সিসি ক্যামেরার ডি ভি আর-এর বদলে ওয়াই-ফাই মোডেম নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। যার ফলে দোকানের ভিতরে থাকা ডি ভি আর বাজেয়াপ্ত করে মালিককে খুন ও গয়না লুটের ঘটনার সমস্ত ছবি সহজেই পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সিসি ক্যামেরার সেই ফুটেজের সূত্র ধরেই দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করে বরাহনগরের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে ব্যারাকপুরসিটি পুলিশ। এখনও দু’জনের খোঁজ চলছে।
ঝাড়খণ্ড থেকে চন্দন মণ্ডল ও প্রিন্স কুমার নামে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে বুধবার ব্যারাকপুরে নিয়ে এসেছে পুলিশ। এ দিন দু’জনকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘ধৃত দুষ্কৃতীদের জেরা করে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা হচ্ছে। ওদের সঙ্গে বিহারের এক জনও ছিল। তার খোঁজ চলছে। ওই তিন দুষ্কৃতীকে যে ব্যক্তি নিয়ে এসেছিল, তাকেও খোঁজা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, বরাহনগরের সোনার দোকানের মালিক শঙ্কর জানার হাত-পা বাঁধা ও তাঁকে মারধর করার জন্য চন্দন, প্রিন্স ও বিহারের এক দুষ্কৃতীকে আনা হয়েছিল। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি, কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাকেশ দাসের কাছে সাহায্য চেয়েছিল মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় মাইতি। রাকেশ এক ব্যক্তিকে ঠিক করে দিয়েছিল। সে-ই ভিন্ রাজ্যের ওই তিন জনকে বরাহনগরে আনে। জানা যাচ্ছে, ওই কাজের জন্য চন্দন ও প্রিন্স ৫০ হাজার টাকা করে পেয়েছিল। ঝাড়খণ্ড ফিরে গিয়ে চন্দন ওই টাকা দিয়ে মোবাইল কেনে। মোবাইলটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। আর প্রিন্স ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছে। বাকি টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, বিহারের দুষ্কৃতী কোনও টাকা নেয়নি। তবে, লুটের সময়ে সে পকেটে সোনার গয়না ভরে নেয়। আর, ওই তিন জনকে যে ব্যক্তি নিয়ে আসে, তাকে কী দেওয়া হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত শনিবার ঘটনার পরে শম্ভুনাথ দাস লেনের ওই দোকানে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখেন, সিসি ক্যামেরার ডি ভি আর-টি রয়েছে। সাধারণত দুষ্কৃতীরা প্রমাণ লোপাটের জন্য ওই যন্ত্র নিয়ে চম্পট দেয়। কিন্তু ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, ওয়াই-ফাই মোডেমটি ডি ভি আর ভেবে তারা নিয়ে গিয়েছিল। তাই ঘটনার জট খুলতে বেশি বেগ পেতে হয়নি পুলিশকে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)