E-Paper

‘পকেটমানি’ জমিয়ে যক্ষ্মা রোগীর দায়িত্বে বালক

যক্ষ্মা আক্রান্ত দুঃস্থ রোগীদের সাহায্যে ‘নিক্ষয় মিত্র’ নামে একটি কর্মসূচি নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এই কর্মসূচিতে রোগীকে ওষুধ কেনার জন্য আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:০৬
যক্ষ্মা রোগী।

যক্ষ্মা রোগী। প্রতীকী চিত্র।

বয়স সবে এগারো পেরিয়েছে। এর মধ্যেই বড় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে ভাস্বর। দমদমের বাসিন্দা ভাস্বর কুলপির এক যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীর পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে। আগামী এক বছর প্রতিমাসে নিজের পকেটমানি বাঁচিয়ে এক হাজার টাকা করে ওই রোগীকে পাঠাবে ভাস্বর।

বুধবার ভাস্বরের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে ছবি দিয়ে টুইট করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মালবীয়।

যক্ষ্মা আক্রান্ত দুঃস্থ রোগীদের সাহায্যে ‘নিক্ষয় মিত্র’ নামে একটি কর্মসূচি নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এই কর্মসূচিতে রোগীকে ওষুধ কেনার জন্য আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে। পাশাপাশি, আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল মানুষেরা দুঃস্থ যক্ষ্মা রোগীদের পুষ্টির দায়িত্ব নিচ্ছেন।

এই রাজ্যে বিভিন্ন ব্লকে পালিত হচ্ছে কর্মসূচি। কুলপি ব্লক হাসপাতালেও মাস কয়েক আগে এলাকার ৭৮ জন দুঃস্থ যক্ষ্মা রোগীকে চিহ্নিত করে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ করা হয়।

ভাস্বরের বাবা সুদীপ্ত দীর্ঘ দিন ধরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা-সংক্রান্ত কাজে যুক্ত। বহু চিকিৎসকের সঙ্গে পরিচয় রয়েছে। সেই সূত্রেই তিনি কুলপি গ্রামীণ হাসপাতালের এই কর্মসূচির কথা জানতে পারেন। ছেলেকে নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান।

সুদীপ্ত বলেন, “দিনকয়েক আগেই ছেলের উপনয়ন হয়েছে। আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছে। সেখানে অল্প কিছু সঞ্চয় করেছে ও। তাই ওকেই বলি, ওর জমানো টাকায় একজন রোগীর দায়িত্ব নিতে। ছেলে রাজি হয়ে যায়। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলি। উনি ব্যবস্থা করে দেন। তারপর থেকে ওর অ্যাকাউন্ট থেকে আমিই টাকা পৌঁছে দিয়ে আসি বিএমওএইচের হাতে।”

তিনি আরও বলেন, “বাঁচো এবং বাঁচতে দাও— এটাই মূল কথা। এর উপরেই তো পৃথিবী চলছে। আমরাও সেটাই করার চেষ্টা করেছি আমাদের মতো করে।”

সুদীপ্ত জানান, তাঁর বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদেরও এগিয়ে এসে যক্ষ্মা রোগীদের দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করছেন তিনি।

সল্টলেকের একটি বেসরকারি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে ভাস্বর। তার কথায়, “বাবার কাছে শুনেছি, পুষ্টির অভাবেই এই রোগ হয়। ভাল খাবার-দাবার খেলেই ওঁরা সেরে উঠবেন। সে কারণেই আমি একজনকে ভাল খাবার পেতে সাহায্য করছি। আশা করি উনি খুব তাড়াতাড়ি সেরে উঠবেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tuberculosis dumdum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy