বনগাঁর সাহেব পুকুর সংস্কারে উদ্যোগী হল প্রশাসন। প্রাচীন এই জলাশয় শহরের অন্যতম ঐতিহ্য। পুকুরটিকে ঘিরে আছে মহকুমা আদালত, মহকুমাশাসকের দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, উপ সংশোধনাগার, দোকানপাট-সহ প্রচুর অফিস-কাছারি। কাজের প্রয়োজনে রোজ বহু মানুষ পুকুরটির পাশ দিয়ে যাতায়াত করেন। অভিযোগ, পুকুরটি সরকারি সম্পত্তি হলেও সংস্কারের অভাবে অনাদরে পড়ে থাকে।
বনগাঁ পুরসভা সূত্রের খবর, শীঘ্রই পুকুরটি সংস্কার করে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। এর জন্য ইতিমধ্যেই টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। সংস্কারের পরে পুকুরটি দেখতে কেমন হবে তার নকশাও প্রকাশ করা হয়েছে। পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, “পুকুরটি সংস্কার করে চার পাশে পাথর বসিয়ে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে ২৯ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।”
পুরসভার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা তথা কংগ্রেস নেতা চুয়াত্তর বছরের কৃষ্ণপদ চন্দ বলেন, “আমি জন্মের পর থেকে ওই পুকুরটি দেখছি। ছোটবেলায় সেখানে স্নান করতাম। জল ছিল স্বচ্ছ কাচের মতো। শহরের মধ্যে বেশ কিছু জলাশয় বোজানো হয়ে গিয়েছিল। সাহেব পুকুরটি যদি সংস্কার করে সৌন্দর্যায়ন করা যায়, তা হলে শহরে ঐতিহ্য বাঁচানো যাবে।”
বনগাঁ মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী, বছর পঁয়ষট্টির সমীর দাস বলেন, “ছোটবেলায় স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে পুকুরের পাড়ে দাঁড়াতাম। জলে মাছ ভেসে উঠত। বনগাঁ মহকুমার প্রাণকেন্দ্র এই পুকুরটি। সংস্কার করা গেলে শহরে ঐতিহ্যের সংরক্ষণ করা যাবে।”
পুকুরে মাছ চাষ হয়। অভিযোগ, কিছু দিন আগে জলে কেউ কীটনাশক ছড়িয়ে মাছ মেরে দিয়েছিল। প্রচুর মাছ মরে ভেসে উঠেছিল। দুর্গন্ধে হাজার হাজার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। শহরের মানুষ মনে করছেন, পুকুরটি সংস্কার হলে নজরদারি বাড়বে। কাজের প্রয়োজনে এসে মানুষ পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিতে পারবেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)