Advertisement
E-Paper

চাকরির নামে ‘প্রতারণা’, গ্রেফতার ২

বনগাঁর সিকদারপল্লির এই ঘটনায় মৃন্ময় বসু নামে বনগাঁ আদালতের ওই আইনজীবীর পক্ষ নিয়ে সোমবার কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের আইনজীবীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০১:২৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি দেওয়া হবে, এমনটাই দাবি করেছিল সংস্থা। সেই মতো চলছিল ইন্টারভিউ। এমন সময়ে হানা দিল পুলিশ। ধরা পড়লেন এক আইনজীবী-সহ দু’জন।

বনগাঁর সিকদারপল্লির এই ঘটনায় মৃন্ময় বসু নামে বনগাঁ আদালতের ওই আইনজীবীর পক্ষ নিয়ে সোমবার কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের আইনজীবীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, ই-ডিজিট্যাল কর্পোরেশন ও সেন্ট্রাল জুনিয়র স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সহায়ক-সহায়িকা পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে একটি প্রতারণা চক্র চলছিল বলে অভিযোগ আসে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রবিবার সিকদারপল্লি এসেছিল পুলিশ।

‘ইন্টারভিউ’ দিতে আসা কয়েকজন যুবক-যুবতীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। এরপরেই মৃন্ময় বসু ও রাজা মৈত্র নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। মৃন্ময়বাবুর বাড়িতেই অফিস খোলা হয়েছিল। সেখানেই ছেলেমেয়েরা ইন্টারভিউ দিতে আসতেন। সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সংস্থাটি তাদের সাইটে দাবি করেছিল, ভারত সরকার ও এমএসএমই-র স্বীকৃতি আছে তাদের।

সোমবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃত দু’জনকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এ দিকে, গ্রেফতারির প্রতিবাদে বনগাঁ ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সোমবার আদালতে কর্মবিরতি পালন করা হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় বহু মানুষকে। ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দাস বলেন, ‘‘মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট ট্রায়ালভুক্ত। তদন্তের জন্য পুলিশ নোটিস দিয়ে আইনজীবীকে ডেকে পাঠাতে পারত। তদন্তে আইনজীবী সমস্ত রকম সহযোগিতাও করতেন। কিন্তু তা না করে পুলিশ সরাসরি গ্রেফতার করল।’’

যদিও পুলিশ জানিয়েছে, আইনজীবীকে গ্রেফতার করা না হলে তিনি পালিয়ে যেতে পারতেন। নথিপত্র নষ্ট করতে পারতেন। তা ছাড়া, ধৃতদের কয়েক ঘণ্টা সময়ও দেওয়া হয়েছিল বৈধ নথিপত্র দেখানোর জন্য। তাঁরা তা দেখাতে পারেননি। ধৃতদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বহু মানুষ আমাকে ওই চক্রটি সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। পুলিশকে বলেছিলাম ব্যবস্থা নিতে। প্রতারণার হাত থেকে অনেক মানুষ রক্ষা পেলেন।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে সংবাদপত্রে ও নিজস্ব ওয়েবসাইটে চাকরির জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিল সংস্থাটি। তাতে লেখা হয়, চাকরির পদ ১৪ হাজার ২৬৫টি। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। সাধারণ জাতির প্রার্থীদের জন্য ১৮০ টাকা ও সংরক্ষিত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে মাথা পিছু ১৩০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার যুবক-যুবতী আবেদন করেছিলেন টাকা জমা দিয়ে। একটি অনলাইন ওয়ালেটে টাকা জমা করা হয়েছিল। সেই টাকা জমা হয় একটি ট্রাস্টিবোর্ডে। ওই বোর্ডের সদস্য পাঁচজন। রাজা মৈত্র বোর্ডের কর্ণধার।

পুলিশের দাবি, চাকরির আবেদন করেছিলেন ১ লক্ষ ২৬ হাজার জন। এ বাবদ প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল। জানুয়ারি মাসে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারা ওই সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন বন্ধ করে দেয়। ওই থানাও তদন্ত শুরু করে। লেনদেন বন্ধ হওয়ার ৮৪ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ হওয়া ঠেকানো গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

Fraud Job Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy