Advertisement
০৫ মে ২০২৪

কিশোর খুনে অভিযুক্ত বাবা, সৎমা

শনিবার সকালে দাঁতনের মির্জাপুরে উদ্ধার হয় আকাশ ঘোষ (১৫) নামে ওই কিশোরের দেহ। তার মামা তপন দিন্দা মৃতের বাবা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, ঠাকুরদা দিবাকর ঘোষ, সৎমা সুপর্ণা ঘোষ-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

আকাশ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

আকাশ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

বছর তিনেক আগে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল মায়ের। তারপর বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন। তবে সৎ মায়ের সংসারে ঠাঁই হয়নি ছেলেটির। তাকে পাঠানো হয়েছিল স্কুলের হস্টেলে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সেই কিশোরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরে এ বার খুনের অভিযোগ উঠল। শনিবার সকালে দাঁতনের মির্জাপুরে উদ্ধার হয় আকাশ ঘোষ (১৫) নামে ওই কিশোরের দেহ। তার মামা তপন দিন্দা মৃতের বাবা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, ঠাকুরদা দিবাকর ঘোষ, সৎমা সুপর্ণা ঘোষ-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ তাদের মধ্যে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক আকাশের বাবা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

অরুয়া হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল আকাশ। বছর খানেক ধরে স্কুলের হস্টেলেই থাকত সে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার স্কুল থেকে বাবার সঙ্গে দাঁতনের মির্জাপুরের বাড়িতে এসেছিল আকাশ। তারপরই এ দিন সকালে দোতলার ঘরে গলায় মাফলারের ফাঁসে তার দেহ ঝুলতে দেখা যায়। আকাশের মামা তপন দিন্দার অভিযোগ, “আমার বোনকে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পুড়িয়ে মেরেছিল। তখন দুই ভাগ্নেকে দেখভালের আশ্বাস দিলেও পরে বোনের স্বামী আবার বিয়ে করে। আমার ধারণা, বাবা, সৎমা-সহ পরিবারের লোকেরাই বড় ভাগ্নে আকাশকে গলা টিপে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে।”

কিন্তু কেন খুন করা হল আকাশকে? তার মামার মতে, সম্পত্তি নিয়ে কোনও গোলমালের জন্যই সম্ভবত এই খুন। আকাশের ছোট ভাই প্রকাশ অবশ্য বাবার সঙ্গে থাকে। আর রবীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় স্ত্রীর তিন মাসের কন্যাসন্তান রয়েছে।

২০১৪ সালে শ্বশুরবাড়িতেই পুড়ে মারা যান আকাশের মা শর্মিলা ঘোষ। তারপর তাঁর বড় ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এলাকায় শোরগোল পড়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে এ-ও জানা গিয়েছে যে, দিন দু’য়েক আগে স্কুলের এলাকায় একটি গোলমালে জড়িয়ে পড়েছিল আকাশ-সহ কয়েকজন ছাত্র। তার প্রেক্ষিতে আকাশ-সহ ওই ছাত্রদের অভিভাবককে শুক্রবার ডেকে পাঠান স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাধ্যমিকের টেস্ট হয়ে গিয়েছে। তাই বাবার সঙ্গে আকাশকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলের এই গোলমালের কারণে আকাশ আত্মহত্যা করেছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE