Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Anganwadi

শিশুদের যত্নেও টাকার টান

বাসন্তী মোট ৫৭৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এর মধ্যে নিজস্ব ভবন রয়েছে শ’দুয়েক কেন্দ্রের। বাকি কেন্দ্রগুলি কারও বাড়ির বারান্দায়, উঠোনে বা ক্লাব ঘরে চলে।

কোনও-মতে: ভাঙা দাওয়ায় কাজ চলছে অঙ্গনওয়াড়ির। নিজস্ব চিত্র

কোনও-মতে: ভাঙা দাওয়ায় কাজ চলছে অঙ্গনওয়াড়ির। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাসন্তী শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৪১
Share: Save:

নিজস্ব ভবন নেই। বছরের পর বছর ধরে অন্যের বাড়িতেই চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কাজকর্ম। একটি-দু’টি নয়—বাসন্তী ব্লকে এ রকম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা তিনশোর বেশি। নিজস্ব ভবন তৈরি না হওয়ার জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন এলাকার বাসিন্দারা।

বাসন্তী ব্লকে মোট ৫৭৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এর মধ্যে নিজস্ব ভবন রয়েছে শ’দুয়েক কেন্দ্রের। বাকি কেন্দ্রগুলি কারও বাড়ির বারান্দায়, উঠোনে বা ক্লাব ঘরে চলে। কখনও কখনও ফাঁকা মাঠ বা গাছের তলায়ও কাজ চালাতে হয় বলে জানান অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।

বাসন্তীর সোনাখালি গ্রামে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়ির বারান্দায় চলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রের কর্মী রিতা সর্দার বলেন, “দশ বছরের বেশি সময় ধরে এ ভাবেই চলছে। বর্ষায় বারান্দা দিয়ে জল পড়ে। অন্যের বাড়িতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলায় অনেকেই সেখানে আসতে চান না। ছোট জায়গায় মা ও শিশুরা ঠিক মতো বসতেও পারেন না।”

স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজা জমাদার বলেন, “বহু বছর ধরেই অন্যের বাড়িতেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে। সেখানেও খুব বেশি জায়গা নেই। ফলে বাচ্চাদের ঠাসাঠাসি করে বসতে হয়। প্রসূতিরা এলে তাঁদেরও সমস্যা হয়। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন হলে তবেই সমস্যা মিটবে।” নিজস্ব ভবন না থাকায় অনেক সময়ে কেন্দ্রের চাল-ডাল চুরির ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাঁদের দাবি, আলাদা ভবনের জন্য পঞ্চায়েত ও ব্লকে জানানো হয়েছে। তবে সুরাহা হয়নি।

বাসন্তীর বিডিও সৌগতকুমার সাহা বলেন, “এই ব্লকে সাড়ে পাঁচশোর বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। মাত্র দু’শোটির নিজস্ব ভবন রয়েছে। জায়গার অভাবে বাকি ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি এখনও। তবে ইতিমধ্যেই ৫৪টি কেন্দ্রের ভবন তৈরির জন্য জায়গা শনাক্ত করা হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সেগুলি হয়ে যাবে। বাকিগুলির জন্যও জায়গার খোঁজ চলছে।”

এতদিনেও কেন ভবন তৈরির জায়গা মিলল না, সেই প্রশ্ন তুলছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। যে ৫৪টি কেন্দ্রের জায়গা পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি তৈরিতে কেন এত দেরি হচ্ছে, সেই প্রশ্নও উঠছে।

সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরাও। এলাকার বিজেপি নেতা বিকাশ সর্দার বলেন, “মেলা, খেলায় টাকা নষ্ট করছে বর্তমান সরকার। তার উপরে কোটি কোটি টাকা পুজো কমিটিগুলিকে দেওয়া হয়েছে। এ সব না করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির ঘর তৈরি করলে এলাকার দুঃস্থ, অসহায় মানুষগুলোর উপকারে লাগত।”

বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “বহু গ্রামে মানুষ জায়গা দিতে রাজি না হওয়ায় বাকি কেন্দ্রগুলি নির্মাণ করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত যাতে জায়গা পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anganwadi basanti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE