Advertisement
১৯ মে ২০২৪

জাল ভোটার কার্ড তৈরি, বনগাঁয় ধৃত ২

জাল ভারতীয় ভোটার পরিচয় তৈরি করে মোটা টাকায় বিক্রির বেআইনি কারবারের হদিস মিলল বনগাঁয়।  সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।

ধৃত: দুই অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: দুই অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

জাল ভারতীয় ভোটার পরিচয় তৈরি করে মোটা টাকায় বিক্রির বেআইনি কারবারের হদিস মিলল বনগাঁয়। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অমিত রায় ও হাসানুর মণ্ডল। বাড়ি বনগাঁর খয়রামারি ও গোপালনগর থানার গঙ্গানন্দপুর এলাকায়। ধৃতদের কাছ থেকে দেড়শো ভুয়ো ভোটার পরিচয়পত্র, ২২টি জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ১৬টি হলোগ্রাম ছাড়া ভোটার কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে প্রিন্টার মেশিন, ল্যামিনেশন মেশিন, স্ক্যানার, পাঞ্চিং মেশিন-সহ আরও কিছু সরঞ্জাম। এ ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে বনগাঁর মহকুমাশাসকের রাবার স্ট্যাম্প।

পুলিশের দাবি, জেরায় অমিত জানিয়েছে, সে বিজেপির যুব মোর্চার বনগাঁ শহর পুর মণ্ডলের প্রাক্তন সহ সভাপতি।

যদিও বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, অমিত নামের কেউ যুব মোর্চার সহ সভাপতি পদে কখন ছিলেন না। জেলা বিজেপি যুব মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি দেবর্ষি বিশ্বাস বলেন, ‘‘দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করতে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শহরের রেটপাড়া এলাকায় অমিতের ফটোকপি ও ছবি তোলার দোকান রয়েছে।দিন কয়েক আগে বনগাঁ থানার পুলিশের কাছে খবর আসে, ওই দোকানে জাল ভোটার কার্ড তৈরি করা হয়। সোমবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অমিতকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। মালপত্রও উদ্ধার হয়। দোকানটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।

অমিতকে জেরা করে পুলিশ হাসানুরের নাম জানতে পারে। বনগাঁ থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজ বলেন, ‘‘ওই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। মাস ছয়েক ধরে এই কাজে জড়িয়েছিলে বলে অমিত জানিয়েছে।’’ তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, বাংলাদেশ থেকে বেআইনি ভাবে এ দেশে আসা লোকজনের কাছে চক্রের সদস্যেরা মোটা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি বিক্রি করে। ওই কাজের জন্য চক্রটি মৃত ব্যক্তিদের ভোটার কার্ড সংগ্রহ করে। সেই সব কার্ড থেকে হলোগ্রাম খুলে নেওয়া হয়। কেউ ভোটার কার্ড করতে এলে, প্রথমে কম্পিউটারে যাবতীয় তথ্য টাইপ করে একটি কার্ডে লেখা হয়। সেখানে হলোগ্রাম লাগিয়ে ফটোকপি করে তা ল্যামিনেশন করানো হয়। পাশাপাশি, চক্রটি যাদের ভোটার কার্ডে তথ্য ভুল থাকে, সে সব ঠিক করে নতুন কার্ড করে দেওয়ার কাজও করে। পুলিশের দাবি, আদালতের কয়েকজন মুহুরি তাদের কাছে ভুয়ো ভোটার কার্ড তৈরির বরাত দেয়। এই দাাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশের কাছ থেকে ওই চক্রের বিষয়ে জেনে আইনগত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে এফআইআর করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fake Voter Card Fake Driving Lisence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE