্যাপিরাসটি মিশরের ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে আবিষ্কৃত হয় প্রায় একশো বছর আগে। এত দিন এর পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক প্যাপিরাসটি পাঠোদ্ধার করেছেন। দলের অন্যতম সদস্য প্রফেসর র‌্যাথবোনের দাবি, প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যে এই ধরনের ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। তাঁর মতে, খেলায় জয় সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত না থাকলেই এই ধরনের ফিক্সিং করা হত। বদলে পাওয়া যেত প্রচুর টাকা। তবে লিখিত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে এই ধরনের ফিক্সিং করার কারণ সম্পর্কে এখনও অন্ধকারে বিশেষজ্ঞরা।

মমির হৃদরোগে

হৃদরোগের আসল কারণ কী? বিশেষজ্ঞদের মতে জাঙ্ক ফুড, রেড মিট, আধুনিক অনিয়ন্ত্রিত জীবন, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, দূষণ— এগুলিই হৃদয়ের যাবতীয় রোগের মূল। এর ফলে হৃত্পিণ্ডের ধমনির ভিতরের দেওয়ালে বাড়তে থাকে ফ্যাটের পরিমাণ। শরীরে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ। ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধমনি দিয়ে প্রবাহিত রক্তের পরিমাণও কমতে থাকে। এর ফলে বাড়তে থাকে আথেরোসক্লেরোসিস জাতীয় হৃদরোগের সম্ভাবনা। কিন্তু শুধু কি আধুনিক মানুষেরই হৃদরোগ হয়? প্রাচীন কালে দূষণহীন পৃথিবী ও পুষ্টিকর আহারের জন্য তখনকার মানুষ কি রোগমুক্ত ছিল? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিশ্ব জুড়ে বেশ কিছু মমির উপর পরীক্ষা করেছিলেন এক দল বিজ্ঞানী। তাঁরা দেখেছেন সে যুগের মানুষও ভুগত বিভিন্ন হৃদরোগে।

সম্প্রতি মিশরে চার হাজার বছরের পুরনো এক মমির উপর পরীক্ষা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সিটি স্ক্যান করে মমির ধমনিতে ব্লক দেখতে পান তাঁরা। মিশরের যে অঞ্চল থেকে মমি উদ্ধার করা হয়েছিল সেই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা সম্বন্ধে নিশ্চিত ছিলেন না বিজ্ঞানীরা। আরও নিশ্চিত হতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মমির উপর পরীক্ষা করতে থাকেন তাঁরা। পরীক্ষায় ৩৮ শতাংশ মমির দেহে আথেরোসক্লেরোসিস জাতীয় হৃদয়ের রোগের অস্তিত্ব টের পান তাঁরা। মমিগুলির মধ্যে বেশ কিছু শিকারি সম্প্রদায়েরও ছিল যাঁদের জীবনধারণের জন্য শারীরিক কসরত্ করতেই হত। তাঁদেরও হৃদপিণ্ডের সমস্যা থাকায় বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে এই সমস্যা আদৌ আধুনিক কালের নয়, জিনগতও নয়। দলের অন্যতম সদস্য র‌্যানডাল টমসনের বলেন, “জাঙ্ক ফুড, রেড মিট খেলে এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করলেই যে হৃদয়ের রোগ হয়, সেই ধারণা আমরা ভেঙে দিয়েছি। প্রাচীন কালে জাঙ্ক ফুড না খেয়ে এবং যথেষ্ট পরিশ্রম করেও মানুষের এই রোগ হত।”

ঐতিহ্য

• ফিকাস বেঙ্গলেনসিস

শিবপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেন ভারতের মধ্যে বৃহত্তম। আজকের বোটানিক্যাল গার্ডেনের উত্পত্তি এক সাহেবের প্রচেষ্টায়। ১৭৮৬ সালে ফোর্ট উইলিয়ামের তত্কালীন সচিব কর্নেল রবার্ট কিড ৩১৭ একর জমির উপর প্রায় পঞ্চাশ হাজার প্রজাতির গাছ নিয়ে উদ্যানটি গড়ে তুলেছিলেন। সুবিশাল এই গার্ডেনের গৌরবকে আরও বহুগুণ বাড়িয়েছে বৃহত্তম ও প্রাচীনতম এক বট গাছ। ‘মোরেসি’ গোত্রের এই গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘ফিকাস বেঙ্গলেনসিস’। নানা গাছের এই সংগ্রহশালায় গাছটি কবে রোপন করা হয়েছিল কবে তা সঠিক ভাবে জানা না গেলেও ঊনবিংশ শতকের দেশি-বিদেশির লেখকদের রচনায় এ গাছ সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। দেশীয় প্রজাতির এই বট গাছের বর্তমান বয়স ২৫০ বছরেরও বেশি। প্রাচীনত্বের কারণে এর নাম উঠেছে গিনেস বুকেও। গাছটির বিস্তার সাড়ে চোদ্দ হাজার বর্গ মিটার। পরিধি ১.৮০ মিটার। শীর্ষ ভাগের পরিধি প্রায় ৫০০ মিটার। ঝুরিমূলের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। গাছের সবচেয়ে বড় শাখাটি আনুমানিক ২৫ মিটার লম্বা।

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ

পছন্দের বিছানা খোঁজে শিম্পাজিরা

আয় ঘুম যায় ঘুম... মানুষের মতোই রাতে রীতিমত নাক ডাকিয়ে ঘুমোতে আরামদায়ক বিছানাই পছন্দ শিম্পাজিদের। খুঁজে খুঁজে সেই সব গাছই এরা বাছে যেগুলির কাঠ হবে একাধারে শক্ত আবার নমনীয়। উগান্ডার ‘টোরো-সেমলিকি ওয়াইল্ডলাইফ রিসার্ভ’-এ সমীক্ষা চালিয়ে শিম্পাঞ্জিদের স্বভাব-বৈচিত্র্রের আর একটি অজানা দিক খুঁজে বার করলেন বিজ্ঞানীরা। নাভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডেভিড স্যামসন ও আমেরিকার ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কেভিন হান্টের এই গবেষণা প্রথম প্রকাশিত হয় ‘প্লস ওয়ান’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায়।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাসা তৈরির জন্য শিম্পাজিদের পছন্দ বিশেষ রকমের গাছ। আর এদের পছন্দের তালিকায় যে গাছটি প্রথমেই পড়ে সেটি উগান্ডার আয়রনউড। কেন পছন্দ এই বিশেষ গাছ? উত্তর খুঁজতে বিজ্ঞানীরা টোরো-সেমলিকি অভয়ারণ্যের বিভিন্ন গাছপালা নিয়ে পরীক্ষা চালালেন। শিম্পাজিরা যে ধরণের গাছে থাকতে পছন্দ করে সেই রকম সাতটি ভিন্ন প্রজাতির গাছের প্রায় ৩২৬টি শাখা-প্রশাখা সংগ্রহ করে তাদের আকার, ওজন, নমনীয়তা, পাতার আকৃতি, পরিধি ইত্যাদি নানা বৈশিষ্ট্য রেকর্ড করলেন। এর পরে বিজ্ঞানীরা শিম্পাজিদের বিভিন্ন বাসার নমুনা সংগ্রহ করলেন। এবং দেখা গেল, অন্তত ১৮৪৪টি বাসার মধ্যে ৭৩.৬ শতাংশ বাসাই তৈরি হয়েছে আয়রনউড দিয়ে। কী এমন মাহাত্ম্য আছে আয়রনউডের, যা খুঁতখুঁতে শিম্পাজিদেরও মন কেড়েছে। ব্যাখ্যা দিলেন, বিজ্ঞানী ডেভিড স্যামসন। পরীক্ষালব্ধ অন্যান্য গাছের তুলনায় আয়রনউড অনেক বেশি কাষ্ঠল, গাছগুলি ছোট ছোট ঘন পাতায় ঠাসা এবং ডালপালাও খুব নমনীয়। ফলে এক দিকে শক্ত হওয়ায় ঘুমোবার সময় গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম, অন্য দিকে, নমনীয়তার কারণে শিম্পাজিরা ইচ্ছেমতো ডালপালা বেঁকিয়ে পাতা দিয়ে ঘন বুনট তৈরি করে বাসা তৈরি করতে পারে। এই বিছানা হয় নরম ও আরামদায়ক। পাশাপাশি, ঘন ডালপালার জন্য রাত জাগা হিংস্র শ্বাপদকূলের নজর এড়ানোও খুব সহজ। স্যামসন জানালেন, পছন্দের এই বাসায় থুড়ি বিছানায় শিম্পাজিরা আট থেকে নয় ঘণ্টা সুখনিদ্রা দেয়। বিজ্ঞানীদের দাবি, মায়োসিন যুগে আনুমানিক দু’কোটি থেকে ৫০ লক্ষ বছর আগে বাঁদর প্রজাতির এই প্রাণীদের পূর্বজদের মধ্যেও এই একই গুণাবলী দেখা গিয়েছিল। ঘুমের যাতে ব্যাঘাত না হয় তাই প্রায়শই তারা এক গাছ থেকে অন্য গাছে বাসা পরিবর্তন করত।

ইউরোপিয়ান বেরি বা বেরি গাছের ‘গর্ভপাত’

না হয় চলতে ফিরতে পারে না, তা হলেও মানুষের চেয়ে এরা কম যায় কী সে। প্রকাশ করতে না পারলেও সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনা ইত্যাদি অনুভূতি যে উদ্ভিদকূলের মধ্যে আছে সে পরিচয় তো আগেই পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ভবিষ্যত পরিকল্পনা, জটিল থেকে জটিলতর পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা— এই সব গুণাবলীও যে গাছেদের মধ্যে আছে সম্প্রতি সেই বিষয় জ্ঞানলাভ করলেন একদল জার্মান বিজ্ঞানী। বারবেরিস ভুলগারিস বা ইউরোপিয়ান বেরি, চার মিটার উচ্চতার গুল্ম জাতীয় এই উদ্ভিদের মধ্যে এই বিশেষ ক্ষমতা আছে বলেই মনে করেন জার্মানের হেলমোজ সেন্টার ফর এনভায়োরনমেন্টাল রিসার্চ ও গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা। সংক্রমণ ঠেকাতে এই জাতীয় উদ্ভিদ প্রয়োজনে ‘ভ্রুণ হত্যা’ করতেও পিছপা হয় না। কী সেই পদ্ধতি? বিজ্ঞানীরা দেখলেন, গাছে কোনও পরজীবী আস্তানা গাড়লে তত্ক্ষণাত্ সেই বিপদের আঁচ পেয়ে যায় বারবেরিরা। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আগেই অপরিণত ভ্রুণ সমেত বীজ বা ক্ষেত্রবিশেষে গোটা ফলটাই নষ্ট করে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের।

বিজ্ঞানীরা জার্মানির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ২ হাজার বেরি ফলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালালেন। ফ্রুট ফ্লাই বা রাগোলেটিস মেইজেনি পরজীবীরা বেরি ফলেই তাদের ডিম পাড়ে। ডিম থেকে বেরোনো লার্ভা বীজ থেকে তাদের পুষ্টি সংগ্রহ করে। বিজ্ঞানীরা নমুনা ফলগুলির মধ্যে সংক্রামিত ফলগুলিকে বেছে নিলেন। এক একটি বেরি ফলে প্রধানত দু’টি করে বীজ থাকে। দেখা যায়, যে বীজটি লার্ভার পোষক ছিল বেরিরা আশ্চর্য উপায় ফলের মধ্যে শুধু সেই বীজটিকেই নষ্ট করে দিয়েছে, অন্য বীজটি অক্ষত আছে। বিজ্ঞানী ক্যাটরিন মেয়ের জানিয়েছেন, সব ক্ষেত্রেই বেরিরা বীজ নষ্ট করে না। যে সব বেরি ফলে দু֦’টি বীজ থাকে ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে বেরিরা শুধুমাত্র সংক্রামিত বীজটিই নষ্ট করে। আবার যদি ফলে মাত্র একটি বীজ থাকে সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ হলে গাছেরা বীজ নষ্ট না করে পরজীবীর লার্ভাটিকে নষ্ট করার চেষ্টা করে। কম্পিউটার মডেলের সাহায্যে আরও গভীরে পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা দেখলেন, এরা ভবিষ্যত আঁচ করতে পারে। অনেক নময়েই বীজ নষ্ট না করে গাছেরা অপেক্ষা করে কখন প্রাকৃতিক উপায় পরজীবী লার্ভাগুলি নষ্ট হবে। হেলমোজ সেন্টারের গবেষক হ্যানসহারমান জানালেন, এই ধরনের অনুমান ক্ষমতা এক মাত্র বারবেরিতেই প্রথম দেখা গিয়েছে।

ইউরোপিয়ান বেরি বা বারবেরি, বারবেরিস গোত্রের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। মূলত মধ্যে ও দক্ষিণ ইউরোপ, উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম আফ্রিকায় এদের নিবাস। উত্তর ইউরোপ, স্ক্যান্ডিনেভিয়া ও উত্তর আমেরিকাতেও এদের দেখা পাওয়া যায়। বেরি গমের ক্ষতিকারী রাস্ট ফানগাস ও ফ্রুট ফ্লাইয়ের মতো পরজীবীর পোষক উদ্ভিদ। তাই উপাদেয় খাদ্য হিসেবে বেরির চাহিদা থাকলেও, বিবিধ সংক্রমণ ঘটিত রোগের বিস্তার করায় ১৬৬০-এ ইউরোপে বেরি চাষ একপ্রকার বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। এমনকী, এই গাছের আমদানীর উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতেই বিবর্তনের ধারায় বংশপরম্পরায় বেরিরা এই বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। বেরিরই সমগোত্রীয় অরিগন গ্রেপ প্রায় ২০০ বছর ধরে ইউরোপের অধিবাসী হলেও এদের মধ্যে আত্মরক্ষার এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য এখনও দেখা যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা জারি রেখেছেন।

ছাগলের স্মৃতিশক্তি

‘মুর্খ গরুটা ন্যায়শাস্ত্র পড়েনি, তাই কলুর কাছে জব্দ আছে।’—সুকুমার রায়ের ‘গরুর বুদ্ধি’ গল্পটা কমবেশি সকলেরই পড়া। সাদাসিধে শান্তশিষ্ট নিরীহ ভটচাজ্জি পণ্ডিত গরুর বুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর আক্ষেপ ছিল, ‘মুর্খ’ গরুটা যদি টোলে দু’কলিও ন্যায়শাস্ত্র পড়ত তা হলে মানুষের দুষ্টু বুদ্ধির উপযুক্ত জবাব দিতে পারত। তবে গরুর বুদ্ধি না থাকলেও ছাগলদের যে জ্ঞানের নাড়ি বেশ টনটনে সেই পরিচয় পেলেন বিজ্ঞানীরা। নির্বোধ জ্ঞান করে যখন তখন ‘ছাগল’ বিশেষণ প্রয়োগ করে হেয় করার অভ্যাসটা হয়তো এ বার ছাড়তেই হবে। লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা দেখলেন শুধু বুদ্ধিই নয়, ছাগলদের স্মৃতিশক্তিও বেশ প্রখর। হাত ধরে যত্নসহকারে কিছু শিখিয়ে দিলে অনেক দিন পর্যন্ত এরা তা মনে রেখে দেয়। একটু বাবা বাছা করলেই শেখানো জিনিস আবার হুবহু উগরে দেয়। ‘কুইন মেরি স্কুল অফ বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড কেমিক্যাল সায়েন্স’-র গবেষক অ্যালান ম্যাকএলিগট ছাগলদের এ হেন বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়ে ‘ফ্রনটিয়ারস ইন জুলজি’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ছাগলদের ‘আই কিউ’ পরীক্ষার জন্য গবেষণাগারে একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়, ‘ফুড পাজল’। এই পরীক্ষায় ১২টি ‘শিক্ষিত’ থুড়ি ‘বুদ্ধিমান’ ছাগলকে খেলাটির নিয়মকানুন শেখানো হয়। খেলাটা খুবই সহজ। বাক্সের দরজা খুলে ভেতরে রাখা ফল খেতে হবে। এর জন্য ছাগলদের বাক্সের সঙ্গে লাগানো একটি দড়িতে টান দিতে হবে। ঠিকঠাক টান পড়লেই বাক্সের গায়ে লাগানো একটি হাতল উঠে আসবে। এ বারে সেই হাতলে চাপ দিয়ে বাক্স খুলে ফেলতে পারলেই কেল্লাফতে। ম্যাকএলিগট জানিয়েছেন, বাধ্য ছাত্রদের মতো ১২টির মধ্যে ৯টি শেখানো রাস্তায় বাক্স খুলে ফেলে, বাকি তিনটির মধ্যে দু’টি নিজেদের মাথা খাটিয়ে ‘শর্ট কার্ট’-এ কাজ সারতে গিয়ে ডাহা ফেল করে। আর মজার ব্যাপার হল, বারো নম্বর ছাগলটি অনেকটা ‘ছাগল’-এর মতোই ২২ বার টানা চেষ্টা করেও বাক্স খোলার কায়দা রপ্ত করতে পারে না। ঠিক দশ মাস পরে বিজ্ঞানীরা ৯টি কৃতী ছাত্রদের নিয়ে ফের একই পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, এক মিনিটেরও কম সময়ে প্রত্যেকে ঠিক আগের মতোই বাক্স খুলে ফেলছে। বিজ্ঞানী ইলোডি ব্রিফারের মতে, এই পরীক্ষাই প্রমাণ করে ছাগলদের স্মৃতিশক্তি সত্যই প্রশংসনীয়। তাই ন্যায়শাস্ত্র না পড়লেও ছাগলদের যে ষোলো আনা বুদ্ধি আছে তা তো স্বীকার করতেই হবে। আর সত্যি কথা বলতে কী, তাদের মাথায় যে নানাবিধ মতলব খেলে না তাই বা কে বলতে পারে!

পর্যটন কেন্দ্র

ব্রিলিয়ান্ট বলসোভার

ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ার কাউন্টির শহর বলসোভারের সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা করেছেন শহর কর্তৃপক্ষ। পর্যটকদের কাছে শহরের আকর্ষণ বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বলসোভার জেলা কাউন্সিল। শহরের অতীতের উপর ভর করেই উজ্জ্বল হবে এর আর্থিক ভবিষ্যত্— এমনটাই আশা তাদের।

পরিকল্পনা খাতে যে খরচ হবে, তার বেশির ভাগ অংশ মেটাবে ইইউ-এর ইউরোপিয়ান রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। শহর সাজাতে ফান্ডের তরফে ৭৫০ হাজার পাউন্ডের আর্থিক সাহায্য মিলবে। বলসোভার জেলা কাউন্সিলের নিজস্ব দফতর ছাড়াও হাই স্ট্রিট ইনোভেশন ফান্ডিং এবং ও‌ল্ড বলসোভার টাউন কাউন্সিলের থেকে বাকি অর্থ পাওয়া যাবে। এর জন্য বলসোভারকে ব্র্যান্ড হিসেবে বিপণন করবে শহর কর্তৃপক্ষ। বিপণনে সুবিধার জন্য শহরের নিজস্ব লোগো এবং ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যপূর্ণ জায়গাগুলির তালিকায় এই শহরের বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের নাম রয়েছে। শহর কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য সেই স্থানগুলিতে পর্যটকদের টেনে আনা। শহরের ক্যাসল স্ট্রিট, সেনোটাফ এলাকা, নিউ ব‌লসোভার মডেল ভিলেজ-সহ শহরের একাংশ ঘিরে বারোশ’ শতকের সিটি ওয়াল-ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চান শহর কর্তৃপক্ষ।

বলসোভারের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেনিস স্কিনার জানান, এখানে যথাযথ ভাবে বিনিয়োগের ফলে ট্যুরিস্টদের কাছে শহরকে মেলে ধরা সম্ভব হবে। বলসোভার দুর্গ দেখতে প্রতি বছর বহু মানুষ এখানে ছুটে আসেন। এখানে বিনিয়োগের ফলে শহরে ব্যবসা বাড়বে। লাভবান হবেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ভ্রমণার্থীরা এই ‘ব্রিলিয়ান্ট বলসোভার’-এ বেশ ভাল সময় কাটাতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

সাজবে হামটা

হিমাচল প্রদেশের কুলুতে পরিবেশ সহায়ক বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠছে। কুলুতে হামটা নামের এই নয়া জায়গাটি সাজাতে রাজ্যের পর্যটন দফতরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক, বন দফতর-সহ জেলা প্রশাসন।

তবে এ পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বহু। মানালি থেকে হামটা যাওয়ার রাস্তাটি সুগম নয়— প্রশাসনের তরফেও এ কথা স্বীকার করা হয়েছে। ৪০টি পাকদণ্ডীর এই রাস্তা যাতায়াতের পথে বড় বাধা। জেলাশাসক বিনয় ধীমান জানান, হামটায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে একটি কমিটি গড়ে তোলা হবে। যে হেতু এই রাস্তাটি জলবিদ্যুত্ প্রকল্পের (অ্যালেইন ডুহানগান হাইড্রোপাওয়ার লিমিটেড বা এডিএইচপিএল) অধীনে রয়েছে, সে কারণে প্রকল্পের রিপোর্ট এডিএইচপিএলএ-এর চূড়ান্ত সম্মতির জন্য তাঁদের কাছে পাঠানো হবে। এ ছাড়া, এথানে সুরক্ষা এবং পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়েও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে ব‌লে জানিয়েছেন জেলাশাসক। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য এলাকায় পর্যটকের সংখ্যাও বেঁধে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সোনগড়ে পর্যটক

দক্ষিণ গুজরাতের সোনগড়কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলায় উদ্যোগী হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মূলত বাঁশ উত্পাদন এবং ঘন জঙ্গলের জন্য পরিচিতি খাকলেও সোনগড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ সত্যিই নজরকাড়া। এ বার একে মূলধন করেই এখানে পর্যটন প্রসারের পরিকল্পনা নিয়েছে টাপি জেলা প্রশাসন। ডায়মন্ড সিটি থেকে প্রায় ৯৪ কিলোমিটার দূরে উকাই বাঁধ এ‌লাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ হলেও এখানকার সৌন্দর্যায়নে নজর দিয়েছে প্রশাসন। এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথাবার্তাও শুরু হয়েছে। এখানে যাতে পর্যটকরা আসতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হবে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

দক্ষিণ গুজরাতের জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পটগুলির মধ্যে সাপুতারা, মহল ইকো-হিল, ডন হিল, উইলসন হিল, তিথাল ও উভ্রাট সমুদ্রতট এবং পদমদুঙ্গারি বেশ পরিচিত। এ বার সেই তালিকায় যোগ হতে চলেছে সোনগড়ের নামও। নয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী এখানকার দোসওয়াড়া, ফোর্ট সোনগড়, নভি উকাই-এর উন্নয়ন করবে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক জে রঞ্জিতকুমার জানান, প্রাকৃতিক পরিবেশ ছাড়াও সোনগড়ের ইতিহাসও পর্যটনের প্রসারে সহায়ক হবে। তিনি জানিয়েছেন, গুজরাতের মানুষ ছাড়াও পড়শি রাজ্যের পর্যটকদের আকৃষ্ট করাই তাঁদের মূল লক্ষ্য।

পরিষেবা

এয়ার ইন্ডিয়ার নতুন প্রকল্প

‘গেট আপ ফ্রন্ট’ নামের নতুন এক প্রকল্প এনেছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই প্রকল্পে অন্তর্দেশীয় উড়ানের কোনও যাত্রী তাঁর এয়ার ইন্ডিয়ার ‘ইকনমি ক্লাস’-এর টিকিট ইচ্ছে এবং প্রয়োজন মতো ‘এগজিকিউটিভ ক্লাস’-এ ‘আপগ্রেড’ করে নিতে পারেন। অতিরিক্ত খরচ বলতে মাত্র ৫-৭ হাজার টাকা। তবে এগজিকিউটিভ ক্লাস-এ জায়গা না-থাকলে ইকনমি ক্লাসেই যাত্রা করতে হবে। দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদ-সহ মোট ৪৩টি শহরে যাওয়ার জন্য মিলবে এই সুযোগ। অফার চালু থাকবে ৩১ অক্টোবর ২০১৪ পর্যন্ত। ৭৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রতি টিকিটে অতিরিক্ত খরচা ৫ হাজার টাকা এবং দূরত্ব তার বেশি হলে প্রতি টিকিটে ৭ হাজার টাকা বাড়তি লাগবে। ধরা যাক কোনও যাত্রী দিল্লি থেকে মুম্বই যেতে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ‘ইকনমি ক্লাস’-এর টিকিট কেটেছেন। বিমানবন্দরে পৌঁছে দেখা গেল আরও ৭ হাজার টাকা দিলে ওই বিমানেরই ‘এগজিকিউটিভ ক্লাস’-এর টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। তখন তিনি তাঁর টিকিট যাত্রার আগে বিমানবন্দর থেকেই ‘আপগ্রেড’ করিয়ে নিতে পারবেন। ‘এগজিকিউটিভ ক্লাস’-এর টিকিটের প্রকৃত দাম যদি সেই সময় ২৫ হাজার টাকা হয়, তবে সেই যাত্রীর সাশ্রয় হবে প্রায় ১৩ হাজার টাকা।

ভারতীয় রেলের নতুন মোবাইল পরিষেবা

ট্রেন সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য যাত্রীদের হাতের মুঠোয় তুলে দিতে ‘সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফর্মেশন সিস্টেমস’ বা ‘ক্রিস’ নিয়ে এল নতুন এক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এর মাধ্যমে যাত্রীরা ট্রেনের সময়সূচি, নির্দিষ্ট ট্রেনের বর্তমান অবস্থান, সময়সূচির পরিবর্তন, কোনও কারণে বাতিল করা হয়েছে কি না, এমনই সব তথ্য মিলবে এক ক্লিকে। এর আগে ২০১৩-য় ‘ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়্যারি সিস্টেম’ চালু করেছিল রেল। গ্রাহকরা ১৩৯ ডায়াল করে বা www.trainenquiry.com-এ গিয়ে দেখে যেনে নিতে পারতেন ট্রেন সর্ম্পকে যাবতীয় তথ্য। গ্রাহকদের আরও সুবিধা করে দিতে এ বার মোবাইল ফোনে এই পরিষেবা চালু করা হয়েছে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে। মাইক্রোসফট-এর সাহায্যে এই পরিষেবা বাস্তবায়িত করেছে ‘ক্রিস’। আপাতত ‘উইনডোজ ৮’ সহায়ক ডেস্কটপ ও মোবাইল ফোনে মিলবে এই পরিষেবা। সব রকম মোবাইলেই এই পরিষেবা খুব শীঘ্রই পাওয়া যাবে।

২৬টি ‘সামার স্পেশাল’ ট্রেন

মুম্বই থেকে এর্নাকুলাম এবং কচুভেলি পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে ২৬টি নতুন ‘সামার স্পেশাল’ ট্রেন পরিষেবা শুরু করল ভারতীয় রেল। গন্তব্য কোনকান হলে এই পরিষেবা অতুলনীয়। প্রতি মঙ্গলবার লোকমান্য তিলক স্টেশন থেকে দুপুর ১ টা ২০তে ছাড়বে এই ট্রেন। এর্নাকুলাম পৌঁছবে পরের দিন সন্ধ্যা ৭ টায়। ২৯ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত মিলবে এই পরিষেবা। আবার ওই ট্রেনটি এর্নাকুলাম থেকে লোকমান্য তিলকের উদ্দেশে প্রতি বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় ছাড়বে। দু’দিন পর ভোরে গন্তব্যে পৌঁছবে। ৩০ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত পাওয়া যাবে এই পরিষেবা। অন্য দিকে, প্রতি শুক্রবার লোকমান্য তিলক স্টেশন থেকে দুপুর ২ টো ২০তে ছাড়বে আরও একটি ট্রেন। কচুভেলি পৌঁছবে পরের দিন রাত সাড়ে ১১টায়। ২ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত মিলবে এই পরিষেবা। আবার ওই ট্রেনটি কচুভেলি থেকে লোকমান্য তিলকের উদ্দেশে প্রতি রবিবার রাত ১২ টা ৩৫-এ ছাড়বে। গন্তব্যে পৌঁছনোর সময় পর দিন ভোর ৫ টা। ৪ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত পাওয়া যাবে এই পরিষেবা।

সংবাদ সংস্থা, ইন্টারনেট থেকে নেওয়া ও নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE