Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Child Trafficking

লোভ দেখিয়ে বিক্রির চেষ্টা, বিহার থেকে উদ্ধার ভাইবোন

সম্প্রতি বাগুইআটির দুই কিশোরকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার পরে রাজ্য জুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ। তারপর থেকে এ ধরনের ঘটনায় বাড়তি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে পুলিশের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:০৭
Share: Save:

পুলিশি তৎপরতায় বিহার থেকে উদ্ধার করা হল দুই ভাইবোনকে। উত্তর ২৪ পরগনার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া বালিকার বয়স ১৩ বছর। তার ভাইয়ের বয়স বছর দশেক। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মেয়েটিকে নাচের দলে নামানোর চেষ্টা করেছিল পাচারকারীরা। ছেলেটিকে বিক্রির পরিকল্পনা ছিল নেপালে।

সম্প্রতি বাগুইআটির দুই কিশোরকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার পরে রাজ্য জুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ। তারপর থেকে এ ধরনের ঘটনায় বাড়তি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে পুলিশের। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বহু পুরনো নিখোঁজ ডায়েরি নতুন করে তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

উত্তর ২৪ পরগনার ঘটনাটিতে ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে দুই ভাইবোনের খোঁজ মিলছিল না। তাদের মা রাতে পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে।

বিশেষ দল তৈরি হয়। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে সন্দেহজনক এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে আদালতে হাজির করে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

মহিলাকে জেরা করে কিছু সূত্র মেলে। এ দিকে, এলাকায় থাকা একটি দোকানের সিসি ক্যামেরার ছবি খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই দোকানের মালিকের কাছে বিহার থেকে অনলাইনে এক তরুণী ৫০০ টাকা পাঠিয়েছে। ওই তরুণীর বাড়ির কাছেই থাকে দুই ভাইবোন। পুলিশ জানতে পারে ভাইবোনকে টোপ দিতে ওই টাকা পাঠানো হয়েছিল। যে নম্বর থেকে অনলাইনে টাকা পাঠানো হয়েছিল, সেই নম্বরের সূত্র ধরে ১৭ সেপ্টেম্বর গাইঘাটা থানার পুলিশের একটি দল বিহারে যায়। বিহার পুলিশের সহযোগিতায় পুলিশ একটি বাড়ি থেকে দু’জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। জায়গাটি নেপাল সীমান্তের কাছে। বুধবার সকালে ভাইবোনকে ফিরিয়ে আনা হয়। আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা তাদের।

কী ভাবে দুই বালক-বালিকা বিহারে পৌঁছল?

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অনলাইনে টাকা পাঠিয়েছিল যে তরুণী, সে বিহারে একটি নাচের দলে কাজ করে। সে-ই টাকা ও লোক পাঠিয়ে দুই ভাইবোনকে বিহারে নিয়ে গিয়েছিল। অশ্লীল নাচের দলে মেয়েটিকে বিক্রি করার ছক কষা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ছেলেটিকে নেপালে পাচার করে দেওয়ার চক্রান্ত করা হয়েছিল। পুলিশের নজর এড়াতে একাধিকবার ট্রেন বদল করে তাদের বিহার নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ আরও জানায়, বাচ্চা দু’টি তাদের সৎ মা এবং বাবার কাছে থাকে। বাড়িতে অশান্তি ছিল। ওই তরুণী বিষয়টি জানত। ছেলেমেয়ে দু’টিকে সে কারণেই টাকার লোভ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুলিশ চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।

ছেলেমেয়েকে খুঁজে পেয়ে খুশি বাবা-মা। তাঁরা জানান, কাজের জন্য বাইরে ছিলেন। বাড়ি ফিরে দেখেন, ছেলেমেয়ে উধাও। বাবার কথায়, ‘‘চারদিকে যা কাণ্ড ঘটছে, তাতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশ খুব দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। এ বার থেকে ছেলেমেয়েদের সাবধানে রাখব।’’

স্থানীয় পুলিশ সুপার জয়িতা বসু বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে সংশ্লিষ্ট থানা ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চেষ্টা শুরু করা হয়, ভাইবোনকে ফিরিয়ে আনার জন্য। কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য ও দলগত প্রচেষ্টায় এই সাফল্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Trafficking Gaighata Bihar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE