সিট বেল্ট না পরায় জরিমানা করল পুলিশ। এমন ঘটনা রোজই ঘটে শহর-গ্রামের নানা প্রান্তে। তবে কি না, যাঁকে জরিমানা করা হচ্ছিল, তিনি চালাচ্ছিলেন মোটর বাইক। গাড়িই নেই তাঁর!
নিউটাউনের বাসিন্দা, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী শুভজিৎ মাঝির সঙ্গে ঘটেছে এমন কাণ্ড। শুভজিতের দাবি, সম্প্রতি পরিবহণ দফতরের তরফে ই-চালান পাঠিয়ে ১০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে তাঁকে। ক্যানিং থানা এলাকায় মোটরবাইক চালানোর সময়ে সিট বেল্ট না পরার জন্যই ক্যানিং থানার পুলিশের তরফে জরিমানা করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে ই-চালানে।
শুভজিৎ জানান, বাইক নিয়ে কখনও ক্যানিংয়ে যাননি তিনি। এমনকী, চার চাকা গাড়িও নেই তাঁর। পুলিশের অবশ্য দাবি, আসলে জরিমানা করা হয়েছে নিয়ম ভাঙা একটি মিনি ট্রাককে। সেটিতে ভুয়ো নম্বর প্লেট লাগানো ছিল। সেই নম্বর আবার শুভজিতের বাইকের। ফলে ই-চালানের মাধ্যমে জরিমানার নির্দেশ পেয়েছেন শুভজিৎ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যানিংয়ের কালীমন্দির এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন পুলিশকর্মীরা। সে সময়ে একটি মিনি ট্রাককে আটক করা হয়। ট্রাকের চালক ও খালাসি সিট বেল্ট না পড়ে গাড়ি চালানোয় তাঁদের মোটর ভেহিকেলস আইন ১৯৪ (বি) ধারায় জরিমানা করে পুলিশ। ট্রাকের নম্বর ধরে
শুভজিতের পৌঁছে যায় জরিমানার নোটিস।
নোটিস পেয়ে শুভজিৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় সে কথা লেখেন। খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। খোঁজ নিয়ে পুলিশ ভুয়ো নম্বর প্লেটের বিষয়ে জানতে পারে। ট্রাকটির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। আপাতত শুভজিতকে জরিমানা দিতে বারণ করা হয়েছে। বিষয়টি কী ভাবে সংশোধন করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “এই ধরনের অনেক ভুয়ো নম্বর প্লেটযুক্ত গাড়ি শহরতলির বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ গাড়ি ধরে জরিমানা করলে, সেই নম্বর প্লেটের আসল মালিকের কাছে জরিমানা পৌঁছচ্ছে।”
শুভজিৎ বলেন, “এ রকম হলে তো সাধারণ মানুষ বিনা দোষে ঝামেলায় পড়বেন। পুলিশ যখন চালান কাটছে, তখনই এ বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত।”
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, অনলাইনের সব তথ্যই সঙ্গে সঙ্গে জানা যায় মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে। তা ছাড়া, যে মেশিনের সাহায্যে স্পট ফাইন করা হয়, তাতেও সমস্ত তথ্য পাওয়া যায়। যে কোনও গাড়ির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আগে একটু সতর্ক হলেই এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিবহণ দফতরের অতিরিক্ত আধিকারিক সুব্রত নস্কর বলেন, “ভুয়ো গাড়ি বা নম্বর প্লেট ধরার ক্ষেত্রে অভিযোগ অনুযায়ী পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু জরিমানা করার ক্ষেত্রে যিনি জরিমানা করছেন, তিনি সঠিক ভাবে যাচাই করলেই এই সমস্যা এড়ানো যাবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)