Advertisement
E-Paper

গাছতলায় রান্নাবান্না

এই অবস্থা হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের  দুর্গাপুর বটতলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। সকাল সাড়ে ৯টা  নাগাদ সেখানে গিয়ে দেখা গেল, একটি  গাছের তলায় ত্রিপল খাটিয়ে ঝুপড়ি করে রান্নাবান্না চলছে।

নবেন্দু ঘোষ  

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০১:০৭
বেহাল: এই অবস্থায় চলছে কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

বেহাল: এই অবস্থায় চলছে কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

গাছের তলায় বছরের পর বছর ধরে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ক্রমশ আগ্রহ হারাচ্ছে পড়ুয়ারা। অভিভাবকেরা এসে শুধু খাবার নিয়ে ফিরে যান। পড়াশোনা কার্যত শিকেয় উঠেছে।

এই অবস্থা হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের দুর্গাপুর বটতলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সেখানে গিয়ে দেখা গেল, একটি গাছের তলায় ত্রিপল খাটিয়ে ঝুপড়ি করে রান্নাবান্না চলছে। চারপাশটাই খোলা। রোদের হাত থেকে বাঁচতে ঝুলছে এক টুকরো ত্রিপল।

দু’এক জন পড়ুয়ার দেখা মিলল। অথচ জানা গেল, প্রায় তিরিশ জন বাচ্চা রয়েছে খাতায়-কলমে। শিক্ষিকারও দেখাও পাওয়া গেল না। দেখা গেল, শুধুই কয়েক অভিভাবক ভিড় জমিয়েছেন খিচুড়ি নিতে।

পড়ুয়ারা কোথায়?

খিচুড়ি নিতে এসেছিলেন তাপসী মণ্ডল। বললেন, ‘‘আমার ছেলেকে কয়েক বছর হল এখানে নিয়ে আসছি। কিন্তু প্রথম থেকেই দেখছি, এই দশা। গাছের তলায়, রাস্তার পাশে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে। ফলে বৃষ্টি পড়লে ছেলেমেয়েরা এসে বসতে পারে না। ঠান্ডা-গরমে কষ্ট পায়। গাছতলায় নোংরার মধ্যে বসে থাকতে হয়। এটা ভেবে আর পাঠাই না ছেলেকে।’’ তিনি আরও জানালেন, পাশেই রাস্তা। সর্বক্ষণ গাড়ি চলছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে। বাচ্চাদের পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যায় না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ২০০৭ সাল নাগাদ শুরু হয়েছিল এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। প্রথম থেকেই কোনও ঘর নেই। আগে পাশের একটি বাড়িতে চলত কাজ। কিছু দিনের মধ্যে সেন্টারটি বটগাছের তলায় উঠে আসে।

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খাবার নিতে এসেছিলেন বিষ্টুপদ মণ্ডল নামে এক অভিভাবক। তাঁর কথায়, ‘‘বাচ্চাদের এখানে পাঠাতে পারলে ভালই হত। গৃহশিক্ষকের খরচ বেঁচে যেত। কিন্তু এখানে বাচ্চাদের একটা বসার ঘর পর্যন্ত নেই। রান্না হয় খোলা আকাশের নীচে। বৃষ্টি পড়লে অন্যের বাড়িতে রান্না করতে হয়। এমন পরিবেশে কী করে বাচ্চাদের পাঠাই!’’ পাকা ঘর হলে দুই বাচ্চাকেই পাঠাবেন বলে জানালেন তিনি। বৈশাখী মণ্ডল নামে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এক ছাত্রী বলে, ‘‘বৃষ্টি হলে এখানে আর বসা যায় না। বাড়ি চলে যেতে হয়। বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও বাড়ি যেতে হয়।’’ স্থানীয় বাসিন্দা ভুজঙ্গ হালদার বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রে বাচ্চাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। এ ভাবে পড়াশোনা হয় নাকি!’’

হিঙ্গলগঞ্জ সিডিপিও রফিক আলি বৈদ্য জানান, বাচ্চাদের এ ভাবে গাছের তলায় বসতে হয় কেন, তা তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Hingalganj Anganwadi Centre
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy