Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ডাস্টবিনে ফেলে আসা লটারির টিকিটে উঠল এক কোটি টাকা

আনাজ বিক্রেতা লটারির টিকিট কেটে পেলেন কোটি টাকা। তবে আশা ছেড়ে দিয়ে টিকিট ফেলে এসেছিলেন ডাস্টবিনে। সেখান থেকে জলে ভেজা টিকিট উদ্ধার হয়েছে। এ বার ভাগ্যের চাকা ঘোরার পালা সাদেকের।

মহানন্দে: সাদেক। নিজস্ব চিত্র

মহানন্দে: সাদেক। নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫৮
Share: Save:

রাতারাতি রাজা!

আনাজ বিক্রেতা লটারির টিকিট কেটে পেলেন কোটি টাকা। তবে আশা ছেড়ে দিয়ে টিকিট ফেলে এসেছিলেন ডাস্টবিনে। সেখান থেকে জলে ভেজা টিকিট উদ্ধার হয়েছে। এ বার ভাগ্যের চাকা ঘোরার পালা সাদেকের।

ভাঙড়ের কাশীপুর থানার কাশীপুরের সর্দারপাড়ার বাসিন্দা সাদেক মোল্লা নতুন বছরের প্রথম দিনেই নাগাল্যান্ড রাজ্য লটারির ৬ টাকা মূল্যের ৫টি টিকিট কাটেন। সেই টিকিট কেটেই রাতারাতি কোটিপতি হয়েছেন। একটি টিকিটে প্রথম পুরস্কারের ১ কোটি টাকা ছাড়াও বাকি চারটি টিকিটে ১ লক্ষ টাকা করে পেয়েছেন। তাঁকে দেখতে এখন ভিড় করছেন বহু মানুষ। স্থানীয় লটারির দোকানগুলিতেও বিক্রি বেড়ে গিয়েছে হঠাৎ করে। গরিব পরিবারের ছেলে সাদেক বহু কষ্টে ছোটখাট দোতলা বাড়ি করেছেন। বড় ছেলে রাজেশ বাবাকে ব্যবসার কাজে সহযোগিতা করেন। গত বৃহস্পতিবার আনাজ বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে দমদমের কাঠগোলা এলাকা থেকে নাগাল্যান্ড রাজ্য লটারি ৫টি টিকিট কেনেন সাদেক। পরে বিক্রেতার কাছে খেলার ফলাফল জানতে চান। পুরস্কার পাননি বলেই শোনেন। পরে কাশীপুরের একটি টিকিটের দোকানে গিয়েও ফলাফল জানতে না পেরে টিকিট ডাস্টবিনে ফেলে বাড়ি চলে আসেন।

পর দিন দমদমে গেলে ওই টিকিট বিক্রেতা তাঁকে জানান, ১ কোটি টাকা জিতেছেন সাদেক। তড়িঘড়ি বাড়িতে আসেন তিনি। কাশীপুর বাজারে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া টিকিট পাগলের মতো খুঁজতে থাকেন। পরে জলে ভেজা টিকিটগুলো খুঁজে পেয়েও যান। এ বার আনন্দে চিৎকার করতে করতে ফের দমদমে ছোটেন।

তবে এত টাকা জিতে পুরোপুরি স্বস্তিতে নেই পরিবার। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। কাশীপুর থানার ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘পরিবারটি আমাদের কাছে নিরাপত্তা চাইলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা করব।’’

সমস্যা আছে আরও। ব্যাঙ্কে কোনও অ্যাকাউন্টই নেই তাঁর, নেই প্যান কার্ড। বিষয়টি জানতে পেরে এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সাদেকের স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, ‘‘অভাবের সংসারে অনেক কষ্টে তিন ছেলেমেয়েকে বড় করছি। বড় ছেলে রাজেশকে টাকার অভাবে পড়াতে পারিনি। এ বার আল্লা মুখ তুলে চেয়েছেন। ছোট ছেলে রাকেশকে ভাল স্কুলে পড়াব।’’

সাদেক ইতিমধ্যেই একটি গাড়ি বুক করে ফেলেছেন। বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদের মধ্যে দেদার মিষ্টি, বিরিয়ানি বিতরণ করছেন। বললেন, ‘‘ছোট থেকে অনেক কষ্ট করেছি। অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু টাকার অভাবে তা পূরণ করতে পারছিলাম না। লটারি টিকিট কেটে আগে কয়েকবার সামান্য কিছু টাকা জিতেছিলাম। এ বার এমন কাণ্ড ঘটবে, ভাবতেও পারিনি।’’

সাদেকের কোটিপতি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার লটারির টিকিটের দোকানগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। কাশীপুর বাজারের লটারির টিকিট বিক্রেতা আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘আগে দৈনিক ২০০-৩০০ টিকিট বিক্রি হতো। শনিবার সকালের মধ্যেই দু’হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lottery Crore Rich
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE