প্রতিবেশী মহিলাকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন আগেই। শুক্রবার সেই ভাইবোনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বনগাঁ মহকুমা আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে তাঁদের।
পুলিশ এবং আদালত সূত্রে খবর, আসামিদের নাম বাকিবুল্লা মণ্ডল এবং তারা বানু। বাকিবুল্লার সঙ্গে রহিমা মণ্ডল নামে এক প্রতিবেশিনীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাঁরা উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের বাসিন্দা। যুবক-যুবতীর সম্পর্ক কারও বাড়িতেই মানেনি। দু’জনেরই অন্যত্র বিয়ে দেন অভিভাবকেরা। কিন্তু কয়েক বছর গড়াতেই নতুন করে সম্পর্ক তৈরি হয় বাকিবুল্লা ও রহিমার। বছর দুই আগে সংসার ছেড়ে প্রেমিকাকে নিয়ে মুম্বই চলে যান বাকিবুল্লা। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর গোপালনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে বেশ কিছু দিন পরে বাকিবুল্লা এবং তাঁর দিদি তারাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতেরা জানান, রহিমাকে মুম্বই থেকে এনে বাদুড়িয়ায় দিদির বাড়িতে রেখেছিলেন বাকিবুল্লা। সেখানেই ভাই-বোন মিলে রহিমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। খুনের পর দু’দিন ধরে তাঁরা রান্নাঘরে গর্ত খোঁড়েন। সেখানেই পুঁতে দেন রহিমাকে। খুনের কারণ খুঁজতে গিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, রহিমা বাদুড়িয়ায় প্রেমিকের দিদির বাড়িতে থাকাকালীন স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাতেই বাকিবুল্লার দিদির সাহায্য নিয়ে প্রেমিকাকে মেরে ফেলেন। জেরায় দু’জনেই দোষ স্বীকার করে নিয়েছিলেন। দীর্ঘ দিন ধরে বিচারপ্রক্রিয়া চলার পর ২৮ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে গত দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে বনগাঁ মহকুমা আদালত। শুক্রবার দুই ভাই-বোনকে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা শোনান বিচারক।
আরও পড়ুন:
আদালতের এই রায়ে খুশি মৃতার পরিবার। রহিমার মা কবেরা মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার কোল খালি করেছিল ওরা। আজ ওদের মায়েরও কোল খালি হল। ন্যায়বিচার মিলেছে। এ জন্য পুলিশ-প্রশাসন এবং আদালতকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’