রক্তের দাগ দেখাচ্ছেন বাড়ির লোক। —নিজস্ব চিত্র।
চপার দিয়ে একই পরিবারের তিনজনকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার পর বোমা ছুড়তে ছুড়তে পালাল দুষ্কৃতীরা। ফেরার পথে পর পর দু’টি বাড়ি থেকে সোনার গয়না, কয়েক হাজার টাকা লুঠেরও অভিযোগ উঠল ওই দুষ্কৃতী দলের বিরুদ্ধে। শনিবার গভীর রাতে বসিরহাটের সংগ্রামপুরের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, চপারের ঘায়ে জখম ওই পরিবারের তিনজনকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই দুষ্কৃতীদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শুধু ডাকাতি করতেই দুষ্কৃতীরা আসেনি। প্রোমোটারির জন্য জমি দখলই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। তারা পরিবারের প্রধান সদস্যকে খুন করতেই এসেছিল বলেই পুলিশ জানিয়েছে। ওই ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতেই তারা দু’টি বাড়িতে ঢুকে শিশু ও মহিলাদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লুঠপাট চালায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা হলেন জয়ন্ত, মনোজ এবং উত্তম চট্টোপাধ্যায়। সম্পর্কে তাঁরা ভাই। শনিবার রাত ১টা নাগাদ তাঁদের বাড়ির দরজা ভেঙে জনা দশেক দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢোকে। উত্তমবাবু বাধা দিতে গেলে শুরু হয় মারধর। আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে দুষ্কৃতীরা তেড়ে যায় জয়ন্ত ও মনোজবাবুর দিকেও। বাড়ির মহিলারা চিৎকার করলে তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। উত্তমবাবুর মাথায় ও হাতে চপার দিয়ে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় উত্তমবাবু লুটিয়ে পড়লে তিনি মারা গিয়েছেন ভেবে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। যদিও ওই বাড়ি থেকে কোনও জিনিস তারা নেয়নি। চিৎকার শুনে এক প্রতিবেশী রামপ্রসাদ সরকার বেরিয়ে এলে তাঁকেও দুষ্কৃতীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁর বাড়িতে ঢুকে লুঠপাট চালায় তারা। কিছু দূরে আর এক প্রতিবেশী উৎপল রায়ের বাড়িতেও তারা লুঠপাট চালায় বলে অভিযোগ। উৎপলবাবু জানান, মুখে গামছা বাঁধা ছিল দুষ্কৃতীদের। প্রতিবেশীরা জানান, চিৎকার শুনে পাড়ার অনেকেই বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু দুষ্কৃতীরা বন্দুক উঁচিয়ে সকলকে বাড়ি ঢুকে যেতে বলে। প্রশ্ন উঠেছে, এলাকায় তথাকথিত কয়েকটি ধনী পরিবারের বাড়িতে ডাকাতি না করে দুষ্কৃতীরা তুলনায় নিম্নবিত্ত পরিবার উত্তমবাবুদের বাড়িতে হামলা করল কেন? পুলিশ জানিয়েছে, উত্তমবাবুদের কিছু জমি জায়গা আছে। তাকে কেন্দ্র করেই ওই হামলা চালানো হয়।
উত্তমবাবু বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারের এক ফালি জমির দখল নেওয়ার জন্য প্রোমোটারেরা অনেকদিন ধরেই হুমকি দিচ্ছে। এ নিয়ে আগেও গণ্ডগোল হয়েছে। এ দিন প্রোমোটার আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এসেছিল আমাদের তিন ভাইকে মারতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy