Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ধর্ষণ করে দেহ বাড়িতে এনে ঝুলিয়ে দিয়েছিল নিরঞ্জন

পুলিশ জানতে পারে, মেয়েটি চিৎকার করে বলেছিল, সে ঘটনার কথা লোকজনকে জানিয়ে দেবে। সেই রাগেই নিরঞ্জন মেয়েটিকে ওড়নার ফাঁস গলায় জড়িয়ে খুন করে।

ধৃত:  নিরঞ্জন মণ্ডল।

ধৃত:  নিরঞ্জন মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

রাতে বাড়ি ছিলেন না বাবা। ভোরের দিকে ফিরে দেখেন, বারান্দার কড়িকাঠ থেকে ঝুলছে মেয়ের দেহ। পা মাটিতে হাঁটু-মোড়া অবস্থায় ঠেকে আছে। বুকে ক্ষতচিহ্ন। পায়ে কাদা লেগে। জুতো ছিল না। নিম্নাঙ্গে পোশাকও ছিল না।

আত্মহত্যা বলে মানতে চায়নি পরিবার। ধর্ষণ করে মেয়েকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। ২০০৩ সালের ৯ জুন গাইঘাটার শ্রীপুর এলাকার ওই ঘটনায় ধরা পড়ে নিরঞ্জন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। শুক্রবার বনগাঁ আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক-১ বিনয়কুমার পাঠকের এজলাসে মামলার রায় হয়েছে। নিরঞ্জনকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ শুনিয়েছেন বিচারক।

কী ভাবে ঘটল কাণ্ড?

পুলিশ ও মামলার সরকারি আইনজীবী সমীর দাস জানিয়েছেন, বছর সতেরোর মেয়েটি সে বারই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। লেখাপড়ায় ভাল ছিল। ঘটনার দিন মনসা পুজোর মেলায় গিয়েছিল। তার দাদা মনোহারি দোকান দিয়েছিলেন। সেখানে ছিল মেয়েটির দূর সম্পর্কের আত্মীয় নিরঞ্জন। তার বাড়ি গাইঘাটার কুলঝটি এলাকায়। দাদা রাতে দোকানেই থেকে যাবেন বলে নিরঞ্জনকে বলেন, বোনকে বাড়ি পৌঁছে দিতে।

রাত তখন প্রায় ৩টে। নিরঞ্জনের সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার পথে গ্রামের রাস্তার পাশে ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে টেনে নিয়ে গিয়ে সে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। নিরঞ্জন পরে পুলিশকে জানায়, আরও এক স্থানীয় যুবক এসে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছিল। তবে তার আর হদিস করতে পারেননি তদন্তকারীরা।

পুলিশ জানতে পারে, মেয়েটি চিৎকার করে বলেছিল, সে ঘটনার কথা লোকজনকে জানিয়ে দেবে। সেই রাগেই নিরঞ্জন মেয়েটিকে ওড়নার ফাঁস গলায় জড়িয়ে খুন করে।

সমীর জানিয়েছেন, কাছেই ছিল মেয়েটির বাড়ি। ঝোপ থেকে দেহ টেনে-হিঁচড়ে বের করে সেখানে নিয়ে যায় নিরঞ্জন। ওড়নার ফাঁস দিয়েই দেহ ঝুলিয়ে দেয় বাড়ির বারান্দায়। সেখান থেকে আসার সময়ে মেয়েটির এক বৌদি দেখে ফেলেন নিরঞ্জনকে। তাতে অপরাধীকে চিহ্নিত করতে সুবিধা হয়েছিল পুলিশের। ২০ জুন ধরা পড়ে নিরঞ্জন। এ দিন নিরঞ্জনের আত্মীয়-স্বজনেরাও এসেছিলেন আদালতে। তাঁদের দাবি, নিরঞ্জন চক্রান্তের শিকার। নাবালিকার বাবা অবশ্য বলেন, ‘‘এত দিনে মেয়ের আত্মা একটু শান্তি পেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Accused Arrest Confess Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE