Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দোকান খুলতে শুরু করল কাঁকিনাড়ায়

১৯ মে লোকসভার শেষ দফা ভোটের দিন অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া। টানা তিন দিন গোলমাল চলে। দোকান-বাজার বন্ধের সেই শুরু।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০৪:৫৩
Share: Save:

দু’মাসে এই নিয়ে তিন বার। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে মঙ্গলবার ফের খুলল কাঁকিনাড়া বাজার-সহ এলাকার দোকানগুলি। এলাকার ব্যবসায়ীরা আর গোলমাল চান না এই শহরে। তাঁরা জানাচ্ছেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। ব্যবসাপত্রে প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে। দোকানপাট বন্ধ থাকায় এত দিন সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল বাসিন্দাদেরও। সামান্য নুন-চিনি কিনতেও তাঁদের ছুটতে হচ্ছিল দূরে।

১৯ মে লোকসভার শেষ দফা ভোটের দিন অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া। টানা তিন দিন গোলমাল চলে। দোকান-বাজার বন্ধের সেই শুরু। মাঝে এক দিন শান্ত হতে না হতেই ২৩ মে ভোটের ফল ঘোষণার পরে ফের শুরু হয় উত্তেজনা। তারপর থেকে টানা অশান্তির পরিবেশ ঘণীয়ে আসে এলাকায়। দোকান-বাজার, স্কুল সবই বন্ধ হয়ে যায়। দিনেদুপুরে রাস্তাঘাটে বোমাবাজির ফলে চটকলের শ্রমিকেরাও কাজে যোগ দিতে পারেননি। জুটমিলগুলিতেও প্রভাব পড়তে থাকে।

পুলিশ সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পরে জুনের মাঝামাঝি দোকান-বাজার খোলানোর ব্যবস্থা করে। তখনও বাজারে পুলিশ টহল দিচ্ছিল। কিন্তু ফের গোলমাল বাধে। আক্রান্ত হন পুলিশ কর্মীরা। এরই মধ্যে গুলিতে মৃত্যু হয় দুই ফুচকা বিক্রেতার। জখম হন আরও দু’জন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, স্থানীয় বাসিন্দারাও ঘর থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন।

গত সপ্তাহে ফের দোকান-বাজার খুলেছিল। তারপরেই ফের বোমাবাজি শুরু হয়। এরই মধ্যে পুলিশকে হামলার সময়ে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় এক দুষ্কৃতীর। নতুন করে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়। থানার সামনেও দেদার বোমাবাজি হয়।

টানা দেড় সপ্তাহ পরে শনিবার থেকে তুলনায় শান্ত এলাকা। তবুও দোকান খোলেনি। তবে সোমবার এলাকার স্কুলগুলি খোলে। সোমবার কাঁকিনাড়া বাজার বন্ধ থাকে। ফলে এ দিন আর এলাকার কোনও দোকান খোলেনি। পুলিশ ব্যবসায়ীদের বারবার অনুরোধ করলেও তাঁরা বাজার খোলার সাহস করছিলেন না। পুলিশ ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার পরে তাঁরা দোকান খুলতে রাজি হন।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই এক এক করে দোকান খুলতে শুরু করে। অনেকে অপেক্ষা করেছিলেন বেলা পর্যন্ত। বেলার দিকে বেশিরভাগ দোকান খুলে যায়। কিছু দোকান অবশ্য এ দিনও খোলেনি। আনাজ এবং মুদিখানা দোকান খোলায় স্বস্তি পেয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। তবে সন্ধ্যা গড়াতে অনেকেই দোকান বন্ধ করে দেন। ৮টা নাগাদ বাজার বন্ধ হয়ে যায়।

এলাকার ব্যবসায়ী রাজেশ পাশোয়ান বলেন, ‘‘দু’মাসের বেশি সময় ধরে আমাদের প্রচুর লোকসান হয়েছে। কিন্তু রোজগারের থেকে প্রাণের দাম অনেক বেশি। সেই ভয়েই দোকান খুলতে পারছিলাম না আমরা। আমরা চাইছি, এই শান্তি যেন বহাল থাকে।’’ এলাকায় ছোট পোশাকের দোকান চালান বিকাশ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘না খেয়ে মরছি। এ ভাবে কত দিন চলতে পারে? যা হয় হোক। আমি দোকান খুলে রাখব।’’

পুলিশ জানিয়েছে, গোলমালে করা বা তাতে ইন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে সামান্যতম যোগাযোগ থাকলেও রেয়াত করা হবে না। জানামাত্রই গ্রেফতার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kankinara TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE