Advertisement
২৩ মে ২০২৪
Firing at Basirhat

দু’হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাথাড়ি গুলি, জখম

জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

উদ্ধার হওয়া গুলির খোল।

উদ্ধার হওয়া গুলির খোল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২৩
Share: Save:

দুষ্কৃতীর দু’হাতে ধরা আগ্নেয়াস্ত্র। ছোড়া হচ্ছে এলোপাথাড়ি গুলি। প্রাণ বাঁচাতে কে কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না। আচমকা একটি গুলি গিয়ে বিঁধল এক যুবকের কোমরের নীচে।

সিনেমা নয়, রবিবার রাতে বসিরহাটের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফাল্গুনী মোড়ের কাছে একটি মিষ্টির দোকানে এ ঘটনার সাক্ষী থাকলেন সেখানকার কর্মী এবং স্থানীয় বেশ কিছু মানুষ। জখম নবীন দাস পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি দোকানে মি্ষ্টি কিনতে ঢুকে জখম হন। তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মিষ্টির দোকানে বচসার জেরে দুষ্কৃতী দলের পান্ডা ওই কা্ণ্ড করে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।

জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেও পুলিশের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ পাঁচটি গুলির খোল উদ্ধার করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাইকে চেপে তিন জন ওই মিষ্টির দোকানে আসে। তারা মত্ত অবস্থায় ছিল। দোকানে ঢুকে মিষ্টির গুণগত মান নিয়ে তার মালিক এবং কর্মীদের সঙ্গে তারা বচসায় জড়ায়। শুরু হয় হাতাহাতিও। তারা দোকান-মালিককে আক্রমণ করতে উদ্যত হলে কর্মীরা রুখে দাঁড়ান। চেঁচামেচিতে দোকানের সামনে ভিড় জমে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে দোকান ছেড়ে চলে যায় ওই তিন জন। কিছুক্ষণ পরেই ফের বাইকে চেপে আরও কয়েকজনক জুটিয়ে তারা হাজির হয় দোকানের সামনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুষ্কৃতী দলের পান্ডা গালিগালাজ করতে করতে দু’হাতে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। দোকানের সিসি ক্যামেরাও ভেঙে দেওয়া হয়। গুলিতে নবীন জখম হতেই দুষ্কৃতীরা পালায়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বসিরহাট মহকুমা জুড়ে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। দিনকয়েক আগে ঘিপুকুরের কাছে এক ব্যবসায়ীর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই হয়। পিঁফা অঞ্চলেও মাছ ব্যবসায়ীদের বন্দুক দেখিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও বেশ কয়েক জায়গায় চুরি-ছিনতাই হয়েছে। বাঁশঝাড়িতে খুনের ঘটনাও ঘটেছে সম্প্রতি। অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীরা ধরা পড়লেও রাজনৈতিক মদতে ছাড়া পেয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

ঘটনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের আমলে সর্বত্র দুষ্কৃতী উপদ্রব বেড়েছে। এই ঘটনায় অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করা না হলে বড় আন্দোলনে নামব।”

তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় কাউন্সিলর ভাস্কর মিত্র বলেন, “আমার ওয়ার্ডে এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। পুলিশ তদন্ত
করছে। সমাজবিরোধীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও সব জানানো হয়েছে।”

ছবি: নির্মল বসু

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE