এই ছবি ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
কাচের কফিনে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে শোয়ানো রয়েছে মহিলাকে। লোলচর্ম, সাদা হয়ে যাওয়া চুল, চোখ দু’টি বোজা। ঘরের মাঝখানে রাখা সেই মৃতদেহের আশপাশে জড়ো হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু গোলমাল বাধল ওই পরিবারের সদস্যদের মুখের অভিব্যক্তিতে। তাঁদের প্রত্যেকেরই মুখে চওড়া হাসি। বাড়ির প্রবীণতমা সদস্যের মৃত্যুতে তাঁরা হাসছেন!
ছবিটি নেটমাধ্যমে দিয়েছিলেন ওই পরিবারেরই এক সদস্য। ছবিটি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। ছবিটি মৃতার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের তোলা। এমনিতে সাধারণ পারিবারিক ছবিতে হাসিমুখে থাকা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এই ছবিতে এক জন মৃত ব্যক্তি রয়েছেন। পরিবারের সদস্য যতই বৃদ্ধ হোন, তাঁর মৃত্যুতে আত্মীয়রা হাসেন কী করে প্রশ্ন তুলেছে নেটাগরিকদে একাংশ। যদিও পরিবারটির যুক্তি, ‘‘এতে আপত্তি কেন? আমরা আমাদের প্রিয় মানুষটিকে হাসিমুখে শেষ বিদায় জানাতে চেয়েছি। মৃত্যুতে সবসময় কাঁদতেই হবে, এ কথা কি কেউ বলে দিয়েছে?’’
পরিবারের এই যুক্তিতে সায় দিয়েছেন অনেকে। এমনকি কেরলের শিক্ষামন্ত্রী স্বয়ং সমর্থন করেছেন ওই পরিবারটিকে। তিনি নেটমাধ্যমেই লিখেছেন, ‘মৃত্যু অবশ্যই বেদনার। কিন্তু মৃত্যুর পর আসে প্রিয়জনকে শেষ বিদায় জানানোর পালা। যে মানুষটি সারা জীবন হাসিখুশি থাকতে চেয়েছেন, তাঁকে হাসিমুখে বিদায় জানানোর চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে?’
পরিবারটি অবশ্য এই বিতর্ক প্রসঙ্গে এক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে, অন্যরা কে কী বলছেন, তা নিয়ে তাঁরা বিন্দুমাত্র চিন্তিত নন। তাঁরা বলেন, ‘‘যাঁরা এই ছবির সমালোচনা করেছেন, তাঁরা মৃত্যুর পর শুধু অশ্রুই দেখেছেন। কিন্তু আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের হাসিমুখে বিদায় জানিয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, কেরলের ওই পরিবারের মৃতা সদস্যের নাম মারিয়াম্মা। তাঁর বয়স ৯৫। তাঁর ন’জন সন্তান এবং ১৯ জন নাতি-নাতনি রয়েছে। যাঁরা সাধারণত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও কাকতালীয় ভাবে তাঁর মৃত্যুর সময় দেশেই ছিলেন। মারিয়াম্মার মৃত্যুতে ওই বড় পরিবারটি একজোট হয়েছিল। তারা জানিয়েছে, রাত সওয়া দু’টো নাগাদ মহিলার মৃত্যুর পরের প্রার্থনা সম্পন্ন হওয়ার পরই তাঁরা ওই ছবিটি তুলেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy