আসমত শেখ।
ভাগ্নিকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিল তার নিজের মামা।
সাত বছরের পরিচারিকাকে নির্যাতনের অভিযোগে বুধবার বারুইপুর থানার মদারহাট এলাকা থেকে অঞ্জু মিনা নামে শ্রম দফতরের এক আধিকারিককে গ্রেফতার করেছিল বারুইপুর মহিলা থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা অফিসারেরা দাবি করেছেন, মাস পাঁচেক আগে ভাঙড় থানার চন্দনেশ্বরের আসমত শেখ "নামে এক ব্যক্তি তার ভাগ্নি, ওই পরিচারিকাকে অঞ্জুর কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল।
গত বুধবার গৃহকর্ত্রীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে মরিয়া হয়ে গিয়েছিল সাত বছরের ওই বালিকা।
ওই দিন সকালে অঞ্জু যখন স্নান করতে গিয়েছিলেন, সেই সময়ে সে জানলার ফাঁক গলে জলের পাইপ বেয়ে কোনও ভাবে দোতলা থেকে নেমে আসে। এর পরে বাড়ির পাশে একটি স্কুলে গিয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। স্কুলেরই এক শিক্ষক শিশুটির থেকে পুরো ঘটনা শুনে বারুইপুর মহিলা থানায় খবর দেন। থানার ওসি কাকলি ঘোষ কুন্ডু সব অভিযোগ শোনার পরে মদারহাটের বাড়ি থেকে অঞ্জুকে গ্রেফতার করেন।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মেয়েটির সারা গায়ে কালসিটে ছিল। হাতের কয়েকটি আঙুল এবং তালুতে ধারালো বস্তু দিয়ে চিরে দেওয়ার একাধিক ক্ষতচিহ্নও মিলেছিল। শিশুটির অভিযোগ অনুযায়ী, কোনও কাজ করতে না পারলে প্রথমে তাকে কান ধরে ওঠবোস করানো হত। তার পরে লাঠি দিয়ে মারধর করা হত। অনেক সময়ে ব্লেড দিয়ে হাতের তালুও চিরে দেওয়া হত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকারা পাঁচ বোন, এক ভাই। তাদের বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অভাবের সংসারে ঠিক মতো খাবার জোটে না। শিশুটির মামা আসমতের সঙ্গে পরিচয় ছিল অঞ্জুর। তিনি আসমতকে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে কাজের জন্য পরিচারিকার দরকার। এর পরেই নিজের দিদির কাছে গিয়ে ভাগ্নিকে নিয়ে আসে আসমত। অঞ্জুর কাছে তাকে নিয়ে যায়।
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় আসমত জানিয়েছে, ভাগ্নিকে আনার পরে অঞ্জু তার হাতে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বলেছিলেন, এখন থেকে ওই নাবালিকার সব দায়িত্ব তাঁর। আসমতকে আর ভাগ্নির খোঁজ নিতে আসতে হবে না। তার পর থেকে আর অঞ্জুর বাড়িতে যায়নি সে।
তদন্তকারীদের কথায়, ভাগ্নিকে বিক্রি করার অভিযোগে মামাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অঞ্জু ও আসমত আপাতত জেল হেফাজতে রয়েছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার মুনমুন চৌধুরী বলেন, ‘‘অঞ্জু নিজে শ্রম দফতরের আধিকারিক। তিনিই শ্রম আইন না মেনে নাবালিকা পরিচারিকাকে দিয়ে বাড়ির কাজ করাচ্ছিলেন। আমরা পুরো বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি। প্রয়োজনে শ্রম দফতরকেও গোটা ঘটনা জানানো হবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুটিকে একটি হোমে রাখা হয়েছে। বারুইপুর মহিলা থানার ওসি কাকলি ঘোষ কুন্ডু বলেন, ‘‘আমরা ওই মেয়েটির পড়াশোনার ব্যবস্থা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy